জাবালে নূরের মালিকসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল
সড়ক দুর্ঘটনায় শহীদ রমিজ উদ্দীন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনার মামলায় জাবালে নূর বাসের মালিক শাহাদাত হোসেনসহ ছয়জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
অভিযোগে ছয় আসামিরা হলেন- জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের মালিক শাহাদাত হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম, দুই বাসচালক মাসুম বিল্লাহ ও জুবায়ের সুমন এবং দুই চালকের দুই সহকারী এনায়েত হোসেন ও কাজী আসাদ।
এদের মধ্যে শাহাদাত হোসেনের মালিকানাধীন বাসটির চাপায় দুই শিক্ষার্থী মারা যায়। তবে, কাজী আসাদ ও জাহাঙ্গীর আলম এখনো পলাতক।
ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম আজ দুপুরে অভিযোগপত্রটি জমা দেন। আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগপত্রটি আদালতের কাছে আজ উপস্থাপন করা হবে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, চালক ও চালকের সহকারীরা বেশি যাত্রী ওঠানোর লোভে যাত্রীদের কথা না শুনে, তাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা না করে জিল্লুর রহমান উড়াল সড়কের ঢালের সামনে রাস্তা ব্লক করে দাঁড়ায়। এ সময় চালক মাসুম বিল্লাহ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সেখানে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ১৪-১৫ জন ছাত্রছাত্রীদের ওপর বাস উঠিয়ে দেয়। ঘটনাস্থলে দু’জন শিক্ষার্থী মারা যান। অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, সেদিন বাস দুটির চালক ও চালকের সহকারীরা দুই থেকে তিনবার ওভারট্রেকিং করে।
গত ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর হোটেল র্যাডিসনের বিপরীত পাশের জিল্লুর রহমান উড়ালসড়কের ঢালের সামনের রাস্তার ওপর জাবালে নূর পরিবহনের তিনটি বাস রেষারেষি করতে গিয়ে একটি বাস রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনের ওপর উঠে পড়ে। এতে দুই শিক্ষার্থী নিহত ও নয়জন আহত হয়। নিহত দুই শিক্ষার্থী হলো দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব (১৭) ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম (১৬)।
এ ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী দিয়া খানমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন।
এই ঘটনায় মিরপুর ও বরগুনা জেলায় অভিযান চালিয়ে জাবালে নূরের তিন বাসের তিন চালক এবং তাদের দুই সহযোগী এনায়েত ও রিপনকে গ্রেফতার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১)। এরপর গত ১ আগস্ট সন্ধ্যায় র্যাবের পক্ষ থেকে জাবালে নূরের বাসের মালিক শাহাদাত হোসেনকে (৬০) গ্রেফতারের খবর জানানো হয়।
গ্রেফতার হওয়া ছয়জনকে পরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত করছে ডিবি।
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, জাবালে নূরের যে তিনটি বাসের রেষারেষিতে এ ঘটনাটি ঘটে, সেগুলোর নিবন্ধন নম্বর হলো ঢাকা মেট্রো ব-১১-৯২৯৭, ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৬৫৭ এবং ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৫৮০।
এর মধ্যে ঢাকা মেট্রো ব-১১-৯২৯৭ নম্বর বাসের চাপায় মারা যায় দুই শিক্ষার্থী। এই বাসটি চালাচ্ছিলেন মাসুম বিল্লাহ।
ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৬৫৭ নম্বর বাসের চালক ছিলেন জুবায়ের এবং ঢাকা মেট্রো ব-১১-৭৫৮০ নম্বরধারী বাসটির চালক ছিলেন সোহাগ।
এফএইচ/এমআরএম/পিআর