ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

পুলিশ কেন তিন বছরে পরোয়ানা তামিল করলো না?

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:২১ পিএম, ৩১ মে ২০১৮

ঢাকার দুই মানহানির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে করা আবেদন নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আদালতে খালেদা জিয়ার আবেদন নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এ সংক্রান্ত আবেদন শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এ জে মোহাম্মদ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফরহাদ আহমেদ ও এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

এর আগের দিন বুধবার আসামিপক্ষের শুনানি শেষ হয়। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপক্ষে অ্যার্টনি জেনারেল তার শুনানি করেন।

রাজাকার-আল বদর বাহিনীর নেতাকর্মীদের মন্ত্রী-এমপি বানিয়ে জাতীয় পতাকার অবমাননা এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের অভিযোগে ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে করা পৃথক দুই মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের ওপর আজ রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানি করেন। এরপর আদালত মামলা নিষ্পত্তি করে দেন।

শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কোনো আদেশে সংক্ষুব্ধ হলে দায়রা জজ আদালতে না যেয়ে হাইকোর্টে আসা যায় না। তাদের কোনো বক্তব্য থাকলে সেখানেই বলতে হবে।’

এ সময় আদালত প্রশ্ন করেন, ‘কারাবন্দি কোনো আসামি যদি জানতে পারেন তার বিরুদ্ধে আরও মামলা আছে তাহলে তিনি ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করতে পারেন কিনা?’ জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আইনে এমন কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে রাষ্ট্রপক্ষ।’

আদালত পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘পারবে না কেন? আইনে বাধা কোথায়? আসামির জামিন আবদেন খারিজ করুক। কিন্তু কেন গ্রেফতার না দেখিয়ে জামিন আবেদন নথিভুক্ত করবে? এটা কী ধরনের আদেশ?’

জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘আইনে কিছু বলা নেই। এই প্রথা আমাদের দেশে চালু নেই।’ তিনি বলেন, ‘আসামিকে আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করতে হবে। এছাড়া জামিন আবেদন করার সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘এই মামলায় খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার দেখানো হয়নি। তাই তার জামিনের প্রয়োজন নেই। এ সময় আদালত বলেন, ‘তিনি তো (খালেদাজিয়া) কারাগারে। হাজির হবেন কীভাবে? তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে তিন বছর আগে। পুলিশ কেন এই তিন বছরে গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল করলো না?’

‘অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে এর জবাব কী দেবেন, কেন পুলিশ গ্রেফতার করবে না? এরপর আসামি কারাগারে গেলে কেন জামিন আবেদন করতেপারবে না? আইনে বাধা কোথায়’- প্রশ্ন রাখেন আদালত।

জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশ সঠিক না হলে তারা তো দায়রা জজ আদালতে যেতে পারতেন।’ এরপর আদালত তার কাছে জানতে চান, ‘নালিশি মামলায় অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানি করতে পারেন কিনা?’

জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘জাতির ইতিহাস বিকৃত করবে, জাতির পিতার বিরুদ্ধে উল্টাপাল্টা বললে সেখানে জাতীয় স্বার্থেই অ্যাটর্নি জেনারেলের যাবার সুযোগ রয়েছে।’

এ সময় আদালত বলেন, ‘এটা তো রাষ্ট্রীয় ব্যাপার। এটা দেখবে রাষ্ট্র। রাষ্ট্রকেই মামলা করতে হবে। রাষ্ট্র না করলে কোনো ব্যক্তি কি মামলা করতেপারে?’ জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘রাষ্ট্র যদি মামলা না করে তা হলে একজন নাগরিক হিসেবে যে কারো মামলা করার অধিকার রয়েছে।’ এরপর আদালত খালেদা জিয়ার করা আবেদন দুটি নিষ্পত্তি করে আদেশ দেন।

স্বীকৃত স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র ও জাতীয় পতাকার মানহানি ঘটানোর অভিযোগে ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর এ বি সিদ্দিকী ঢাকার সিএমএম আদালতে একটি মামলা করেন।

এছাড়া ১৫ আগস্ট ভুয়া জন্মদিন পালনের অভিযোগে ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট একই আদালতে একটি মামলা করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম।

দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার দেখানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ১৭ মে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দেন বিচারিক আদালত।

গত ২২ মে ওই দুই মামলায় জামিন আবেদন করেন খালেদা জিয়া।

এফএইচ/এমএআর/পিআর

আরও পড়ুন