মলম লাগিয়ে ধর্ষণ : বিএসএমএমইউ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে চার্জশিট
ভোলার এক কলেজছাত্রীকে মলম লাগিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসক ডা. মোহাম্মদ রিয়াদ সিদ্দিকীর (প্রাণ) বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। ডা. প্রাণ বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত থাকায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানের বরাবার প্রতিবেদনও পাঠিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
মঙ্গলবার (২৯ মে) ঢাকার ৫ নং নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম সামছুন্নাহার চার্জশিট গ্রহণের জন্য আগামী ১৩ জুন দিন ধার্য করেন। ডা. প্রাণ পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আবেদনও করেছেন তদন্তকারী কর্তমর্তা।
চার্জশিটে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন- সার্বিক তদন্তে, সাক্ষ্য প্রমাণে, এমসি পর্যালোচনায়, ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় এবং পরিবেশ বিবেচনায় আসামি ডা. রিয়াদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। সাক্ষীরা ঘটনা প্রমাণ করবেন। চার্জশিটে সাক্ষী করা হয়েছে ১৬ জনকে।
তবে মেডিকেল রিপোর্টে ভিকটিমের শরীরে আসামির চিহ্ন পাওয়া গেলেও জোরপূর্বক ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি বলে তদন্তকারী কর্মকর্তা চার্জশিটে উল্লেখ করেছেন।
এর আগে ঢাকা মহানগর হাকিম ফাহাদ বিন আমিন চৌধুরীর আদালতে ২৩ মে এ চার্জশিটি দাখিল করেন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের পরিদর্শক রোজিনা বেগম।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ঘটনার শিকার তরুণীর বাড়ি ভোলায়। সেখানে ডা. রিয়াদ সিদ্দিকীর ব্যক্তিগত চেম্বার রয়েছে। গত বছরের ৬ অক্টোবর ভোলার এক কলেজের দ্বাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ওই ছাত্রী ডা. রিয়াদ সিদ্দিকীর কাছে চিকিৎসা নিতে গেলে ডাক্তার তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মলম লাগিয়ে দেন। এ সময় ছাত্রী আপত্তি জানালে ডাক্তার তার সঙ্গে রূঢ় আচরণ করেন। একই সঙ্গে এ বিষয়ে কাউকে কিছু না জানানোর নির্দেশ দেন। মেয়েটি লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখে। ২৯ ডিসেম্বর কলেজছাত্রী ভোলায় তার প্রাইভেট চেম্বারে চিকিৎসা নিতে গেলে ওই ডাক্তার ফের একই কাজ করেন এবং একপর্যায়ে তাকে ধর্ষণ করেন। সেই দৃশ্য ভিডিও করে রাখা হয়েছে বলা জানান। ঘটনা কাউকে জানালে ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়া হবে বলে মেয়েটিকে হুমকি দেন ডা. রিয়াদ। এতে মেয়েটি আরও আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
৩০ ডিসেম্বর ডাক্তার মামলার বাদী ও কলেজছাত্রীর বাবাকে ফোন করে বলেন, আপনার মেয়ের মরণব্যাধি হয়েছে। তাকে পিজি হাসপাতালে বড় ডাক্তার দেখাতে হবে। তাই জরুরি ভিত্তিতে ঢাকায় আসতে হবে।
চিকিৎসকের কথা মতো পরের দিন তরুণীসহ তার বাবা ঢাকায় আসেন। তরুণীর বাবাকে বসিয়ে রেখে ডাক্তার তাকে নিয়ে বিএসএমএমইউ হাসপাতালের বি ব্লগের চতুর্থ তলায় একটি নিবিড় রুমে নিয়ে আবার জোর করে ধর্ষণ করেন।
এ ঘটনায় তরুণীর বাবা ৮ জানুয়ারি রাজধানীর শাহবাগ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধনী-২০০৩) এর ৯ (১) ধারায় মামলা করেন।
জেএ/এসএইচএস/আরআইপি