ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

চার কারণে গাজীপুর সিটি নির্বাচন স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:৪৭ পিএম, ০৬ মে ২০১৮

সীমানা-সংক্রান্ত জটিলতাসহ চার কারণে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।

প্রথমে ৬ মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন রিটকারীর আইনজীবী। পরে সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ অফিসারের সঙ্গে কথা বলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, সিটি নির্বাচন ৬ মাসের জন্য নয়, ৩ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১৫ মে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ভোট হওয়ার কথা ছিল। এ নির্বাচনকে ঘিরে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন প্রার্থীরা।

এ বিষয়ে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমও তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়াই একই কথা বলেন। তিনি বলেন, এক জেলার ছয়টি মৌজাকে অন্য জেলায় অন্তর্ভুক্ত করাসহ কয়েকটি কারণে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন আদালত।

নির্বাচন স্থগিত করার জন্য আইনি যৌক্তিকতাও রয়েছে বলে জানান রাষ্ট্রের প্রধান এই আইন কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, ঢাকা জেলা ও সিটি কর্পোরেশনের ছয়টি মৌজাকে গাজীপুর জেলা ও সিটি কর্পোরেশনে স্থানান্তর, দ্বিতীয়ত- এক জেলা থেকে অন্য জেলায় স্থানান্তরে ক্ষেত্রে প্রশাসনিক নিয়ম অনুসরণ করা হয়নি। তৃতীয়ত- ওই ছয়টি মৌজা গাজীপুর সিটির অন্তর্ভুক্ত হলেও তারা শিমুলিয়া ইউনিয়নেরই ভোটার তাই, তারা এখন দ্বৈত নাগরিক। চতুর্থত- দ্বৈত নাগরিকত্বের ফলে ওই ছয় মৌজার বাসিন্দাদের উভয় অঞ্চলেই কর পরিশোধ করতে হবে, যা সংবিধান পরিপন্থী।

এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে, সাভারের শিমুলিয়া ইউনিয়নের ছয়টি মৌজাকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনে অন্তর্ভুক্ত করে জারি করা প্রজ্ঞাপন কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছেন আদালত।

আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে স্থানীয় সরকার সচিব, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার, স্থানীয় সরকার বিভাগের (সিটি কর্পোরেশন-২) উপসচিব, ঢাকা ও গাজীপুর জেলা প্রশাসক, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব (চলতি দায়িত্ব) ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারকে উক্ত রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী বি এম ইলিয়াস কচি। তার সঙ্গে ছিলেন, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মো. রেজাউর রহমান রেজা। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে তৌহিদুল ইসলাম অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।

আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান রেজা জানান, ২০১২ সালের ২৪ জানুয়ারি গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে গাজীপুর ও টঙ্গী পৌর এলাকাসহ সম্প্রসারিত পৌর এলাকা অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

পরে ২০১৩ সালের ১৬ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার বিভাগ একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। যেই প্রজ্ঞাপনে ঢাকা জেলাধীন সাভার উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের ডোমনা, দক্ষিণ বাড়ৈবাড়ী, পশ্চিম পানিশাইল, দক্ষিণ পানিশাইল, শিবরামপুর ও ডোমনাগ মৌজাকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত করা হয়।

এই ছয়টি মৌজাকে গাজীপুর সিটির অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আপত্তি জানান শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ বি এম আজহারুল ইসলাম সুরুজ। কিন্তু স্থানীয় সরকার বিভাগ সেই আপত্তি আমলে না নেয়ায় ২০১৫ সালে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেছিলেন আজহারুল ইসলাম সুরুজ। আদালত তার আপত্তি নিষ্পত্তি করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করতে বলেন। ২০১৬ সালে পুরাতন সীমানা অনুযায়ী শিমুলিয়া ইউপি নির্বাচন হলে আজহারুল ইসলাম সুরুজ পুনরায় নির্বাচিত হন।

এদিকে চলতি বছর ৪ মার্চ নির্বাচন কমিশন আরেকটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। যেই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ওই ছয়টি মৌজাকে ফের গাজীপুর সিটির অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সেই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আগামী ১৫ মে ভোটের দিন ধার্য করে গত ৩ এপ্রিল গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা করে ইসি।

নতুন করে জারি করা প্রজ্ঞাপন ও নির্বাচনের তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আজ হাইকোর্টে আরেকটি রিট আবেদন দায়ের করেন ওই চেয়ারম্যান। সেই রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে আদালত নির্বাচন স্থগিত পূর্বক রুল জারি করেন।

এফএইচ/জেএইচ/জেআইএম

আরও পড়ুন