ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

মুচলেকা দিয়ে এক বছর সময় পেল বিজিএমইএ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:৩৬ এএম, ০২ এপ্রিল ২০১৮

বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সংগঠন (বিজিএমইএ) দাখিল করা ‘বহুতল ভবন ভাঙতে এরপর আর সময় চাইবে না’এমন মুচলেকার পর তাদের এক বছর সময় দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে কতৃপক্ষকে আবারও এক বছরের বেশি সময় দেওয়া হলো। আর সময় চাওয়া হবে না–এমন অঙ্গীকার করলে আপিল বিভাগ সময় বেঁধে দেয়। এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো সময় পেল বিজিএমইএ।
যদিও ভবন ভাঙতে দ্বিতীয় দফায় সাত মাস বেঁধে দেওয়ার সময় ২০১৭ সালের ৮ অক্টোবর আদালত বলেছিল, এটাই শেষ সুযোগ। এরপর আর সময় চাইবে না। এর মধ্যে যা করার করবে। সেই ‘শেষ সুযোগ’ শেষ হওয়ার পর আবারও সুযোগ পেল বিজিএমইএ। ১৬ তলা ওই ভবনটি ভাঙার জন্য ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল পর্যন্ত সময় পাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

সর্বশেষ সোমবার (২ এপ্রিল) প্রধান বিচারপতির সৈয়দ মাহমুদের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর আগে গত ২৮ মার্চ দাখিল করা মুচলেকায় হাইকোর্টের রায়ের সঙ্গে কিছু বিষয়ে অস্পষ্টতা থাকায় তা সংশোধন (মোডিফাই) করে সোমবারের মধ্যে দিতে বলেছিলেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।

সে অনুযায়ী, সোমবার (২ এপ্রিল) সংশোধিত মুচলেকা আদালতে উপস্থাপন করেন বিজিএমইএ’র পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন অ্যামিকাস কিউরি অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।

মুচলেকা দেখার পর আদালত বিজিএমইএ র আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। এ সময় আদালত বিজিএমইএ’র আইনজীবীকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, যতদিন চেয়েছেন ততদিন দিয়েছি। বেশিও দিয়েছি। ১২ মাস ১০দিন। মনে রাখবেন।

আদেশের পর ইমতিয়াজ মইনুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৩ সালে বিজিএমইএ কে কিছু নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল ভবন ভাঙার জন্য। ওই আদেশটি বাস্তবায়ন করার জন্য এক বছর সময় চেয়েছিলাম। আদালত ১২ এপ্রিল ২০১৯ পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। এই আবেদনটি গ্রহণ করার জন্য আদালত অঙ্গীকারনামা দিতে বলেছিল। আজকে (সোমবার) আমরা সংশোধন করে অঙ্গীকারানামা দিয়েছি। আদালত সন্তুষ্ট হয়ে আমাদের এক বছর সময় দিয়েছেন। অর্থাৎ ২০১৩ সালের আদেশটি বাস্তবায়ন করার জন্য আমরা ১২ এপ্রিল ২০১৯ পর্যন্ত সময় পেয়েছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে ইমতিয়াজ বলেন, অঙ্গীকারনামায় আমরা বলেছি, এরপর আর সময় চাইব না। দ্বিতীয়ত বলেছি, আদেশ যেটা দেওয়া হয়েছে সেটা অবশ্যই মানব। তৃতীয়ত বলেছি, এই আন্ডারটেকিং (অঙ্গীরকারনামা) টি আগে বিজিএমইএ’র পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছিল। আদালত এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর সংশোধনটি বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে।

এ মামলায় হাইকোর্টের অ্যামিকাস কিউরি আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, আজ (সোমবার) বিজিএমইএ যে আন্ডারটেকিং দেওয়ার কথা ছিল, সে আন্ডারটেকিং তারা দিয়েছে। সেই আন্ডারটেকিংয়ে বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আর তারা সময় চাইবে না। আর আদালতের যে আদেশ আছে, আপিল বিভাগের সেই আদেশটি তারা বাস্তবায়ন করবে। শেল অ্যাবাইড (মানতে বাধ্য) বলেছে। যদি এর কোনো ব্যত্যয় হয় বিজিএমইএ উইল বি লায়বল (দায়ী হবে)। আর্থাৎ তারা লায়বেলিটি (বাধ্যবাধকতা) নিয়েছে আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য।

তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, রায়ের আগে আমার বেশ কিছু সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা হয়েছে; তাদের প্রত্যাশা ছিল বিজিএমইএ’র ভবনের বিষয়ে যেন আর সময় দেয়া না হয়। কারণ দুই দুইবার সময় এর আগে দেয়া হয়েছে। বিজিএমইএ’র এই সময় চাওয়ার মধ্য দিয়ে আমি মনে করি দেশে এবং আন্তর্জাতিকভাবে তারা তাদের ভাবমূর্তির সঙ্কট তৈরি করেছে।

কারণ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ২০১৬ সালের পর এ নিয়ে তৃতীয়বারের মত সময় চেয়েছেন এবং সেটাও চেয়েছেন আন্ডারটেকিংয়ের মাধ্যমে। এখন আপিল বিভাগের রায় আমাদের সবার মানতে হবে। এ ব্যাপারে ক্ষোভ বা অসন্তোষ প্রকাশ করার কোনো সুযোগ নেই। তবে সবার প্রত্যাশা ছিল আপিল বিভাগের রায়টি দ্রুত বাস্তবায়ন হবে। এখন সময় দেয়া হয়েছে। তারা ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল পর্যন্ত এখানে থাকবে। তারপর এটা তাদের ভাঙতে হবে। বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, এটা তারা নিজেরাই ভাঙবে।

এক প্রশ্নের জবাবে মনজিল বলেন, এটা আমাদের সবার মনেই খটকা লাগে। শুধু রঙ্গস ভবন না, আদালতের রায় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ল’ইয়ার সার্টিফিকেট নিয়ে অনেক ভবনই ভাঙা হয়েছে। এটা ব্যবসায়ীদের সংগঠন। আমরা এটা বলতে পারি যে, রাষ্ট্র পরিচালনায় নিশ্চয় তাদের একটা বড় প্রভাব আছে। কারণ আমরা দেখেছি, আগে যখন রায় হয় তখন দেখা গেছে যে, বিজিএমইএ সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে। আমরা তো আর এটা বলতে পারব না কেন সময় দেওয়া হয়েছে? এটা আদালতের এখতিয়ার। এই সময় আমাদের মেনেই নিতে হবে।

এফএইচ/আরএস/এসআর/জেআইএম

আরও পড়ুন