‘খালেদা দুই মাস ২৫ দিনের মধ্যে জামিন পাবেন, এটা ঠিক হবে না’
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ড নিয়ে কারাগারে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রাখা ঠিক হবে না বলে মত দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে খালেদার জামিন স্থগিত রাখার বিষয়ে পেশ করা যুক্তিতে তিনি এই কথা বলেন। হাইকোর্টের দেয়া জামিনের বিরোধিতা করে রোববার সকালে দুদকের আইনজীবীর পরে রাষ্ট্রপক্ষও খালেদার জামিন না দেয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন। সর্বশেষ খালেদা জিয়ার আইনজীবীর শুনানি করে মামলার কার্যক্রম সোমবার পর্যন্ত মুলতবি করেন আদালত। সোমবার জামিনের ওপর আদেশ দেয়া হবে বলে ঠিক করেন আপিল বিভাগ।
রোববার দুপুরে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বিচারপতির বেঞ্চ উভয়পক্ষের শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। অপরদিকে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এজে মোহাম্মদ আলী।
রোববার মামলাটি শুনানি শুরু হলে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, মামলায় সব আসামির ১০ বছর করে সাজা হলেও শুধু খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সাজা দেয়া হয়েছে। এখানে বিচারিক আদালতেরর রায়ে খালেদা জিয়ার বয়স ও সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় আনা হয়েছে। জামিনের ক্ষেত্রেও আসামির প্রতি কনসিডারেশন করা যাবে না।
জামিন বাতিলে তিনি বিভিন্ন নজির উপস্থাপন করেন। শুনানির শুরুতেই খুরশীদ আলম খান বলেন, গত ১২ মার্চ চারটি যুক্তিতে খালেদা জিয়াকে হাইকোর্ট জামিন দিয়েছেন।
হাইকোর্ট যে চারটি যুক্তিতে জামিন দিয়েছেন এর প্রথমটি হলো- হাইকোর্ট বলেছেন খালেদা জিয়া জামিনের অপব্যবহার করেননি।
এ প্রসঙ্গে দুদক আইনজীবী আদালতে বলেন, তিনি বিচারিক আদালতের অনুমতি না নিয়েই বিদেশে গেছেন। কাজেই হাইকোর্টের এই যুক্তি সঠিক নয়।
মেডিকেল গ্রাউন্ডস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানে চিকিৎসকদের কোনো কাগজপত্র দেননি। বিচারিক আদালত দণ্ডবিধির ৪০৯, ১০৯ ধারায় তাকে পাঁচ বছরের সাজা দিয়েছেন। ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ এর (২) ধারায় দুর্নীতির অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পরও আদালত তাকে সাজা দেননি।
দুদকের আইনজীবী তার শুনানিতে বলেন, পেপারবুক প্রস্তুত হলে শুনানি হোক। পেপারবুক প্রস্তুত হওয়া পর্যন্ত তিনি জেলে থাকুক। আপিল নিষ্পত্তি হলে তিনি আবার জামিন আবেদন চাইতে পারবেন।
তখন আদালত বলেন, এই উপমহাদেশে জয়ললিতা, লালুপ্রসাদ যাদব কতদিন কারাগারে ছিলেন? জবাবে খুরশীদ আলম খান বলেন, জয়ললিতার দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। সুপ্রিম কোর্টেও এ রায় বহাল ছিল। তার সহযোগী শশীকলা এবং অন্য আরেকটি মামলায় লালু প্রসাদ যাদব এখনও কারাগারে আছেন। কাজেই খালেদা জিয়া দুই মাস ২৫ দিনের মধ্যে জামিন পাবেন এটা ঠিক হবে না।
এফএইচ/জেডএ/পিআর