ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

‘আমরা ব্যথিত, দেশবাসী মর্মাহত’

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১০:২১ এএম, ১৪ মার্চ ২০১৮

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড প্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বুধবার আপিল বিভাগ স্থগিত করে দেয়ার পর তার আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেছেন, ‘আদালতের এ আদেশে আমরা ব্যথিত এবং দেশবাসী মর্মাহত’।

এর আগে, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন আগামী রোববার (১৮ মার্চ) পর্যন্ত স্থগিত করেছেন। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ বুধবার সকালে এ আদেশ দেন।

আদেশ দেয়ার পর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির কক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ধারণা করেছিলাম, চিরাচরিতভাবে আপিল বিভাগ যেটা করেন, উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনেন, তারপর আদেশ দেন। আজ দুদকের আইনজীবী আপিলটি প্লেস করার সঙ্গে সঙ্গে আদালত বললেন আগামী রোববার সিপি ফাইল করেন, সে পর্যন্ত জামিন স্থগিত থাকবে’।

তিনি বলেন, ‘আমাদের কোনো বক্তব্য তিনি (প্রধান বিচরিপতি) শুনলেন না। কোনো রকম আইনগতভাবে এই মামলাটি মোকাবেলা করার জন্য ন্যূনতম সুযোগ আমাদের না দিয়ে স্টে অর্ডার পাস করলেন’।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রধান বিচারপতিকে বলেছি যে, মাননীয় আদালত আমাদের কথা না শুনে কোনো অর্ডার পাস ইতিপূর্বে আমরা কখনও দেখি নাই। এতে করে পাবলিক পারসেপশনে খারাপ প্রভাব ফেলবে। তিনি আমাদের কথা শুনলেন না। না শুনে বললেন, আগামী রোববার পর্যন্ত স্টে থাকবে। আগামী রোববার সিপি ফাইল করা হবে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি বলেন,আমরা এই আদেশে অত্যন্ত ব্যথিত হয়েছি, মানুষ ব্যথিত, মর্মাহত। বিচার বিভাগ ইতোপূর্বে এভাবে কখনও ছিল না। আজকের বিচার বিভাগের কাছ থেকে এটা আশা করি নাই। তার কারণ আপনারা জানেন, এই ধরনের শর্ট সেন্টেন্সে দেশের সর্বোচ্চ আদালত কখনও ইন্টারফেয়ার করেন নাই। চেম্বারে স্টে না থাকার পরও সেই মামলায় স্টে দিলেন’।

তিনি বলেন, ‘আমি একটি কথা বলতে চেয়েছিলাম আদালতকে, আপনি যদি স্টে নাও দেন, তাহলেও খালেদা জিয়া কারাগার থেকে বের হতে পারছেন না। সরকার তাকে বের হতে দেবেন না। ইতোমধ্যে তারা বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতারের পরিকল্পনা করে রেখেছে। এই অবস্থার মধ্যে যদি আপনারা স্টে দেন তাহলে পাবলিক পারসেপশনে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। তারপরও আদালত আমাদের কথা শুনলেন না।

তিনি বলেন, আমরা আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে জানাতে চাই যে, আমাদের বক্তব্য না শুনে দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই ধরনের আদেশ দিয়েছে। এই আদেশে আমরা ব্যথিত, এই আদালতের আদেশের বিষয়ে কী ভাষায় আপনাদের কাছে বর্ণনা করবো; আমরা বর্ণনা করতে পারছি না’।

তিনি বলেন, আশা করি রোববার আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনবেন। অতীতের নজিরগুলো লক্ষ্য রেখেই আজকে যে আদেশটি দিলেন তা ভ্যাকেট করবেন। ইনশাল্লাহ বেগম জিয়া জনসমুখে বের হয়ে আসবেন।

তিনি বলেন, আমাদের একজন আইনজীবী গিয়াস উদ্দীন সাহেব, উনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন, উনি দাঁড়িয়েছিলেন। তখন আদালত বলেছেন, আপনারা দাঁড়িয়ে থাকেন কেন? তিনিও বলেছেন, তার ব্যথা লেগেছে। তিনি বলেছেন, মাননীয় আদালত এটা অত্যন্ত নজিরবিহীন’।

গিয়াস উদ্দীন বলেন, ‘বিচারপতি মোরশেদের সময় থেকে আজ পর্যন্ত এ রকম কোনো নজির ছিল না। বিচারপতি মোরশেদের সময় থেকে আমি এই আদালতে আছি। তার সময় থেকে আমি শিখতে শিখতে এসেছি। কোনো বিচারপতির সময় এ ধরনের নজির নাই। এটা নজিরবিহীন আদেশ’।

জয়নুল আবেদীন বলেন, সেখানে এতগুলো সিনিয়র আইনজীবী ছিল, ক্রিমিনাল ল’ এর সবচেয়ে ভাল আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদ, এজে মোহাম্মদ আলী ছিলেন; কারো কোনো বক্তব্য তিনি (প্রধান বিচরিপতি) শুনলেন না। তিনি তো সিনিয়রদের বক্তব্য শুনতে পারতেন। কারো কোনো বক্তব্য শুনলেন না। আমি একজন সিনিয়র আইনজীবী, বারের সভাপতি, একটি কথাও জিজ্ঞাসা করলেন না প্রধান বিচারপতি। এটা দুঃখজনক। আমরা মর্মাহত, অনেক ব্যথা পেয়েছি। সেই ব্যথা প্রকাশের ভাষা আজকে আপনাদেরকে বলতে পারছি না’।

এফএইচ/এমএমজেড/জেআইএম

আরও পড়ুন