বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের তিন প্যানেল
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি (বার) নির্বাচনে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ‘জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল’ঘোষণার ১৬ ঘণ্টা পার না হতেই বুধবার (৭ মার্চ ) বিদ্রোহী অপর একটি প্যানেল ঘোষণা করা হয়। অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের নেতৃত্বে বিএনপি-জামায়াতপন্থী আইনজীবীদের এ বিদ্রোহী প্যানেল মনোনয়ন বঞ্চিতের অভিযোগ এনে পাল্টা প্যানেল ঘোষণা করে।
এর পরদিনই বৃহস্পতিবার আরও বিএনপি-জামায়াতপন্থী আরও একটি (তৃতীয়) প্যানেল ঘোষণা করা হয়। বিএনপির সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহ্ মো. খসরুজ্জামানের নেতৃত্বে এই প্যানেল ঘোষণা করা হয়। ঘোষণা করা ওই প্যানেলের সম্পাদক হলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আবুল বাশার। এই প্যানেলের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট শামসুল জালাল চৌধুরী ও অর্থ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাবিনা ইয়াসমিন লিপি। তবে অন্য কোন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেননি তারা।
জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের নেতৃত্বে মঙ্গলবার (৬ মার্চ) রাতে প্রথমে একটি প্যানেল ঘোষণা করা হয়। তার পরের দিন বুধবার (৭ মার্চ) অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারের নেতৃত্বে অপর প্যানেল এবং সর্বশেষ তৃতীয় প্যানেলের ঘোষণা আসে বৃহস্পতিবার। মঙ্গলবার রাতে প্রথম প্যানেল ঘোষণার পর বুধবার বিকেলে আইন, বিচার ও সংবিধান বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’রিপোর্টার্স ফোরামের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পাল্টা (বিদ্রোহী) প্যানেল ঘোষণা করা হয়। এর আগে বুধবার দুপুরে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন কয়েকজন আইনজীবী।
মঙ্গলবার রাতে ঘোষিত ‘জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলে’বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনকে সভাপতি প্রার্থী এবং বর্তমান সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকে সম্পাদক প্রার্থী করা হয়। বিএনপির সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ঘোষণা করা ওই প্যানেলের অপর প্রার্থীরা হলেন, সহ-সভাপতি আব্দুল জব্বার ভূইয়া, এমডি গোলাম মোস্তফা, কোষাধ্যক্ষ নাসরিন আক্তার, সহ-সম্পাদক কাজী জয়নুল আবেদীন, আনজুমানারা বেগম মুন্নী, সদস্য ব্যারিস্টার সাইফুর আলম মাহমুদ, জাহাঙ্গীর জমাদ্দার, এমদাদুল হক, মাহফুজ বিন ইউসুফ, সৈয়দা শাহীনারা লাইলী, নাসরিন খন্দকার শিল্পী।
অপরদিকে বুধবার বিকেলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারকে সভাপতি ও এবিএম রফিকুল হক তালুকদার রাজাকে সম্পাদক প্রার্থী করে বিদ্রোহী প্যানেল ঘোষণা করা হয়। এই প্যানেলের অপর প্রার্থীরা হলেন, সহ-সভাপতি ডা. মো. গোলাম রহমান ভূইয়া ও মুহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট আয়ুব আলী আসরাফী, সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট শরিফ ইউ আহমেদ ও অ্যাডভোকেট আবু হানিফ, সদস্য পদে মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, অ্যাডভোকেট মমিন উল্লাহ পাটোয়ারী, সাবিনা ইয়াসমিন লিপি, মো. শফি-উর-রহমান, ইকবাল হোসেন, মো. আকবর হোসেন ও আব্দুস সামাদ।
এবিএম রফিকুল হক তালুকদার রাজা পাল্টা প্যানেল ঘোষণার বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তির জন্য যারা আন্দোলন করে যাচ্ছেন, যারা আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলেন তাদের বাদ দিয়ে নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিকে প্রার্থী করা হয়েছে। প্রতি বছরই একই ব্যক্তিদের প্রার্থী করা হচ্ছে। এতে বিএনপিপন্থী ও সাধারণ আইনজীবীদের মধ্যে ক্ষোভ বেড়েছে। ক্ষোভের প্রতিফলন আমাদের এ প্যানেল।
প্রসঙ্গত, আগামী ২১ ও ২২ মার্চ দু’দিনব্যাপী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে। নির্বাচনে অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়নকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট এসকে মোরশেদকে সম্পাদক প্রার্থী করে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীদের একক প্যানেল ঘোষণা করা হয়।
এফএইচ/ওআর/এমএস