রায় নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টির পাঁয়তারা
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রায় নিয়ে একটি প্রতিক্রিয়াশীল মহল ধুম্রজাল সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা।
রোববার দুপুর দেড়টায় সুপ্রিম কোর্ট বার অডিটোরিয়ামে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন সংগঠনের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার ফজলে নুর তাপস।
তাপস বলেন, দেশে ২০১৩ এবং ২০১৪ সালের মতো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে (বিএনপি) তারা। দুদকের মামলার কাগজপত্র অনুযায়ী এটা পরিষ্কার। তারা দুর্নীতি করেছে।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি এ রায়ের মাধ্যমে আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা পেয়েছে। দেশে যে অপসংস্কৃতি ছিল আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখানোর অপসংস্কৃতির অবসান হয়েছে।
আমাদের দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। যে জাতি যত বেশি করে আইনের শাসন ভোগ করেছে সেই জাতিকেই তত বেশি সভ্য মনে করা হয়। সংবিধানে ২৭ অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ধনী-গরিব সাবেক রাষ্ট্রপতি সাকে প্রধানমন্ত্রী প্রভাবশীলী ব্যক্তিত্ব কারও সঙ্গে কোনো ভেদাভেদ করা যাবে না সবাই সমান।
ব্যারিস্টার তাপস বলেন, গত ৮ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ড হওয়াকে কেন্দ্র করে বিএনপিসহ একটি প্রতিক্রিয়াশীল মহল ধুম্রজাল সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছে। দেশে অশান্তি সৃষ্টিতে তারা লিপ্ত। তারা ব্যাপক মিথ্যাচার করছে। আমরা এর নিন্দা জানাচ্ছি।
ধানমন্ডির এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা পেয়েছে। দেশে যে অপসংস্কৃতি ছিল আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর তার অবসান হয়েছে। যতটুকু আমরা এজহার এবং চার্জশিট দেখেছি এ মামলাটি অত্যন্ত পরিষ্কার মামলা। তারপরও দীর্ঘসময় কালক্ষেপণ করা হয়েছে। এ মামলা নিষ্পত্তিতে।
তিনি বলেন, যদিও এ মামলার উৎপত্তি শুরু সেই ১৯৯১ সালে। এর মাঝে বিদেশ থেকে যে টাকা আনা হয়েছে সেটাকে প্রধানমন্ত্রী এতিম তহবিল হিসেবে সেই ফান্ড গঠন করে টাকাটি প্রথমে সেখানে রাখা হয়। এর পরবর্তীতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট সৃষ্টি করে সেই টাকাটি সেখানে স্থানান্তর করা হয়। সেই ট্রাস্ট থেকে ২০০৭ সাল থেকে কাজী সলিমুল হক তারেক রহমান, মুমিনুর রহমান এবং শরফুদ্দীন নামে ব্যক্তিদের নামে টাকাটি ট্রান্সপার করা হয়। ২ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে ব্যক্তিগতভাবে আত্মসাত করা হয়।
তিনি বলেন, আমরা জানি একটি ট্রাস্ট করতে হলে ট্রাস্টি বোর্ড থাকে এবং বেনিফিশিয়ারি জন্য সেই টাকা ব্যয় করা হয়। কোন এতিম তো দূরে থাক, কোনো গরিব ব্যক্তির জন্য সেই ট্রাস্টের টাকা ব্যবহার করা হয়নি। বরং শরফুদ্দীন তারেক রহমান গংরা নিজেদের নামে আত্মসাত করেছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ যারা দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন, এতে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এখন আইনের প্রক্রিয়ায় তিনি আপিল করবেন। আদালত বিবেচনা করবেন যে তাকে জামিন দেয়া যায় কিনা। তিনি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জামিন পেতে পারেন। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। এ রায়কে সেই মহল একটি রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রচেষ্টা চলমান। তারা ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে দেশকে যে বিশৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে গিয়েছিল সেই রকম একটি ষড়যন্ত্রে তারা লিপ্ত হয়েছেন।
ব্যারিস্টার তাপস বলেন, ডিভিশন দেয়াকে নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ডিভিশন তিনি প্রাপ্য। সে প্রাপ্য পরিপূর্ণভাবে তাকে দেয়া হয়েছে। সুতরাং নতুন করে ধুম্রজাল ষড়যন্ত্রে সৃষ্টির অবকাশ নেই।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল বাসেত মজুমদার, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, সদস্য সচিব ব্যারিস্টার ফজলে নুর তাপস, আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, আব্দুল মতিন খসরু, আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম ও নুরুল ইসলাম সুজন এমপিসহ প্রমুখ।
এফএইচ/জেএইচ/আরআইপি/এমএস