খালেদা জিয়া বেকসুর খালাস পাবেন : মওদুদ
বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‘মিথ্যা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কোনোভাবেই সাজা দেয়া যাবে না। তিনি এ মামলায় বেকসুর খালাস পাবেন।’
বুধবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় রাজধানীর বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে ৬ষ্ঠ দিনের মতো যুক্তি উপস্থাপন শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি। এদিন খালেদার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী।
মওদুদ বলেন, ‘মামলাটিতে যারা জালিয়াতি করে মিথ্যা সাক্ষী দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধেই মামলা করা উচিত। আমরা এ সংক্রান্ত একটি আবেদন আদালতকে দেব। পুরো মামলাটি কাল্পনিক। ঘঁষা-মাজার উপর নির্ভর করে মামলাটি দাঁড় করানো হয়েছে। মামলার মূল নথি পাওয়া যায়নি। সেখানে তারা নতুন করে কাগজ তৈরি করেছেন। মামলাটি ভুয়া।’
এদিন বেলা ১১টা ৩৮ মিনিটে রাজধানীর বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে উপস্থিত হন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এরপর বেলা ১১ টা ৪৩ মিনিটে তার আইনজীবী ৬ষ্ঠ দিনের মতো জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার পক্ষে উপস্থাপন শুরু করেন।
এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর পঞ্চম দিনের মতো খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন তার আইনজীবীরা। যুক্তি উপস্থাপন শেষ না হওয়ায় আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান পরবর্তী যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ৩ ও ৪ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। এদিন খালেদার পক্ষে খন্দকার মাহবুব হোসেন যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। তার যুক্তি উপস্থাপন শেষে এ জে মোহাম্মদ আলী খালেদার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। তবে তার যুক্তি উপস্থাপন শেষ না হওয়ায় পরবর্তী যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ৩ ও ৪ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন।
অপরদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার যুক্তি উপস্থাপনের জন্য একই দিন ধার্য করেন আদালত।
গত ১৯ ডিসেম্বর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষ ১৯ ডিসেম্বর তাদের যুক্তি উপস্থাপন শেষ করে খালেদার সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন করেন। ২০ ডিসেম্বর খালেদার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন তার আইনজীবী আবদুর রেজ্জাক খান। এ দিন শেষ না হওয়ায় ২১ ডিসেম্বর পরবর্তী যুক্তি উপস্থাপনের দিন ধার্য করেন আদালত। ২১ ডিসেম্বর খালেদার পক্ষে যুক্তি উপস্থান শেষ না হওয়ায় ২৬, ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর পরবর্তী যুক্তি উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় একটি মামলা করে দুদক।
২০১০ সালের ৫ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া বাকি আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
এছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় আরও একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (পলাতক), হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর সাবেক নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
জেএ/এসএইচএস/জেআইএম