ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

পিলখানা ট্র্যাজেডি : আপিলের রায় পড়া শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৫:১১ এএম, ২৬ নভেম্বর ২০১৭

পিলখানা ট্র্যাজেডির ঘটনায় করা হত্যা মামলায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ডের অনুমোদন চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন এবং আসামিপক্ষের খালাস চেয়ে করা হাইকোর্টে আপিলের রায় পড়া শুরু হয়েছে।

রোববার সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চে এ রায় ঘোষণা শুরু হয়েছে। বেঞ্চের প্রধান শওকত হোসেন রায় পড়ছেন।

বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের সঙ্গে বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার।

এ রায় ঘিরে সকাল থেকে হাইকোর্ট এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

রায় ঘোষণা শেষ হলেই জানা যাবে আসামিদের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতের দেয়া দণ্ড কতটা বহাল থাকছে। কারণ, নিম্ন আদালতে ১৫২জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন এবং ১৫৬ জনকে ১০ বছর করে দণ্ড ঘোষণা করা হয়। নিম্ন আদালতের রায়ে খালাস দেয়া হয়েছিল ২৭৭ জনকে।

২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ড. মো. আখতারুজ্জামান ওই রায় ঘোষণা করেছিলেন।

আট বছর আগে ২০০৯ সালে তৎকালীন বিডিআর সদর দফতরে পিলখানা ট্র্যাজেডিতে ৫৭ জন সেনাকর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। বিডিআর জওয়ানদেরই একটি অংশের হাতে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল।

সেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিম্ন আদালতের রায়ের পর দ্বিতীয় ধাপে হাইকোর্টের রায়ের মাধ্যমে বিচারের অপেক্ষায় রয়েছেন নিহতদের স্বজনরা।

এর আগে হাইকোর্টের একই বেঞ্চে মামলাটির যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ১৩ এপ্রিল মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখা হয়। প্রায় আট মাস পর নভেম্বর মাসে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য হাইকোর্টের কার্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। রোববারের কার্যতালিকার এক নম্বর ক্রমিকে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য ছিল।

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে তৎকালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দফতর পিলখানায় বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। এ ঘটনায় ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করা হয়। পরবর্তীকালে মামলা দুটি স্থানান্তর হয় নিউমার্কেট থানায়। হত্যা মামলায় মোট আসামি করা হয় ৮৫০ জনকে।

নিম্ন আদালতের রায়ে বিডিআরের উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) তৌহিদুল আলমসহ ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয় ২৫৬ জনকে। আর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পান ২৭৭ জন।

এরপর মৃত্যুদণ্ডের এই রায় নিশ্চিতকরণে মামলাটি ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি দণ্ডপ্রাপ্ত কারাবন্দি আসামিরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। এ ছাড়া খালাস পাওয়া ৬৯ জওয়ানের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মামলাটি নিষ্পত্তির ২০১৫ সালে প্রস্তুত করা হয় ৩৫ হাজার পৃষ্ঠার পেপারবুক।

এরপরই হাইকোর্টের তিন বিচারকের সমন্বয়ে গঠন করা হয় বৃহত্তর বেঞ্চ। ওই বছরের ১৮ জানুয়ারি পেপারবুক পাঠের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি।

হাইকোর্টে ৩৭০ কার্যদিবস এই মামলার শুনানি চলে। এর মধ্যে ১২৪ কার্যদিবস পড়া হয়েছে পেপারবুক। বাকি ২৪৬ কার্যদিবস রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন করেন আইনজীবীরা।

২০১১ সালের ৫ জানুয়ারি এই হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু করেন ঢাকার বিশেষ জজ জহুরুল হক। ওই বছরের ২৪ আগস্ট মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। পরে এ মামলার দায়িত্ব পান মো. আখতারুজ্জামান।

মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, সাবেক ও বর্তমান সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা, পুলিশের সাবেক ও বর্তমান আইজি, বেসামরিক ব্যক্তিসহ মোট ১ হাজার ৩৪৫ জনকে রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষী করা হলেও শেষ পর্যন্ত ৬৫৪ জন আদালতে জবানবন্দি দেন।

এআর/এফএইচ/এনএফ/জেআইএম

আরও পড়ুন