ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

তদন্ত কর্মকর্তার বিষয়ে যা বললেন খালেদা জিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০২:২৭ পিএম, ২৩ নভেম্বর ২০১৭

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে ষষ্ঠ দিনের মতো অসমাপ্ত বক্তব্য প্রদান করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

বৃহস্পতিবার ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে বেলা ১১টা ২৪ মিনিট থেকে ১২টা পর্যন্ত অর্থাৎ ৩৬ মিনিট তিনি আদালতে বক্তব্য দেন। এদিন তার বক্তব্য শেষ না হওয়ায় পরবর্তী ৩০ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বেগম খালেদা জিয়া মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার বিষয়ে বলেন, ‘মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদ নিরপেক্ষ অনুসন্ধান না করে নিজেই দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ করে একটি অসত্য রিপোর্ট দাখিল করেছেন। তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।’

হারুন-অর-রশীদ সম্পূর্ণরূপে একজন ইন্টারেস্টেড সাক্ষী উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘তিনি অতি উৎসাহী। আওয়ামী লীগ সরকারের আজ্ঞাবহ। এই মামলায় একই সঙ্গে তিনি অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা, মামলার বাদী এবং তিনিই এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। ফলে তিনি নিরপেক্ষ কোনো অনুসন্ধান করেন নাই বা নিরপেক্ষ কোনো তদন্তও করেন নাই।’

খালেদা জিয়া তদন্তকারী কর্মকর্তার নিয়োগকে অবৈধ দাবি করে বলেন, ‘হারুন-অর-রশীদ ১৯৭৯ সালে অ্যাসিস্টেন্ট পদে তৎকালীন ব্যুরো অব অ্যান্টি করাপশনে যোগদান করেন বলে দাবি করেছেন। অথচ ১৯৭৯ সালের ব্যুরো অব অ্যান্টি করাপশনের অর্গানোগ্রামে অ্যাসিস্টেন্ট নামের কোনো পদ বা পদবী ছিল না। এই অ্যাসিস্টেন্ট পদটি ব্যুরো অব অ্যান্টি করাপশনে স্থান পায় ১৯৮৫ সালে। তাহলে ১৯৭৯ সালে অ্যাসিস্টেন্ট হিসেবে তার নিয়োগ প্রশ্নবিদ্ধ এবং অবৈধ। নিয়োগ অবৈধ হওয়ায় নিরপেক্ষ অনুসন্ধান বা তদন্ত করার মতো তার কোনো নৈতিক মনোবল ছিল না। ফলে সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে তাদের নির্দেশিত মতে অনুসন্ধান ও তদন্ত করে মিথ্যা প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।’

বিএনপি নেত্রী বলেন, ‘এই সাক্ষী ১৯৭৯ সালে অ্যাসিস্টেন্ট পদে প্রশ্নবিদ্ধ নিয়োগের পর বিভিন্ন কৌশলে ১৯৮৫ সালে অ্যাসিস্টেন্ট ইন্সপেক্টর এবং ১৯৯২ সালে ইন্সপেক্টর পদে পদোন্নতি নেন। ২০০৫ সালে বিএনপি ও চারদলীয় জোট সরকারের শাসনামলে তাকে অযোগ্য হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশনে আত্তীকরণ না করে অব্যাহতি দেয়া হয়। সেই অব্যাহতি আদেশের বিরুদ্ধে এই সাক্ষী মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দায়ের করে হেরে যান। সেই আদেশের বিরুদ্ধে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে লিভ টু আপিল ফাইল করে তিনি অদৃশ্য ইশারায় সেই লিভ টু আপিল প্রত্যাহার করে নেন। তার পরপরই ২০০৮ সালে তাকে সরাসরি উপ-সহকারী পরিচালক পদে দুর্নীতি দমন কমিশনে নিয়োগ দেয়া হয়।’

‘নিয়োগের মাত্র দুদিন পর এই মামলার অনুসন্ধানের দায়িত্ব তাকে দেয়া হয়। শুধু তাই নয়, আমার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিলের সময়ের মধ্যেই তাকে পদোন্নতি দিয়ে সহকারী পরিচালক করা হয়। আর চার্জশিট দাখিলের পর ২০১২ সালে পুরস্কার স্বরূপ আবারো তাকে পদোন্নতি দিয়ে করা হয় উপ-পরিচালক।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘হারুন-আর-রশীদ এজাহারে ও জবানবন্দিতে বলেছেন যে, আমি নাকি বিভিন্ন চেকের মাধ্যমে প্রাইম ব্যাংক, গুলশান শাখায় এফডিআর (স্থায়ী আমানত) হিসাব খোলার নামে অর্থ স্থানান্তর করেছি। সাক্ষীর এরূপ অভিযোগ মনগড়া ও ভিত্তিহীন। তিনি ব্যক্তিগত ও চাকরি জীবনে বিশেষ সুবিধা পাওয়ার আশায়, ক্ষমতাসীনদের অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য এবং আমি ও আমার দলকে সামাজিক, রাজনৈকিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে এরূপ মিথ্যা উক্তি এজাহারে উল্লেখ করেছেন এবং জবানবন্দি দিয়েছেন। তার এই মিথ্যা বক্তব্যের সূত্র ধরেই আমার প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল জনসম্মুখে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে চলেছে।

জেএ/জেডএ/আইআই

আরও পড়ুন