নেত্রকোনার ৭ জনের বিরুদ্ধে দুই সাক্ষীর জবানবন্দি পেশ
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার শেখ মো. আব্দুল মজিদ ওরফে মজিদ মাওলানাসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ষষ্ঠ ও সপ্তম সাক্ষী জবানবন্দি পেশ করেছেন।
দুই সাক্ষীর জবানবন্দি শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের জেরা করেন। পরবর্তী সাক্ষীর জবানবন্দির জন্য বৃহস্পতিবার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
বুধবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
এ সময় ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মো. মুখলেসুর রহমান বাদল, সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি ও আবুল কালাম।
সপ্তম সাক্ষী তার জবানবন্দিতে বলেন, আমার নাম প্রদীপ চন্দ্র সিংহ। বর্তমান বয়স আনুমানিক ৬৬ বছর। গ্রাম, ঘাগড়া, থানা পূর্বধলা, জেলা, নেত্রকোনা। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিল আনুমানিক ২০ বছর। তখন আমি ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজের ছাত্র। শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়ি ঘাগড়ায় চলে যাই। ১৯৭১ সালের ২৯ এপ্রিল পাকিস্তানি আর্মিরা পূর্বধলায় আসে। তাদেরকে অভ্যর্থনা জানায় স্থানীয় মুসলিম লীগ নেতা বছির আকন্দ, নেজামে ইসলামীর নেতা শরাফ উদ্দিন আহম্মেদ, আসামি কবির খান, আসামি আব্দুল খালেক তালুকদার, আসামি আব্দুর রহমান, আসামি শেখ আব্দুল মজিদ ওরফে মজিদ মাওলানাসহ আরও অনেকে। পাকিস্তানি আর্মিরা পূর্বধলা সিও অফিস ও ডাক বাংলোয় ক্যাম্প স্থাপন করে। ওইদিন ডাক্তার হেম বাগীর ছেলে ও পরিবারের সদস্যরা এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের আরও অনেক লোকজন আমাদের বাড়িতে এসে আশ্রয় নেয়। ডাক্তার হেম বাগচী আমার আত্মীয় ছিলেন।
সাক্ষী জবানবন্দিতে বলেন, ১৯৭১ সালের ১ মে দুপুর ১টার দিকে ডাক্তার হেম বাগীর কম্পাউন্ডার সিদ্দিকুর রহমান (বর্তমানে মৃত) আমার বাড়িতে গিয়ে ডাক্তার হেম বাগচীর ছেলেকে (বর্তমানে মৃত) জানায় যে, পাকিস্তানি আর্মিরা আসামি কবির খান ও আব্দুল খালেকসহ অন্যদের সহায়তায় ডাক্তার হেম বাগচী, হরিদাস সিংহ ও মেঘুনাথকে হেমবাগচীর বাড়িতে গুলি করে হত্যা করেছে।
এই ঘটনা শুনে আমি কম্পাউন্টার সিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গে ওইদিনই বিকেলে পূর্বধলা তহসিল অফিসে যাই। এর সেখানে তাদের মরদেহ দেখতে পাই। পরে রাজাকাররা বাড়িতে লুটপাট চালায়।
এফএইচ/বিএ