আপস করবেন না : প্রধান বিচারপতিকে জয়নুল আবেদীন
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বার) সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেছেন, যারা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, মানবতা, আইনের শাসন ও সংবিধানের প্রতি বিশ্বাস রাখে তারাই আপনাকে (প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা) সুপ্রিম কোর্টে ফেরাতে চান। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির অবস্থান কর্মসূচিতে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে পূর্বঘোষিত মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচিতে কয়েকশ আইনজীবী অংশ নেন। গত রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা পাঁচদিনের ঘোষিত কর্মসূচির তৃতীয় দিন ছিল আজ। জয়নুল আবেদীন সব আইনজীবীকে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলন, আমরা অবশ্যই যাব। তার আগে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে আহ্বান জানাই আপনার জীবন থাকা পর্যন্ত দেশে থাকুন। আপনি আমাদের কথা রেখে দেশে আছেন এজন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ছুটিতে থাকা প্রধান বিচারপতির প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, জীবন যতক্ষণ আছে, সুপ্রিম কোর্টে ফিরে না আসা পর্যন্ত আপনি বিদেশে যাবেন না। যারা মানবতার পক্ষে, যারা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পক্ষে, যারা আইনের শাসন ও সংবিধানে বিশ্বাস করে তারা সবাই আপনার সুপ্রিম কোর্টে ফিরে আসা চান।
তিনি বলেন, এখন তুঘলকী অবস্থা চলছে। প্রধান বিচারপতির বাসার আশপাশে কেউ কেউ ঘোরাফেরা করছে, তাকে বিদেশে পাঠাতে চায়। প্রধান বিচারপতিকে বলব, আপনি শক্ত থাকবেন, অনড় থাকবেন। আপস করবেন না। কোনো চাপের কাছে মাথা নত করবেন না। সারাদেশের আইনজীবীরা আপনার সঙ্গে আছেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট মীর মোহাম্মদ নাছিরউদ্দীন, নিতাই রায় চেীধুরী, সমিতির সাবেক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, সমিতির বর্তমান সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বিচারপতি ফয়সাল মাহমুদ ফায়েজী,আহমেদ আজম খান, ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি সানা উল্লাহ মিয়া, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, তৈমুর আলম খন্দকার, খালেদা পান্না, গোলাম মো. চৌধুরী আলাল, বারের সহ-সভাপতি উম্মে কুলসুম রেখা, বারের সদস্য আয়শা আক্তার, শামীমা সুলতানা দীপ্তি, ওয়ালিউর রহমান খান, আবেদ রাজা, মোহাম্মদ আলী, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, মির্জা আল মাহমুদ, খালেদা পান্না, রফিকুল ইসলাম তালুকদার রাজা, আরিফা জেছমিন, ব্যারিস্টার সাদিয়া আফরোজ, শরীফ ইউ আহমেদ প্রমুখ।
মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষা ও প্রধান বিচারপতিকে তার স্বপদে বহাল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলন বিচার বিভাগ রক্ষার জন্য। নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
বিচারপতি ফয়সাল মাহমুদ ফায়েজী বলেন, যারা এ অবস্থার সৃষ্টি করেছে তাদের ভয়াবহ অবস্থার সম্মুখীন হতে হবে। তিনি বলেন, কোনো দেশে এর চেয়ে বড় সাংবিধানিক শূন্যতা আর হতে পারে না।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ষোড়শ সংশোধনী করা হয়েছিল বিচার বিভাগকে হত্যা করার জন্য। প্রধান বিচারপতিকে ছুটি নিতে বাধ্য করে এর সূচনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আইনমন্ত্রী বিচার বিভাগের মুখপাত্র হিসেবে বক্তব্য রাখছেন। আমরা সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে জানতে চাই প্রধান বিচারপতি ছুটি নিয়েছেন কিনা। তিনি আরও বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় দলীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তৈয়মুর আলম খন্দকার বলেন, সরকার যখন স্বৈরাচারের চরম পর্যায়ে যায়, তখন বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে নেয়। এ সরকারও তাই করেছে।
এফএইচ/ওআর/এমএস