ঢাবির ভিসি নির্বাচনের প্যানেল অবৈধ : হাইকোর্ট
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) নির্বাচনের জন্য মনোনীত তিন সদস্যের প্যানেলের বিশেষ সভা অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ছয় মাসের মধ্যে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ঢাবির সিনেট গঠনেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া ভিসি মনোনয়নের লক্ষ্যে ২৯ জুলাই সিনেটের বিশেষ সভা আহ্বান অবৈধ ঘোষণা করেছেন আদালত। ২৯ জুলাইয়ের বিশেষ সভায় তিন সদস্যের মনোনীত প্যানেলকেও অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নির্বাচনে তিন সদস্যের প্যানেল মনোনীত করতে গত ২৯ জুলাই সিনেটের বিশেষ সভা ডাকা হয়। ওই বিশেষ সভার নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ জন শিক্ষকসহ ১৫ জন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট রিট করেন। রিটের উপর শুনানি নিয়ে গত ২৪ জুলাই হাইকোর্ট রুলসহ নোটিশের কার্যকারিতা স্থগিত করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইসরাত জাহান শুনানি করেন। তিন সদস্যের ভিসি প্যানেলের সদস্য ছিলেন, সাবেক ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, অধ্যাপক কামাল উদ্দিন ও অধ্যাপক আব্দুল আজিজ।
এর আগে গত ২৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নির্বাচনের লক্ষ্যে মনোনীত তিন সদস্যের ভিসি প্যানেল নিয়ে রুলসহ স্থগিতাদেশ দেন হাইকোর্ট। এ আদেশ স্থগিত চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবেদন করে, যার শুনানি নিয়ে ২৬ জুলাই হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতের বিষয়টি নিয়মিত বেঞ্চে পাঠানো হয়। এর ধারাবাহিকতায় ৩ আগস্ট আপিল বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নির্বাচনের জন্য মনোনীত তিন সদস্যের প্যানেলের পরবর্তী কার্যক্রম স্থগিত করে রিটটি চার সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্টে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। ২১ আগস্ট রিটের ওপর হাইকোর্টে চূড়ান্ত শুনানি শুরু হয়।
এছাড়া ১৬ জুলাই ঢাবির রেজিস্ট্রার একটি চিঠি দেন সিনেট সভার জন্য, যাতে বলা হয় ঢাবি অধ্যাদেশের ১৯৭৩ আর ২১(২) ধারার অর্পিত ক্ষমতাবলে ভিসি প্যানেল মনোনয়নের জন্য উপাচার্য ২৯ জুলাই বিকেল ৪টায় সিনেটের বিশেষ সভা আহ্বান করেছেন।
২৯ জুলাই উপাচার্য নির্বাচনে তিন সদস্যের প্যানেল মনোনীত করতে সিনেটের বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় তিনজনের উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন করা হয়। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এই প্যানেলে নির্বাচিত হন ঢাবির সদ্য বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দীন ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. আবদুল আজিজ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সিনেটের মোট সদস্য ১০৫ জন হলেও বর্তমানে কয়েকটি শ্রেণির নির্বাচন না হওয়ায় সিনেটের ৫০টি পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট ২৫ জন, ৫ জন গবেষণা সংস্থার প্রতিনিধি, ৫ জন অধিভুক্ত ও উপাদানকল্প কলেজের অধ্যক্ষদের প্রতিনিধি, একাডেমিক পরিষদের মনোনীত ১০ জন ও ৫ জন ছাত্র প্রতিনিধির পদ শূন্য রয়েছে। এর বাইরে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত সাদা দলের দুজন শিক্ষক প্রতিনিধি সিনেটের বিশেষ অধিবেশন বর্জন করেন। অনুপস্থিত ছিলেন আরও ৬ জন। বাকি ৪৭ জন সদস্যের উপস্থিতিতে তিনজনের উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন করা হয়।
আদালতের শুনানিতে আজ ঢাবির পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী এবং রিটকারীদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান।
এফএইচ/এনএফ/ওআর/এমএস/আইআই