বিচারপতির দুর্নীতি অনুসন্ধান বন্ধে সুপ্রিম কোর্টের চিঠি নিয়ে রুল
আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের দুর্নীতির অনুসন্ধান বন্ধে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের দেয়া চিঠি কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী ১০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, সুপ্রিম কোর্টের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার অরুণাভ চক্রবর্তী, দুদক চেয়ারম্যান ও সাবেক বিচারপতি জয়নুল আবেদীনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আগামী ১৯ অক্টোবর রুল শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের চিঠির বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করেন আইনজীবী মো. বদিউজ্জামান তফাদার। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান।
সোমবার আদালতের শুনানিতে বিচারপতির দুর্নীতির বিষয়ে মতামত শোনার জন্য সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বারের) সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, সিনিয়র আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও প্রবীর নিয়োগীকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালত বন্ধু) হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন আদালত।
সাবেক বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১০ সালের ১৮ জুলাই সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ দেয় দুদক। তার বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারেরও অভিযোগ রয়েছে দুদকের কাছে।
বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের বিষয়ে অনুসন্ধানের স্বার্থে চলতি বছরের ২ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ে চিঠি দেয় দুদক। এর জবাবে গত ২৮ এপ্রিল আপিল বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার অরুণাভ চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত একটি চিঠি দুদকে পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘বিচারপতি জয়নুল আবেদীন দীর্ঘকাল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ এবং আপিল বিভাগের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দায়িত্ব পালনকালে তিনি অনেক মামলার রায় দেন। অনেক ফৌজদারি মামলায় তার প্রদত্ত রায়ে অনেক আসামির ফাঁসিও কার্যকর করা হয়েছে।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের দেয়া রায় সবার ওপর বাধ্যকর। এমন পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চ আদালতের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির বিরুদ্ধে দুদক কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করলে তার দেয়া রায়সমূহ প্রশ্নবিদ্ধ হবে। সাবেক বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের কোন রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা সমীচীন হবে না।’
তবে সুপ্রিম কোর্ট এই চিঠি দিলেও ওই বিচারকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান থেমে থাকেনি। আর দুদকের চাহিদা অনুযায়ী ওই বিচারকের বিষয়ে নথিপত্রও পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।
এফএইচ/এমআরএম/জেআইএম