ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

নাইকোর সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৬:০৫ এএম, ২৪ আগস্ট ২০১৭

কানাডাভিত্তিক কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (বাপেক্স) যৌথ চুক্তি অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে (২০০৩ ও ২০০৬ সাল) দুই চুক্তির অধীনে যে সব সম্পত্তি রয়েছে, তাদের এ সকল সম্পত্তি জব্দ করে সরকারের অনুকূলে নেয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সেই সঙ্গে নাইকো বাংলাদেশের সম্পত্তি ও বক্ল-৯ এর যে সম্পত্তি সেটাও ফেরত দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া গ্যাস কূপের বিস্ফোরণে সরকারকে ক্ষতিপূরণ না দেয়া পর্যন্ত নাইকোর বকেয়া (অর্থ) টাকা পরিশোধ করা যাবে না বলেও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর এম শামসুল আলমের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই রায় দেন।

এ রায়ের ফলে গ্যাস উত্তোলন ও সরবরাহের জন্য এক যুগের বেশি আগে সরকারি প্রতিষ্ঠান বাপেক্সের সঙ্গে কানাডার প্রতিষ্ঠান নাইকোর করা যৌথ উদ্যোগ (জয়েন্ট ভেনচার) চুক্তি বাতিল হয়েছে বলে জানান আইনজীবী।

২০১৬ সালের ৯ মে বাপেক্সের সঙ্গে নাইকোর করা যৌথ উদ্যোগ চুক্তি কেন বাতিল করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। এই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণা করেন আদালত। আদালতের রিট আবেদেনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। নাইকো সংক্রান্ত ইন্টারন্যাশনাল আর্বিট্রেশন আদালতে লড়া বাপেক্স ও পেট্রো বাংলার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার মঈন গনি।

আইনজীবী মঈন গনি বলেন, ২০১৬ সালে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর এম শামসুল আলম একটি রিট আবেদন করেন। রিট আবেদনে বলা হয়, ২০০৩ ও ২০০৬ সালে নাইকোর সঙ্গে বাপেক্স ও পেট্রোবাংলার চুক্তি সঠিকভাবে হয়নি, দুর্নীতির মাধ্যমে হয়েছে। এ ছাড়া ২০০৫ সালে ছাতকে যে বিস্ফোরণ ঘটেছে এর ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাংলাদেশে থাকা নাইকোর সব সম্পত্তি জব্দের জন্যও আবেদন করা হয়।

এরপর আদালত ২০১৬ সালের ৯ মে রুল জারি করেন। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট এই রায় ঘোষণা করেছেন। বাপেক্সের সঙ্গে নাইকোর করা যৌথ উদ্যোগ চুক্তি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে ২০১৬ সালের ৯ মে রুল দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আদালত ওই চুক্তির কার্যকারিতা স্থগিত করেছিলেন।

মঈন গনি বলেন, কানাডাভিত্তিক আন্তর্জাতিক কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে ২০০৩ সালে করা বাপেক্সের চুক্তি ও ২০০৬ সালের পেট্রোবাংলার সঙ্গে কোম্পানিটির গ্যাস সংক্রান্ত চুক্তি অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে দুই চুক্তির অধীনে যে সব সম্পত্তি আছে, তা বাংলাদেশ সরকারের অনুকূলে ফেরত এবং নাইকো বাংলাদেশের সম্পত্তি ও বক্ল-৯ (টারলো)এর যে সম্পত্তি সেটাও ফেরতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া ছাতক গ্যাস কূপের বিস্ফোরণে ক্ষতিপূরণ না দেয়া পযন্ত নাইকোকে কোনো প্রকার পেমেন্ট করা যাবে না বলেও রায় দিয়েছেন আদালত।

প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালে বাংলাদেশে গ্যাস উত্তোলন ও সরবরাহের কাজ পায় কানাডাভিত্তিক কোম্পানি নাইকো। এ সময় তারা পেট্রোবাংলার সঙ্গে গ্যাস সরবরাহ ও কেনাবেচার চুক্তি করে, আর বাপেক্সের সঙ্গে করে একটি যৌথ উদ্যোগের চুক্তি। চুক্তি মোতাবেক ফেনী গ্যাসক্ষেত্র থেকে নাইকো গ্যাস উত্তোলন ও সরবরাহ করে। কিন্তু সুনামগঞ্জের ছাতকের টেংরাটিলায় কূপ খনন করতে গিয়ে কোম্পানিটি দু’বার বিস্ফোরণ ঘটায়। বিস্ফোরণের পর থেকে বাংলাদেশ নাইকোর কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করে আসছে।

এফএইচ/এমএআর/এআরএস/এনএফ/পিআর/আইআই

আরও পড়ুন