ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

সাত খুনের রায়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১১:৩৭ এএম, ২২ আগস্ট ২০১৭

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার আসামিদের মধ্যে ১৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল ও ১১ আসামির মৃত্যুদণ্ড পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

সাত খুন মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শেষে মঙ্গলবার বিকেলে বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণার পর এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের এ কথা জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।

তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এ খুনের সঙ্গে জড়িত থাকায় এটি দৃষ্টান্তমূলক রায়। ১১ জনের মৃত্যুদণ্ডের সাজা পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন করায় আপিল করা হবে কিনা এ বিষয়ে রায় দেখে চিন্তা-ভাবনা করা হবে।

এছাড়া মামলার অন্য আসামিদের যে দ্বন্দ্ব দেয়া হয়েছে তা বহাল থাকবে বলেও তিনি জানান।

হাইকোর্টের আজ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে প্রধান আসামি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাব-১১-এর চাকরিচ্যুত সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মুহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাসুদ রানা, হাবিলদার মো. এমদাদুল হক, ল্যান্সনায়েক বেলাল হোসেন, সিপাহী আবু তৈয়্যব আলী, কনস্টেবল শিহাব উদ্দিন, এসআই পূর্ণেন্দু বালা, ল্যান্স নায়েক হীরা মিয়া ও আরওজি-১ এ বি মো. আরিফ হোসেন, সৈনিক মহিউদ্দিন মুন্সী, সৈনিক আল আমিন শরীফ, সৈনিত এমডি তাজুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন।

এছাড়া সিপাহী আসাদুজ্জামান নূর, সার্জেন্ট এনামুল কবির এবং নূর হোসেনের ছয় সহযোগী মূর্তজা জামান চার্চিল, আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান দিপু, আবুল বাশার, রহম আলী ও জামাল উদ্দিন সরদারসহ ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন।

মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে রায় পড়া শুরু হয়। বেলা ১টায় এক ঘণ্টার জন্য বিরতিতে যান আদালত। বিরতির পর বেলা সোয়া ২টা থেকে ফের রায় পড়া শুরু করেন বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম।

গত ১৬ জানুয়ারি সাত খুন মামলার রায় দেন নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন। মামলার প্রধান আসামি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন ও র‌্যাবের বরখাস্তকৃত তিন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাসুদ রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। মোট ৩৫ আসামির মধ্যে বাকি নয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়।

গত ২২ মে এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর হাইকোর্টের শুনানি শুরু হয়। প্রথমে বেশ কয়েকদিন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের যুক্তি উপস্থাপন করেন। পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।

শুনানি শেষে গত ২৬ জুলাই রায় ঘোষণার জন্য ১৩ আগস্ট দিন ধার্য করে আদেশ দেন আদালত। এরপর ১৩ আগস্ট আদালত রায় না দিয়ে তারিখ পিছিয়ে ২২ আগস্ট রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নাসিক কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন। তিনদিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে ভেসে ওঠে ছয়টি মরদেহ। পরদিন মেলে আরেকজনের মরদেহ। নিহত অন্যরা হলেন নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক মো. ইব্রাহীম।

ঘটনার একদিন পর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বাদী হয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা (পরে বহিষ্কৃত) নূর হোসেনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন।

এফএইচ/এসআর/এমএস

আরও পড়ুন