ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

বিচার বিভাগের স্বার্থে আমি কথা বলেই যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০২:৪৪ পিএম, ২৯ জুলাই ২০১৭

‘যদি সরকার মনে করে প্রধান বিচারপতি রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছেন, তাহলে আমি বলব হ্যাঁ, প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগের স্বার্থে রাজনৈতিক বক্তব্য দেবেন। বিচারকদের অবস্থা, বিচার বিভাগের উন্নয়নের জন্য প্রধান বিচারপতি প্রয়োজনবোধে আরও বলবেন, এ ব্যাপারে আমি দ্বিধান্বিত হবো না।’

শনিবার দেশের প্রথম নারী বিচারপতি (অবসরপ্রাপ্ত) নাজমুন আরা সুলতানার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা একথা বলেন। বাংলাদেশ মহিলা জজ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্ট অডিটোরিয়ামে এ সম্মাননা দেয়া হয়।

আইনমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘মাননীয় মন্ত্রী আপনাকে বলছি, সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবন ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। আমি যে চেয়ারে বসি সেখানেও বৃষ্টির পানি পড়ে। নতুন একটা অ্যানেক্স ভবন না করলে মাঠে বসে বিচার কাজ করতে হবে। মাননীয় মন্ত্রী বিচার বিভাগ কীভাবে চলবে?’

সুপ্রিম কোর্টের উন্নয়ন বাজেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের জন্য একটা টাকা বরাদ্দ হয়নি। যদিও এবার বাজেটের আগে মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে আমি চিঠি দিয়ে বলেছিলাম যে, সুপ্রিম কোর্টের বরাদ্দ দরকার। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে কোনো অর্থ বরাদ্দ হয়নি।’

‘সুপ্রিম কোর্ট এবং অন্য খাতের বরাদ্দের একটা তুলনামূলক পরিসংখ্যান তুলে ধরি, তাহলে দেখা যাবে এবার জাতীয় সংসদের জন্য উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ হয়েছে ১৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা। আর আমাদের জন্য একটা টাকাও বরাদ্দ হয়নি।’

আইনমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে এসকে সিনহা বলেন, ‘এই যদি অবস্থা হয় তাহলে মাননীয় আইনমন্ত্রী এ বিচার বিভাগ চলবে কীভাবে? দেশ উন্নয়ন হচ্ছে, অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, সব সেক্টরে আমরা ডেভেলপ করছি। কিন্তু বিচার বিভাগকে আস্তে আস্তে কুইজ করে একেবারে জিরোতে নেয়া হচ্ছে। এটা জাতি এবং দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়। আমি আশা করব, আপনার মাধ্যমে আমি সরকারকে বলছি, এটা যদি সরকার মনে করে প্রধান বিচারপতি রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছেন, তাহলে আমি বলব হ্যাঁ, প্রধান বিচারপতি বিচার বিভাগের স্বার্থে রাজনৈতিক বক্তব্য দেবেন, বিচারকদের অবস্থা, বিচার বিভাগের উন্নয়নের জন্য প্রধান বিচারপতি প্রয়োজনবোধে আরও বলবেন। এ ব্যাপারে আমি দ্বিধান্বিত হবো না।’

বিচারক স্বল্পতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুরোধ করেছেন হাইকোর্টে নারী বিচারপতি নিয়োগ দেয়ার জন্য। আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি। যদি কালকে বলেন, কালকেই আমি করতে পারি, সরকার যদি এগিয়ে আসে। আমাদের বিচারকদের স্বল্পতা অনেক। আশা করি, সরকার এটা বিবেচনা করবে। আমি সরকারকে অনুরোধ করবো, আপিল বিভাগে অন্তত তিনজন বিচারক নিয়োগ করার জন্য।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তানজিনা ইসমাইলের সভাপতিত্বে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারকসহ নারী বিচারকরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে চলতি মাসের ৬ জুলাই অবসরে যান আপিল বিভাগের বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী, সাবেক জেলা জজ ও মহিলা জজ অ্যাসোসিয়শনের সাবেক সভাপতি নুরুন্নাহার ওসমানী, খুলনার সিনিয়র জেলা জজ জেসমিন আরা, কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা জজ বেগম জেবুন্নেসা, সিলেটের যুগ্ম জেলা জজ উম্মে শারাবান তহুরা, নোয়াখালীর সিনিয়র সহকারী জজ ফারহানা ভূঁইয়া, কিশোরগঞ্জের সহকারী জজ মহসিনা হোসেন তুসি।

এফএইচ/জেএইচ/আরআইপি

আরও পড়ুন