সারাদেশে অবৈধ বয়লার বন্ধের নির্দেশ
দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠানে (গার্মেন্টস বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে) ব্যবহৃত রেজিস্ট্রারবিহীন বয়লার ৬০ দিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে সব কারখানার বয়লার পরিদর্শনের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এক রিটের শুনানিতে হাইকোর্টের বিচারপতি জুবায়ের রহমান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। মঙ্গলবার আদালতের লিখিত আদেশে এ কথা বলা হয়েছে।
এর আগে গত ৯ জুলাই গাজীপুরের কাশিমপুরের নয়াপাড়ায় মাল্টি ফ্যাবস লিমিটেডে বয়লার বিস্ফোরণে ১৩ জনের নিহতের ঘটনায় মালিকের বিরুদ্ধে নতুন করে এফআইআর করার নির্দেশনা, নিহতদের ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের চিকিৎসা ব্যয়ের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়।
জাস্টিস ওয়াচ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মাহফুজুর রহমান মিলন এ রিট করেন। রিটের পাশাপাশি বয়লার আইনের বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে।
পরে মিলন জানান, বয়লার নিয়ে ১৯২৩ সালের একটি আইন ছিল। এ আইনে বয়লারের ব্যবহার নিয়ে একটি বিধিমালা প্রণয়নের কথা রয়েছে। কিন্তু সেটা এখনও করা হয়নি। তাই এটি প্রণয়নের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া বয়লার নিয়ে আইনের বিধান অনুসরণে বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, শ্রম সচিব, শিল্প সচিব, বিজিএমইএর সভাপতি, প্রধান বয়লার পরিদর্শকসহ ১৭ জনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
এর আগে ৫ জুলাই ওই কারখানার মালিক, মহাব্যবস্থাপক বা ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা করে গ্রেফতার চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।
ওই নোটিশে বলা হয়, সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নয়াপাড়ায় মাল্টি ফ্যাবস লিমিটেড নামের কারখানায় ডাইং সেকশনের বয়লার বিস্ফোরণে অপারেটর সালাম, এরশাদ এবং মন্সুর হকসহ ১৩ জন নিহত এবং অর্ধশতাধিক আহত হন। এ ঘটনায় কারখানার মালিক অপরাধ ধামাচাপা দিতে সালাম, এরশাদ এবং মন্সুর হকসহ অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্থদের বিরুদ্ধে চক্রবর্তী পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আব্দুর রশিদকে বাদী করে মামলা করেন।
নিহত সালামের পুত্র জানিয়েছেন, তার পিতা ওই ফ্যাক্টরীতে ২৪ বছর ধরে কাজ করছে। কারখানার বয়লার ছিলো পুরাতন ও ফিটনেস বিহীন। মালিকদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বললেও কোনো ব্যবস্থা নেননি।
ঘটনার দিন তার বাবার ডিউটি না থাকলেও ম্যানেজার টেলিফোনে বাবাকে কাজে যোগ দিতে বাধ্য করে। কারখানার মালিক ও কর্তা ব্যক্তিগণ এই ঘটনার দায় এড়াতে পারে না।
নোটিশে আরও বলা হয়, ঘটনা তদন্তে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি রিপোর্ট দেয়ার আগেই মামলা করার অর্থ হলো অপরাধ ধামাচাপা দেয়া। ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত করা।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে কারাখানার মালিক/জিএম/ম্যানেজারকে আসামি করে নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা দায়ের করে গ্রেফতারের ব্যবস্থা এবং নিহতদের বিরুদ্ধে দায়ের করা জয়দেবপুর থানার মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন। এছাড়া আহতদের সুচিকিৎসা এবং ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করেন। অন্যথায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করতে বাধ্য হবো’ বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
এফএইচ/এএইচ/এমএস