ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

এখনও স্বাভাবিকভাবে চলতে পারি না : আদুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৬:৩৩ এএম, ১৮ জুলাই ২০১৭

‘পুরো শরীর সব সময় ব্যথা করে। আমি এখনও স্বাভাবিকভাবে চলতে পারি না। সারা জীবনের জন্য অকেজো হয়ে গেলাম। বাকি জীবন কিভাবে চলবো তাও জানি না। আমার মতো এমন নির্যাতনের শিকার আর যেনো কেউ না হয়।’  আজ মামলার রায় ঘোষণার পর আদালত চত্বরে কান্নাজড়িত কণ্ঠে জাগো নিউজকে এসব কথা বলেন গৃহকর্মী আদুরি।

আদুরির মা শাফিয়া বলেন, আমরা গরীব মানুষ। মানুষের বাড়িতে কাজ করে খাই। মেয়েটা এখন আর কোনো কাজ করতে পারে না। সে সারা জীবনের জন্য অকেজো হয়ে গেলো।সরকার যেন আদুরির চলার মত কোনো একটা ব্যবস্থা করে দেয়। রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।

মঙ্গলবার সকালে শিশু গৃহকর্মী আদুরিকে (১১) নির্যাতনের মামলায় গৃহকর্ত্রী নওরীন জাহান নদীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড। এই অর্থদণ্ডের টাকা পাবেন   আদুরি। অপর আসামি নওরীন জাহান নদীর মা ইসরাত জাহানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর বারিধারা ও ডিওএইচএস তেলের ডিপোর মাঝামাঝি রেললাইন সংলগ্ন একটি ডাস্টবিনের পাশ থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় কঙ্কালসার ও মৃতপ্রায় গৃহকর্মী আদুরিকে। উদ্ধারের সময় তার শরীরে অসংখ্য নির্যাতনের চিহ্ন ছিল। মারধর, গরম খুন্তি ও ইস্ত্রির ছ্যাঁকা, ব্লেড দিয়ে শরীরে আঘাত, মাথায় কোপ, খেতে না দেওয়া- কিছুই বাদ যায়নি নির্যাতনের তালিকা থেকে।

প্রায় দেড় মাস আদুরিকে চিকিৎসা দেয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সুস্থ অবস্থায় যখন তাকে রিলিজ দেয়া হয় তখনও সে ভালোভাবে কথা বলতে পারত না। শরীর প্রচণ্ড দুর্বল ছিল। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে ওই বছরের ৭ নভেম্বর পটুয়াখালী জেলার জৈনকাঠি ইউনিয়নের নিজ গ্রামে ফিরে যায় আদুরি।

ওই ঘটনায় ২৬ সেপ্টেম্বর পল্লবী থানায় নওরীন জাহান নদী, তার স্বামী সাইফুল ইসলাম মাসুদ, মাসুদের দুলাভাই চুন্নু মীর ও তাদের আত্মীয় রনিকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। তবে পুলিশি তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চার্জশিট থেকে মাসুদ, চুন্নু মীর ও রনির নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তদন্তে নদীর মা ইসরাত জাহানের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় নতুন করে তাকে আসামি করা হয়।

মামলার পর ২৬ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার করা হয় নদীকে। সেই থেকে নদী কারাগারে আছেন। জামিনে রয়েছেন তার মা ইসরাত জাহান।

গ্রেফতারের পর ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদুরিকে নির্যাতনের কথা স্বীকার করে ওই বছরের ১ অক্টোবর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন নদী। আদুরিও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

২০১৩ সালের ১০ অক্টোবর গৃহকর্ত্রী নওরীন জাহান নদী ও তার মা ইসরাত জাহানকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দেন পুলিশের নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের উপ-পরিদর্শক (এসআই) কুইন আক্তার।

জেএ/এআরএস/জেআইএম

আরও পড়ুন