ডেসটিনির কর্ণধাররা জামিনে গেলে খুঁজে পাওয়া যাবে না
ডেসটিনির চেয়ারম্যান ও এমডি জামিনে একবার কারাগারের বাইরে গেলে তারা এক টাকাও জমা দেবেন না। এমনকি একবার জামিন পেলে তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
সোমবার ডেসটিনির দুই কর্ণধারের জামিন আবেদনের শুনানিতে ডেসটিনির পক্ষের আইনজীবীর উদ্দেশে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।
এ সময় আদালতে ডেসটিনির পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ।
আদালত তখন বলেন, ডেসটিনির বিরুদ্ধে ৩ হাজার কোটি টাকা অর্থপাচারের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এই মামলায় ডেসটিনির চেয়ারম্যান ও এমডির জামিনের পর একবার কারাগারের বাইরে গেলে তারা এক টাকাও জমা দেবে না। টাকা দেয়া তো দূরে থাক তারা আরও অর্থ বাইরে পাচার করবেন।
আদালত আরও বলেন, আপনিতো (রোকন উদ্দিন মাহমুদ) এর আগে হলমার্কের জেসমিনকে টাকা দেয়ার শর্তে জামিন নিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই টাকা তো দেননি। পরে আবেদন দিয়ে ওই আদেশও প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। সেটা আমাদের জানা আছে।
তখন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আমি (তার মক্কেলের কথা বলেছেন) তো জেলে আছি। গাছ তো রয়েছে গাছের জায়গায়। সেটা ছাগলে খেয়েছে না মারা গেছে তা তো জানি না। আমাকে দুই মাসের জামিন দিন।’
এ পর্যায়ে আদালত রোকন উদ্দিন মাহমুদের মক্কেলককে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি একবার জামিনে বেরিয়ে গেলে আপনাকে আর পাওয়া যাবে না।
এ সময় আদালত জানতে চান আপনার (আসামি) অ্যাকাউন্টে কত টাকা আছে। জবাবে আইনজীবী বলেন, ১৪৭ কোটি টাকা আছে।
আদালত আরও বলেন, আপনারা শর্ত অনুযায়ী কিছু টাকা পরিশোধ করুন। আপনাদের সব সুবিধা দেব। এরপর আদালত ব্যাংক হিসাব দাখিলের নির্দেশ দিয়ে আগামী রোববার মামলার শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত বছরের ১৩ নভেম্বর ডেসটিনি গ্রুপের গাছ লাগানো প্রকল্পের আওতায় থাকা ৩৫ লাখ গাছ ছয় সপ্তাহের মধ্যে বিক্রির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
ওইদিন আদালত আদেশে বলেছিলেন, ৩৫ লাখ গাছ বিক্রির ২৮০০ কোটি টাকা সরকারকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে। টাকা পাওয়ার পর ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমিন ও ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইনকে আপিল বিভাগ জামিন দেবেন বলে আদেশে বলা হয়। তবে গাছ বিক্রি করে যদি ২৮০০ কোটি টাকা না হয় তাহলে কমপেক্ষ ২৫০০ কোটি টাকা সরকারকে দিলেই জামিন মিলবে ডেসটিনির চেয়ারম্যান ও এমডির। কিন্তু আদালতের শর্ত অনুযায়ী, টাকা জমা না দেওয়ায় এখনো জেলে রয়েছেন ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমিন ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইন।
এফএইচ/এআরএস/জেআইএম