হ্যান্ডকাফ পরিয়ে চিকিৎসা : আশুলিয়া থানার ওসিকে তলব
জাহাঙ্গীরনগরের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাজমুল হোসেনকে হ্যান্ডকাফ পরা অবস্থায় চিকিৎসা দেয়ার কারণ ব্যাখ্যা করার জন্য আশুলিয়া থানার ওসি মহসিনুল কাদেরকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় তাকে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে কারণ ব্যাখা করার জন্য বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে, অসুস্থ নাজমুল হোসেনকে হাতকড়া পরা অবস্থায় চিকিৎসা দেওয়া কেন বেআইনি হবে না তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করা হয়েছে। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের আইজিপি, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি, ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার ও আশুলিয়া থানার ওসিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও একেএম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সোমবার স্ব:প্রণোদিত হয়ে এই আদেশ দেন। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন ব্লাস্টের লিগ্যাল অ্যাডভাইজর অ্যাডভোকেট এসএম রেজাউল করিম।
পরে তিনি সাংবাদিকদের জানান, বাসচাপায় দুই সহপাঠীর নিহত হওয়ার ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত ছাত্র অসুস্থ নাজমুল হোসাইনকে হাতকড়া পরা অবস্থায় এনাম মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা দেওয়ার ঘটনায় আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহসিনুল কাদেরকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ৩১ মে তাকে স্বশরীরে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে দুই সপ্তাহের রুলও জারি করা হয়েছে।
জানা যায়, গত ২৬ মে ভোর ৫টায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সিঅ্যান্ডবি এলাকায় বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান রানা ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের আরাফাত নিহত হন।
এ ঘটনায় অভিযুক্তদের শনাক্ত করে দ্রুত বিচারের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গ্রেফতার হয় ৪২ শিক্ষার্থী। আহত হয় অনেকে। পরে অবশ্য ৪২ শিক্ষার্থীর জামিনও হয়।
এদিকে আহত এক শিক্ষার্থীকে নিয়ে সোমবার একটি ইংরেজি দৈনিকে “হ্যান্ডক্যাপড টু হসপিটাল বেড” এ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী নাজমুল হোসেন আহত হওয়ার পর তার বন্ধুরা তাকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করে। কিন্তু পুলিশ তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে এনাম মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করায়। যেখানে হাসপাতালের বেডের সাথে তার একহাতে হ্যান্ডকাপ পরানো হয়েছে। খাওয়ার সময় হ্যান্ডকাপ খুলে দিতে অনুরোধ করলেও পুলিশ তা খুলে দেয়নি। এ প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এস এম রেজাউল করিম।
এফএইচ/এআরএস/এমএস