যৌন হয়রানি : আহসানউল্লাহর শিক্ষক ফেরদৌসকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
ছাত্রীকে যৌন হয়রানির মামলায় রাজধানীর আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিচ্যুত শিক্ষক মাহফুজুর রশিদ ফেরদৌসকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বাতিল করে এক সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
আদেশের বিষয়টি জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খন্দকার দিলীরুজ্জামান।
রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০-এর (সংশোধন ২০০৩) ১০ ধারায় যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে কলাবাগান থানায় একটি মামলা করেন।
ওই মামলায় পরে হাইকোর্ট থেকে জামিন পান শিক্ষক ফেরদৌস। সেই জামিন আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষ।
আজ সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত মাহফুজুর রশিদ ফেরদৌসের জামিন বাতিল করে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিলেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, যৌন হয়রানির অভিযোগে ২০১৬ সালের ৪ মে রাতে কলাবাগান থানায় শিক্ষক ফেরদৌসের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসাদদৌল্লাহ আল সায়েম। ওই দিনই কলাবাগানের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে যৌন হয়রানির কথা স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন তিনি। অপরদিকে, ওই ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তাকে বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন শিক্ষক ফেরদৌস।
ছাত্রীদের সঙ্গে যৌন হয়রানি, নগ্ন সেলফি প্রকাশ, ধর্ষণ চেষ্টা ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত ফেরদৌসের বিরুদ্ধে অভিযোপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের নারী সহায়তা ও তদন্ত বিভাগের উপ-পরিদর্শক আফরোজা আইরীন কলি। যৌন হয়রানির শিকার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্রীসহ মোট ২৮ জনকে এ মামলায় সাক্ষী করা হয়।
চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, শিক্ষক ফেরদৌস আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্রীকে বিভিন্ন সময়ে ভয়ভীতি ও প্রশ্নপত্র এবং ভাইভায় নম্বর দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শ্লীলতাহানি ঘটানোর চেষ্টা করে। এক ছাত্রীর সরলতার সুযোগে ভয়ভীতি দেখিয়ে নিজ বাসস্থানে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা এবং তার নগ্ন ছবি ওয়েবসাইট ও মোবাইলের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
এফএইচ/এনএফ/জেআইএম