ব্লগার রাজীব হত্যায় দু’জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল
ব্লগার ও গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যা মামলায় মূল পরিকল্পনাকারী রেদোয়ানুল আজাদ রানা ও ফয়সাল বিন নাইম ওরফে দ্বীপের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।
যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়া মাকসুদুল হাসান অনিককের সাজাও বহাল রেখেছেন আদালত। বাকি পাঁচজনের মধ্যে এহসান রেজা রুম্মান, নাঈম ইরাদ ও নাফিজ ইমতিয়াজকে ১০ বছরের কারাদণ্ডসহ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডও বহাল রেখেছেন আদালত।
রোববার নির্ধারিত দিনে হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের পর্যাবেক্ষণে আদালত ইসলাম সম্পর্কে সঠিক বয়ান দিতে ইমামদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
আদালতের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নিজামুল হক নিজাম ও আতিকুল হক সেলিম। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুর রেজ্জাক খান, মোশাররফ হোসেন কাজল ও মো. আহসানউল্লাহ প্রমুখ।
এর আগে গত ৯ জানুয়ারি রাজীব হত্যা মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের ওপর হাইকোর্টে শুনানি শেষ হয়। ২২তম দিনের শুনানি শেষে ওই দিনই মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়। পরে গত ২৭ মার্চ মামলাটির রায়ের জন্য ২ এপ্রিল তারিখ ধার্য করেন আদালত।
গত বছরের ৭ নভেম্বর হাইকোর্টে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও ব্লগার রাজীব হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়। ২২ কার্যদিবসে এই শুনানি চলে।
২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পল্লবীতে নিজ বাসার সামনে ব্লগার রাজীবকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহম্মেদ রায় প্রদান করেন। রায়ে নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র পলাতক রেদোয়ানুল আজাদ রানা ও ফয়সাল বিন নাঈম দীপের ফাঁসির আদেশ হয়। ওই দু’জনকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেয়া হয়।
মাকসুদুল হাসান অনিককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। বাকি পাঁচজনের মধ্যে এহসান রেজা রুম্মান, নাঈম ইরাদ ও নাফিজ ইমতিয়াজকে ১০ বছরের কারাদণ্ডসহ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয় এবং মুফতি মো. জসীমউদ্দিন রাহমানীকে ৫ বছরের কারাদণ্ডসহ দুই হাজার টাকা জরিমানা; অনাদায়ে আরও দুমাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন বিচারক।
আর সাদমান ইয়াছির মাহমুদকে ৩ বছরের কারাদণ্ডসহ দুই হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল।
রাজীব হত্যার পর গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী, ব্লগার, লেখক-প্রকাশকসহ আরও অনেক হত্যাকাণ্ডে আনসারুল্লাহর সম্পৃক্ততা উঠে আসে পুলিশের তদন্তে। এর মধ্যে রাজীব হত্যার রায়ই প্রথম হয়। এর মধ্যে রানা পলাতক রয়েছেন।
নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি মো. জসীমউদ্দিন রাহমানীকে পাঁচ বছরের দণ্ড দেয়া হয়। রাহমানী ছাড়া বাকি সাত আসামি বেসরকারি নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন।
এফএইচ/এনএফ/পিআর/জেআইএম