ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

সুপ্রিম কোর্টে দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য

প্রকাশিত: ০৩:৫২ পিএম, ২১ জানুয়ারি ২০১৭

দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন এক ভাস্কর্য। বাংলাদেশের আদালত প্রাঙ্গণে এই প্রথম কোনো ভাস্কর্য স্থাপন করা হলো। আদালত এলাকায় সবুজ বেষ্টনির মাঝে ভাস্কর্যটি যেন এক অপূর্ব দৃশ্য। ভাস্কর্যটির স্থাপত্যশৈলী নান্দনিকতার এক অনন্য নিদর্শন।

দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল আদালত বরাবর মূল ভবনের সামনের ফোয়ারার মধ্যে এটি স্থাপন করা হয়েছে। ভাস্কর্য তৈরিতে ইতোমধ্যে নানা রকম কারুকার্য লাগানো হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম জানান, প্রধান বিচারপতির অনুমতিক্রমে ভাস্কর্যটি স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি প্রধান বিচারপতি আনুষ্ঠানিকভাবে এটি উদ্বোধন করবেন।

highসুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন জানান, বলা হয়েছিল জানুয়ারিতে ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করা হবে। কিন্তু দিনক্ষণ ঠিক করা হয়নি। এখন উদ্বোধন করা হয় কিনা তা আদৌ বলা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, ভাস্কর্যটির কাজ শতকরা ৮০ ভাগ শেষ পর্যায়ে। এর একটা নামফলক দেয়া হতে পারে। তবে কী নাম দেয়া হবে তা নির্ধারণ করা হয়নি।

উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, রোমানদের কাছে এই ‘লেডি জাস্টিস’ ন্যায় বিচারের প্রতিকৃতি। গ্রিক মিথ অনুযায়ী, সারা বিশ্বেই এটি বিচার বিভাগের প্রতীক রূপে ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রতিকৃতির চোখ বাঁধা- এর অর্থ হলো- একজন বিচারক পক্ষপাতিত্ব করবেন না। তার কাছে সবাই সমান। আইন অন্ধ তাই প্রতিকৃতির চোখ দু’টি বাঁধা, এটা ধনী গরিব সবার জন্য সমান। ডান হাতে তলোয়ার-এর অর্থ হলো, অন্যায়কারীকে একজন বিচারক দণ্ড প্রদান করবেন। প্রতিকৃতির বাম হাতে দাঁড়িপাল্লা-এর অর্থ হলো, একজন বিচারক সবার মাঝে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করবেন।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন আইনজীবী জানান, দেশের আদালত প্রাঙ্গণে এটি প্রথম কোনো ভাস্কর্য। এই ধরনের একটি ভাস্কর্য ইংল্যান্ডের ওল্ড বেইলি ক্রিমিনাল কোর্ট ভবনের সামনে স্থাপিত রয়েছে। এটি হলো গ্রিকদের ন্যায় বিচারের প্রতিকৃতি। তার আদলে দেশের আদালত প্রাঙ্গণে এই ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা যায়, বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর বিচার বিভাগের বিচারিক সেবা বৃদ্ধি ও মামলা জট কমাতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

একই সঙ্গে সারা দেশের বিচার অঙ্গনে নিরাপত্তা বৃদ্ধি ও আদালত প্রাঙ্গণের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির পরিকল্পনা নেয়া হয়।

বিষয়টি নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের ফুল কোর্টে আলোচনাও হয়েছে বলে একটি সূত্রে জানা যায়। সেখানেও ভাস্কর্য স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত আসে। এরপর ভাস্কর্যটি নির্মাণে দেশের স্বনামধন্য ভাস্কর মৃণাল হককে দায়িত্ব দেয়া হয়।

২০১৬ সালের শুরুর দিকে ভাস্কর্যটির নমুনা সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনকে দেখান ভাস্কর মৃণাল হক। সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি দেখে অনুমোদন দেয়ার পর গত ১৮ ডিসেম্বর কোর্টে মূল ভবনের সামনে ফোয়ারার মধ্যে এটি স্থাপন করা হয়। গত ২৪ ডিসেম্বর বিচার বিভাগীয় সম্মেলন ২০১৬ এর সাজসজ্জায় স্থান পায় ভাস্কর্যটি। মূল মঞ্চের দু’পাশে দুটি ভাস্কর্য বসানো হয়।

ভাস্কর মৃণাল হক সাংবাদিককের বলেন, অন্যান্য দেশে স্থাপিত ভাস্কর্যের সঙ্গে আমাদের দেশের ভাস্কর্যের একটু পার্থক্য রয়েছে। ভাস্কর্যের গায়ে স্কার্ফ পরা থাকলেও এখানে শাড়ি পরানো হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য দেশে পায়ের নিচে সাপ থাকলেও এখানে এটি বাদ দেয়া হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট ঘুরে দেখা যায়, সারাদেশ থেকে আগত বিচারপ্রার্থীরা আদালত অঙ্গনে এসে ভাস্কর্যটির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন। আবার অনেকে মোবাইল ক্যামারায় তুলে নিচ্ছেন ছবি।

এফএইচ/এসএইচএস/আরআইপি