ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায় প্রকাশ

প্রকাশিত: ১১:০২ এএম, ১৮ জানুয়ারি ২০১৭

সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায় মুফতি হান্নানসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দেয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে।

বুধবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৬৫ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়। রায়টি লিখেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। বেঞ্চের অপর তিন সদস্য বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।

রায়ে মুফতি হান্নান ছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি হলেন শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার ওরফে রিপন। এছাড়া হাইকোর্টে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল থাকা দুই আসামি মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ এবং মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দাল আপিল করেননি। ফলে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহালই থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

এর আগে গত ৭ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে তাদের করা আপিল খারিজ করে দেন। এই রায়ের ফলে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ চাঞ্চল্যকর অনেক মামলার আসামি হুজি নেতা মুফতি হান্নানকে দেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রথম কোনো মামলায় মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখল। এখন তিনি রিভিউ না করলে ফাঁসি কার্যকরে কোনো আইনগত বাধা থাকবে না। তবে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চেয়ে আবেদন করতে পারবেন মুফতি হান্নান।

আদালতে তিন আসামির পক্ষে আপিল শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ আলী ও হেলাল উদ্দিন মোল্লা। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে আপিল শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।

এর আগে গত ১৫ নভেম্বর এই মামলায় হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা মুফতি হান্নানসহ তিন আসামির করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে দুই সপ্তাহের মধ্যে আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দেয়ার নির্দেশ দেন আদালত। সেই আপিল শুনানি গত ৩০ নভেম্বর শুরু হয়, যা শেষ হয় ৬ ডিসেম্বর। শুনানি শেষে ৬ ডিসেম্বর আদালত রায়ের জন্য ৭ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করেন। সে অনুযায়ী ৭ জানুয়ারি তিনজনের মৃত্যুদণ্ডই বহাল রেখে রায় দেন আপিল বিভাগ।

মামলার বিবরণীতে জানা যায়, ২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এ হামলায় আনোয়ার চৌধুরী, সিলেট জেলা প্রশাসকসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন। নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন।

ঘটনার দিন অজ্ঞাতপরিচয় আসামির বিরুদ্ধে মামলা করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র প্রদান করা হলে ২০০৭ সালের ৩১ জুলাই মুফতি হান্নানসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর সম্পুরক অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দালের নাম অন্তর্ভুক্ত করে অভিযোগ গঠন করা হয়।

২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন ওরফে রিপনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত।

নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন করতে প্রয়োজনীয় নথি হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি ২০০৯ সালে আসামিরা জেল আপিলও করেন। প্রায় সাত বছর পর ২০১৬ সালের ৬ জানুয়ারি এ মামলায় হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়ে শেষ হয় ৩ ফেব্রুয়ারি। পরে বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল রেখে ১১ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। একই বছর ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়।
 
পরে একই বছর ১৩ জুলাই হাইকোর্টে দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে আপিল করেন মুফতি হান্নান ও শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল। তাদের সঙ্গে আদালত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি দেলোয়ার হোসেন রিপনের পক্ষে আইনজীবী নিযুক্ত করে একইসঙ্গে তিনজনের আপিল শুনেন আপিল বিভাগ। পরে সবার আপিল আবেদনই খারিজ করে দেন আদালত।  

এফএইচ/জেএইচ/আরআইপি

আরও পড়ুন