ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

বিচারকদের শৃঙ্খলা বিধি নিয়ে শুনানি আজ

প্রকাশিত: ১১:১১ পিএম, ১৪ জানুয়ারি ২০১৭

নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা-সংক্রান্ত বিধিমালার গেজেট প্রকাশের ওপর সুপ্রিম কোর্টের আপিল শুনানি আজ (১৫ জানুয়ারি)। এ মামলার শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কার্য তালিকার (কজলিস্ট) এক নম্বরে রয়েছে।

রোববার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার(এসকে)সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের আট সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
রাষ্ট্রপতি সিদ্ধান্ত দেয়ার পরদিনই ওই গেজেট দাখিলের জন্য আবারও সময় বেঁধে দিয়েছে আপিল বিভাগ। ওই দিন শুনানিতে আদালত বলেছে, রাষ্ট্রপতিকে এ বিষয়ে ভুল বোঝানো হয়েছে। পরে ১৫ জানুয়ারি গেজেট দাখিলের নতুন তারিখ ধার্য করা হয়।  

শুনানিতে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক আদালতের নির্দেশে ২ জানুয়ারি হাজির হন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানি করেন। তিনি গেজেট-সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে আদালতের কাছে দুই মাস সময়ের আবেদন করলে আদালত ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দেন আদালত।

এর আগে ১১ ডিসেম্বর আইন মন্ত্রণালয় থেকে এক নোটিস জানানো হয়, নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা-সংক্রান্ত বিধিমালার গেজেট প্রকাশের প্রয়োজন নেই বলে রাষ্ট্রপতি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।

এরপর আদালত বলেন, পার্লামেন্টারি সিস্টেমে রাষ্ট্রপতি নামমাত্র। যা আপনারা পাঠিয়েছেন তিনি তা-ই করবেন। আদালত বলেন, মাসদার হোসেন মামলার ৮০ শতাংশ রায় সরকার মেনে নিয়েছে। নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ-সংক্রান্ত বিধির এই খসড়া সরকার দিয়েছে। এটা ভুল বোঝাবুঝির বিষয় নয়। আমরা অনেক সময় দিয়েছি। আমরা এখান থেকে পিছু ফিরবো না।

শুনানির একপর্যায়ে আইন সচিব বলেন, আদালত যেভাবে বলবে সে ভাবেই হবে। পরে আদালত বিষয়টি ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করেন। গেজেট প্রকাশের জন্য এদিন পর্যন্ত সময় দেয়া হয়।

নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা-সংক্রান্ত বিধিমালার গেজেট প্রকাশের ক্ষেত্রে আদালতের কাছ থেকে কয়েক দফা সময় নিয়েছে সরকার। সর্বশেষ ১ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ গেজেট প্রকাশ করতে রাষ্ট্রপক্ষকে এক সপ্তাহ সময় দেন। এরপর নির্ধারিত তারিখেও গেজেট প্রণয়ন না হওয়ায় ৮ ডিসেম্বর আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিবকে তলব করে আদালত।  এ প্রেক্ষিতে তারা ২ জানুয়ারি আদালতে হাজির হন।

ইতিমধ্যে সরকার যে রুলস তৈরি করে পাঠিয়েছে তা সুপ্রিম কোর্টের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। কারণ মাসদার হোসেন মামলার রায়ের ১২ দফার মধ্যে ৭ম দফায় বলা আছে, বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য যে রুলস ফ্রেম করা হবে, তাতে শাসন বিভাগের চেয়ে বিচার বিভাগের মতামত প্রাধান্য পাবে।
১২ দফার মধ্যে ইতিমধ্যে বেশ কয়েক দফা বাস্তবায়ন করেছে সরকার। এ জন্য বারবার আদেশ দিতে হয়েছে আপিল বিভাগকে। এমনকি ২০০৪ সালে আদালত অবমাননার মামলাও করতে হয়েছে বাদী পক্ষকে। এরপর ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক ঘোষণা করে।

এ অবস্থায় ২০১৫ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগ চার সপ্তাহ সময় দেন সরকারকে। এরপর গত বছরের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় থেকে একটি খসড়া শৃংখলাবিধি তৈরি করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়। কিন্তু তা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে না হওয়ায় সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষ একটি কমিটি গঠন করে আলাদা একটি শৃংখলাবিধি তৈরি করেন। গত ২ জানুয়ারি সোমবার এ বিষয়ে আপিল বিভাগে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

অবশেষে ২০০৭ সালের ১০ জানুয়ারি আপিল বিভাগ বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ সংক্রান্ত চারটি বিধিমালা সাত দিনের মধ্যে গেজেট আকারে প্রকাশের নির্দেশ দেন। তবে এ সংক্রান্ত মামলাটি এখনও আপিল বিভাগে বিচারাধীন। ১২ দফা নির্দেশনার যেসব দফা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য তাগিদ চলছে।

এফএইচ/এএইচ