ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

মওদুদের বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলা আপাতত স্থগিত

প্রকাশিত: ০৫:৫৯ এএম, ১১ ডিসেম্বর ২০১৬

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত নাইকো দুর্নীতি মামলার কার্যক্রমে হাইকোর্টের দেয়া স্থগিতাদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।

আজ রোববার আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন। এ রায়ের ফলে তার বিরুদ্ধে মামলা আপাতত স্থগিত থাকছে।

এ মামলায় জারি করা রুল আগামী ১৯ জানুয়ারির মধ্যে নিষ্পত্তির আদেশ দিয়েছেন আদালত।  এ সময় পর্যন্ত মওদুদের বিরুদ্ধে এই মামলার কার্যক্রম চলবে না।

হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে দুদকের করা আবেদন শুনানি করে রোববার সকালে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।  আদালতে আজ আবেদনের পক্ষে মওদুদ আহমেদ নিজেই শুনানি করেন। অপরদিকে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
 
এর আগে, গত ১ ডিসেম্বর মওদুদের করা এক ফৌজদারী রিভিশন আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি শেখ আব্দুল আউয়াল ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ মওদুদের নাইকো মামলার কার্যক্রম ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে দুদক গত ৭ ডিসেম্বর লিভ টু আপিল করেন। সে দিনই চেম্বার বিচারপতি ১১ ডিসেম্বর শুনানির দিন ধার্য করে দুদকের আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।  

এর আগে মওদুদ আহমদ হাইকোর্টে রিভিশন আবেদনে উল্লেখ করেন, নাইকোর সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি নাইকো-বাপেক্স ও পেট্রো বাংলার মধ্যে ওয়াশিংটনের সালিশি আদালতে দুর্নীতির বিষয়টি বিচারাধীন রয়েছে। সালিশি আদালত চলতি বছর ১৯ জুলাই এক আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, ওই আদালতে বিষয়টি নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের আদালতে এ মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে।

ওয়াশিংটনের সালিশি আদালতের আদেশের প্রেক্ষিতে এই মামলা চলমান থাকায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন মামলাটি স্থগিত চান মওদুদ। নিম্ন আদালতে গত ১৬ আগস্ট মওদুদের সেই আবেদন খারিজ করে দেন। সেই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ফৌজদারী রিভিশন আবেদন করেন তিনি। আবেদনে ওয়াশিংটনের সালিশি আদালতের আদেশের কপি হাইকোর্টে তলবের আবেদনও করা হয়।

ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট মওদুদের মামলার কার্যক্রম ৮ সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। একইসঙ্গে নিম্ন আদালতে তার আবেদন খারিজ করে দেয়ার আদেশটি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। তবে এই স্থগিতাদেশ শুধু মওদুদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।

এর আগে গত ২৪ নভেম্বর একই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাইকো দুর্নীতি মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিট খারিজ করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। এর ফলে বিচারিক আদালতে এই মামলার কার্যক্রম চলতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন। ২০০৮ সালের ৫ মে এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। যেখানে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।

এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্স্’র সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

এফএইচ/এআরএস/এমএস