বিচার বিভাগ বাক্সবন্দি : প্রধান বিচারপতি
নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধি চূড়ান্ত না করায় আবারও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা। তিনি বলেছেন, আপনারা বলেছেন বিচার বিভাগ স্বাধীন; কিন্তু সবকিছু দেখছি বাক্সবন্দি। এভাবে বাক্সবন্দি করে রাখবেন এটা তো হবে না।
রোববার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের আট সদস্যের বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এসব কথা বলেন। পরে মামলার শুনানি মুলতবি করে মঙ্গলবার আবারো শুনানির দিন ধার্য করেন আপিল আদালত।
এ প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে উদ্দেশ্য করে প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনারা তো বলছেন বিচার বিভাগ স্বাধীন। কিন্তু সবকিছু তো দেখছি বাক্সবন্দি। আমাদের সর্বশেষ নির্দেশনার পর দু’মাস সময় চলে গেছে। এভাবে বাক্সবন্দি করে রাখবেন; এটা তো হতে পারে না।
বিধিমালা চূড়ান্ত হওয়ার বিষয়ে কোনো তথ্য আদালতকে জানাতে পারেননি অ্যাটর্নি জেনারেল। তবে তিনি সময় প্রার্থনা করেন। আপিল বিভাগ বিধিমালা চূড়ান্তের বিষয়ে কী পদক্ষেপ নিয়েছেন তা লিখিতভাবে জানাতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে সোমবার আবারো শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। এ সংক্রান্ত শুনানির এক পর্যায়ে বিচারপতি মো. আব্দুল ওয়াহহাব মিঞা বলেন, আপনারা যদি ধরেই নেন আবেদন করলে সময় দেব এটা দুভার্গ্যজনক।
১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর মাসদার হোসেন মামলায় ১২দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেয়া হয়। ওই রায়ের আলোকে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা ছিল। আপিল বিভাগের নির্দেশনার পর গত বছরের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় একটি খসড়া শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধি প্রস্তুত করে সুপ্রিমকোর্টে পাঠায়।
গত ২৮ আগষ্ট এই মামলার শুনানিতে আপিল বিভাগ জানান, শৃঙ্খলা বিধিমালা সংক্রান্ত সরকারের খসড়াটি ছিল ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার হুবহু অনুরূপ। যা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী। এরপরই সুপ্রিম কোর্ট একটি খসড়া বিধিমালা করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। একইসঙ্গে ৬ নভেম্বরের মধ্যে তা প্রণয়ন করে প্রতিবেদন আকারে আদালতকে অবহিত করতে আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়।
রোববার মামলাটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসে। প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের আট বিচারপতির বেঞ্চে (ল) আইনের বিষয়ে কোনো অগ্রগতি জানাতে পারেননি অ্যাটর্নি জেনারেল।
এফএইচ/এসআইএস