ডিএনসিসি মেয়র
নজর এখন তাবিথ আউয়ালের ওপর

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি হয় ঢাকার দুই সিটির নির্বাচন। সেই নির্বাচনে বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থী, তাবিথ আউয়াল আর ইশরাক হোসেন পরাজিত হন। ভোটে কারচুপি আর অনিয়মের অভিযোগ তুলে তারা মামলা করেন সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালে। দীর্ঘ ৫ বছর পেরিয়ে সেই মামলার রায়ের বদৌলতে মেয়র পদে বসতে যাচ্ছেন দক্ষিণ সিটির ইশরাক হোসেন। এর আগে একই কায়দায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হয়েছেন শাহাদাত হোসেন। ফলে এখন স্বাভাবিকভাবেই সবার নজর তাবিথ আউয়ারে ওপর। কেউ কেউ বলছেন, তাবিথ মেয়রের চেয়ারে বসা এখন কেবল সময়ের ব্যাপার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আদালতের রায় উত্তর সিটিতে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের পক্ষেই আসবে। সেটা হতে পারে ঈদুল ফিতরের পর পরই।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
সূত্র বলছে, অনিয়ম, দুর্নীতি, কারচুপি ও অগ্রহণযোগ্যতার অভিযোগে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে বিএনপির প্রার্থীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন দলের হাইকমান্ড। সে অনুযায়ী প্রার্থীরা মামলাও করেছিলেন। সে মামলার রায়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে আসীন হয়েছেন শাহাদাত হোসেন। পদে বসার পক্ষে রায় পেয়েছেন ইশরাক হোসেন। একই সময়ে যেহেতু তাবিথ আউয়ালও মামলা করেছিলেন এবং সেটিও চলমান, ফলে ঈদের পর যেকোনো দিন মামলার রায়ে তাবিথ আউয়ালও মেয়র হবেন। এটি এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা।
তাবিথ আউয়ালের আইনজীবী ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনের পর অনিয়মের অভিযোগ তুলে ২০২০ সালের ২ মার্চ নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন তাবিথ আউয়াল। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনের সামগ্রিক ফল বাতিল চাওয়া হয়। আদালতের অসহযোগিতার কারণে এতদিন মামলাটি শুনানি হয়নি। গত ৫ আগস্টের পর নতুন সরকারের সময়ে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় মামলাটির শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আবেদনের এতদিন পর মামলাটি এবার নিষ্পত্তির দিকে এগোচ্ছে। আমরা আশা করছি তাবিথ আউয়াল ন্যায়বিচার পাবেন।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
কবে নাগাদ শুনানি বা নিষ্পত্তি হতে পারে, জানতে চাইলে এহসানুর রহমান বলেন, ঈদের ছুটির পর আমরা চেষ্টা করবো শুনানির।
নির্বাচনে সন্তোষজনক সংখ্যক ভোটার ভোটকেন্দ্রে যাননি। যারা গেছেন, তারাও সঠিকভাবে ভোট দিতে পারেননি। নির্বাচন কমিশন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ভোট কারচুপি করে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামকে নির্বাচিত ঘোষণা করে- মামলার এজাহার থেকে
এ সংক্রান্ত বিষয়ে সাইবার ট্রাইব্যুনালের পিপি জাগো নিউজকে বলেন, দুটি সিটি করপোরেশন (ঢাকা দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম) নির্বাচনে একই অভিযোগ ছিল। ইভিএম জালিয়াতি হয়েছে, ভোট ডাকাতি, ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, ভোটকেন্দ্রে যেতে না দেওয়া এবং ফলাফল জালিয়াতির অভিযোগে তাদের মেয়র ঘোষণা করা হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনেও একই অভিযোগে মামলা চলছে। তাই এখানেও একই রায় আসবে বলে আশা করছি।
বিজ্ঞাপন
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা ও উত্তর সিটি করপোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলামসহ আটজনকে বিবাদী করে করা মামলায় তাবিথ আউয়াল উল্লেখ করেছিলেন, গত ১ ফেব্রুয়ারি (২০২০) অনুষ্ঠিত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সন্তোষজনক সংখ্যক ভোটার ভোটকেন্দ্রে যাননি। যারা গেছেন, তারাও সঠিকভাবে ভোট দিতে পারেননি। নির্বাচন কমিশন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ভোট কারচুপি করে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামকে নির্বাচিত ঘোষণা করে।
২০২৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে করা তাবিথের মামলা চলার আদেশ দেন হাইকোর্ট। তাবিথ আউয়ালের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার অনীক আর হক তখন জানান, নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হয়। নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগে তাবিথ আউয়াল নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। তবে (বর্তমান গ্রেফতার হয়ে কারাগারে) নির্বাচিত মেয়র আতিকুল ইসলাম একটি আবেদন করে বলেন, সেখানে মামলাটি চলতে পারে না। পরে ট্রাইব্যুনাল তাদের আবেদনটি খারিজ করে দিলে তারা হাইকোর্টে আবেদন করেন। হাইকোর্ট শুনানি শেষে বলেছেন, ইভিএমে কারচুপির বিষয়ে ট্রাইব্যুনালে সিদ্ধান্ত হবে। অবিলম্বে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মামলাটি এখন নিম্ন আদালতে চলমান।
বিজ্ঞাপন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক নেতা জাগো নিউজকে বলেন, সবাই জানে কীভাবে জোর খাটিয়ে আওয়ামী লীগ সিটি করপোরেশন নির্বাচন করেছে। দিনের ভোট রাতে করে ফলাফল ডাকাতি করেছে। আদালতের রায়ে প্রমাণ হয়েছে আওয়ামী লীগ জোর করে নির্বাচনের ফলাফল ছিনিয়ে নিয়েছে। এ জন্যই বিএনপির প্রার্থীদের মেয়র ঘোষণা করা হয়েছে। তাবিথ আউয়ালকেও অচিরেই মেয়র হিসেবে ঘোষণা দেওয়া বলে আশাবাদী।
এফএইচ/এমএইচআর/জেআইএম
বিজ্ঞাপন