স্বপ্ন আজ সত্যি হলো!
সবারই স্বপ্ন থাকে পড়াশোনা শেষে চাকরি করার। পড়াশোনা শেষে কাঙ্ক্ষিত বস্তুটির দেখা পেলেই হয়ে গেলো স্বপ্ন পূরণ। আর সেই স্বপ্ন পূরণে চোখেমুখে ফুটে ওঠে আনন্দের ঝিলিক। ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধু-বান্ধবের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস।
বলছিলাম সোনিয়া, রিপা ও রোজিনার কথা। জাগো নিউজ কার্যালয়ে কথা হয়েছিলো তাদের সঙ্গে। শুধু তারা তিনজনই নন; তাদের সঙ্গে সফলতার সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠেছেন আরো ১২০ জন নারী। সেই ১২০ জনের মধ্যে এক বিকেলে এই তিনজনের সঙ্গে আলাপ হয় তাদের স্বপ্ন, সাধনা ও সফলতা নিয়ে।
তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে বিটাক ও আরএফএল গ্রুপ। বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের (বিটাক) উদ্যোগে ৩০৬ জন নারীকে তিন মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। সেখান থেকে ১২০ জন নারীকে ‘অ্যাসিস্ট্যান্ট অপারেটর’ পদে নিয়োগপত্র দিয়েছে বাংলাদেশের অন্যতম বহুজাতিক শিল্প প্রতিষ্ঠান আরএফএল গ্রুপ। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বিটাক মিলনায়তনে ২৬তম ব্যাচের সনদপত্র ও নিয়োগপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে ওই ১২০ জন নারীর হাতে নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়।
চাকরি পাওয়ার পর অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে সোনিয়া আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি বিটাক আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করি। তিন মাসব্যাপী কর্মশালা শেষে দেশের একটি বড় কোম্পানির নিয়োগপত্র পেয়েছি। এটা আমার জন্য খুবই আনন্দের। আমি এক সময় চাকরি করার স্বপ্ন দেখতাম। আজ বিটাকের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সফলতার দেখা পেলাম।’
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘নিজে সাবলম্বী হতে চাই। পাশাপাশি পরিবারকেও সাহায্য করতে চাই। দেশের মানুষের যেন উপকার করতে পারি। সবচেয়ে বড় কথা, আমার দায়িত্ব যেন সঠিক ভাবে পালন করতে পারি।’
সোনিয়ার গ্রামের বাড়ি নরসিংদী জেলায়। বাবা চাকরিজীবী ও মা গৃহিণী। দুই বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সোনিয়া সবার ছোট।
অপর ভাগ্যবতী রোজিনা আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, ‘অনেকে পড়াশোনা শেষ করেও চাকরি পান না। অথচ আমি এইচএসসি পাস করে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এতো বড় কোম্পানিতে চাকরি পেলাম। সত্যিই আমি ভাগ্যবতী।’
চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সারা দেশে চাকরি যেখানে সোনার হরিণ; সেখানে এমন ভাবে চাকরি পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। আমি বিটাক ও আরএফএল গ্রুপের কাছে সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো। তবে তাদের মতো সব প্রতিষ্ঠানই যদি এমন উদ্যোগ নিতো তাহলে দেশে বেকারের সংখ্যা কমে যেত।’
রোজিনার বাবা একজন ব্যবসায়ী। মা গৃহিণী। তার গ্রামের বাড়ি গাজীপুর জেলার কাপাসিয়ায়। চার বোন তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি ৬ষ্ঠ। ২০১৪ সালে এসএসসি পাস করেন।
চাকরি পাওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে রিপা আক্তার জাগো নিউজে বলেন, ‘এইচএসসি শেষ করেই যে চাকরি পেয়ে যাবো তা ভাবিনি। তাই চাকরিটা পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবতীই মনে হচ্ছে। প্রশিক্ষণ শেষ হতেই নিয়োগপত্র পেয়ে গেলাম, খুবই আনন্দ লাগছে।’
যারা বিটাকের প্রশিক্ষণ নিতে চান তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘গতানুগতিক শিক্ষার চেয়ে আমার মনে হয় কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব অনেক বেশি। তাই যারা বিটাকের প্রশিক্ষণে আসতে চান, দ্বিধা না করে চলে আসুন। তাহলেই আপনারা দারিদ্র্য কাটিয়ে উঠতে পারবেন।’
রিপার বাবা একজন কৃষক। মা গৃহিণী। রিপার গ্রামের বাড়ি নরসিংদী জেলার মনোহরদী। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। তাই তার দায়িত্বটাও বেশি।
এসইউ/এবিএস