ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাগো জবস

ইন্টারভিউ বোর্ডে ভয় কাটাবেন কীভাবে

প্রকাশিত: ০২:১৯ এএম, ০২ মার্চ ২০১৬

ইন্টারভিউ দিতে গেলে অনেকেরই ভয়ে হাত, পা ও বুক কাঁপে। তবে এটাকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ভয় থেকে পরিত্রাণের সমাধানও রয়েছে। আসুন এ পর্বে ভয় কাটানোর উপায়গুলো জেনে নেই।

ভয় কাটানোর উপায়
আপনি এসেছেন ইন্টারভিউ দিতে, কিন্তু মন আপনার অন্যদিকে। সব নেগেটিভ চিন্তা যখন আপনার মাথায় আসে, টেনশন তো হবেই। এখন কী কী করা যেতে পারে এই ভয় দূর করতে? সমস্যা অনুযায়ী সমাধানগুলো পর্যায়ক্রমে দেওয়া হল-

১. দৃষ্টিনন্দন সিভি তৈরি করুন। সিভি, লিঙ্কডইন আপডেট রাখুন। সঠিকভাবে আবেদন করুন। ভালো সিভি থাকলে আপনি বেশ ঘনঘন ইন্টারভিউ কল পাবেন। তখন নিজেকে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী মনে হবে। টেনশন কাজ করবে না। অর্ধেক টেনশন আপনার এখানেই শেষ।

২. আপনি একটি ইন্টারভিউ দিতে এসেছেন। চাকরির জন্যে তারা যেমন লোক খুঁজছে, নিজেকে তেমন লোক হিসেবে তাদের সামনে প্রমাণ করতে হবে। পরীক্ষায় ফেল করলে কী হবে, সেটা কি পরীক্ষার হলে বসে ভাবলে হবে? যে কাজে এসেছেন সেটা ভালোভাবে করুন। ইন্টারভিউয়ের দিকে মনযোগ দিন। অন্য চিন্তা নয়।

৩. মনে রাখবেন, বাংলায় প্রশ্ন করলে বাংলায়, ইংরেজিতে প্রশ্ন করলে ইংরেজিতে উত্তর দিবেন। যদি মনে করেন, আপনার ইংরেজি জ্ঞান অতো ভালো না, সেক্ষেত্রে রিক্রুইটারের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে বাংলায় কথা বলবেন। ভুল ইংরেজি বলবেন না। প্রশ্নের সাবলীল উত্তর দিবেন।

৪. আপনার রেজাল্ট, গ্যাপ, সেক্টর চেঞ্জ ইত্যাদি কিন্তু আপনার সিভিতে ছিলো। তবুও আপনাকে ডাকা হয়েছে। তার মানে, এসব বিষয় জেনেই ডাকা হয়েছে। যখন আপনাকে ডেকেই ফেলেছে, তখন আর এসব নিয়ে টেনশন কেন? এখন শুধু সিভিতে যা লিখেছেন, সেগুলোর ডিফেন্স দিবেন।

৫. বিজ্ঞপ্তিতে ১০টি কাজ বলা আছে। আপনি ২টি পারেন না। আপনি ৮টি কাজ পারেন, এই মনোবল দিয়ে কি ২টি কাজ না পারার টেনশন দূর করা যায় না? যা জানেন সেটা ফোকাস করুন। যে দুটি কাজ জানেন না, ওগুলো যোগদানের পর এক মাসেই শেখা হয়ে যাবে। নয়তো ট্রেনিং করে শিখে নিবেন। যাদের একটু দুর্বলতা আছে, তারা বারবার কমন ইন্টারভিউয়ের উত্তরগুলো পড়ুন।

৬. টেনশনের ৫টি স্তর পার করে এসে কি আপনি বসের ভয়ে আটকে যাবেন? নিশ্চয়ই না। কি করবেন তাহলে? আপনার বসের দিকে তাকান। এবার আবার নিজের দিকে তাকান। টেনশন কেন? আপনার বসও তো মানুষ। ভয়ের কিছু নেই। ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছেন, চুরি করতে তো আর যাচ্ছেন না? ফোন নিরব রাখুন, এক ঘণ্টা অফিস থেকে বিচ্ছিন্ন। পরে এক ঘণ্টা কাজ করে পুষিয়ে দিবেন।

৭. অনেকে ইন্টারভিউ দিতে এসেও অফিসের কর্মকাণ্ড নিয়ে মাথা গরম করে ফেলেন, ফোনের পর ফোন। কিন্তু ইন্টারভিউ বোর্ডের সামনে টেনশন। মনে রাখবেন, আপনি কোনটিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে আপনার ব্যস্ততা। অনেকে হয়তো বলবেন রেস্পন্সিবিলিটি। এতোই যদি রেস্পন্সিবল হবেন তাহলে ইন্টারভিউ দিতে এসেছেন কেন? এক ঘণ্টার জন্য নিজেকে এসব টেনশন থেকে দূরে রাখুন। আপনি ইন্টারভিউয়ের দিকে ফোকাস করুন।

৮. লিঙ্ক না থাকলে চাকরি হবে না, এমন ধারণা তরুণদের মধ্যে। কিন্তু কিছু নেগেটিভ রেফারেন্স টেনে টেনশন করে লাভ নেই। অনেক ভালো রেফারেন্সও আছে। আড়াই ফিট লোক চাকরি পেয়েছে, অন্ধ লোক চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হয়েছেন। এরকম কত উদাহরণ আছে। টেনশন একটি মানসিক সমস্যা। তাই সর্বদা পজিটিভ থাকুন। আপনাকে নেয়ার সম্ভাবনা আছে বলেই তো ডেকেছে। সুতরাং নেগেটিভ চিন্তা করবেন না।

৯. কোনো প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকলে সাবলীল ভাবে বলুন, যে আপনি এটি জানেন না। রিক্রুইটার পরের প্রশ্নে চলে যাবেন। ভুল উত্তর করে, সেটাকে আবার প্যাচাতে গেলে নিজেই শেষ পর্যন্ত প্যাচে পড়ে যাবেন। মিথ্যা বলবেন না। মানুষ যখন মিথ্যা বলে, তখন ঘেমে যায়, টেনশন বাড়ে।   

১০. ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে বর্তমান কোম্পানির কোনো গোপন তথ্য বলবেন না। এতে আপনাকে বিশ্বাসঘাতক ভাববে। ইন্টারভিউ দিতে একটু আগেই পৌঁছান। সময় হাতে নিয়ে রওনা দিন। গেট আপ চেক করুন। রিলেটেড কাগজপত্র ও কলম আগের দিনই গুছিয়ে নিন। টেনশনমুক্ত থাকতে পারবেন। হাসিমুখে কথা বলুন। আই কন্টাক্ট ঠিক রাখুন। শেষ মুহূর্তে কাজ করার বাজে অভ্যাস ত্যাগ করুন। যেটা করার সেটা এখনই করার অভ্যাস করুন।
 
এছাড়া যারা স্কাইপির মাধ্যমে ইন্টারভিউ দিবেন, তারা তাদের স্কাইপি সংযোগ, মডেমে টাকা আছে কিনা সেগুলো আগে থেকে দেখে প্রিপারেশন নিন। এগুলো টেনশন বাড়ায়। ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে অপেক্ষা করতে হয়, তখন টেনশন বাড়ে। তাই তখন কাজের বিবরণী ও আপনার নিজের কাজ সম্পর্কে ভাবুন। কেউ ইন্টারভিউ দিয়ে বেরোলে তাকে কিছু জিজ্ঞেস করবেন না। এর চেয়ে বেশি আপনি জানেন। ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার আগের দিন পর্যাপ্ত ঘুমাবেন, সেভ করবেন। বিশ্রাম নিবেন। ভালো পারফিউম লাগাবেন। নার্ভে চাপ পড়লে টয়লেট যাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। তাই বাসা থেকে ভালো ভাবে ফ্রেস হয়ে বের হবেন।

পরিশেষে, নিজেকে দক্ষভাবে উপস্থাপন করতে প্রাকটিসের বিকল্প নেই। সকলের গতি এক নয়। আপনি না হয় একটু দুর্বল। দুই দিন বাড়তি প্রাকটিস করুন।

লেখক : ট্রেইনার ও প্রফেশনাল সিভি রাইটার, চিফ নলেজ ডিস্ট্রিবিউটর, কর্পোরেট আস্ক বাংলাদেশ।

এসইউ/পিআর

আরও পড়ুন