ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাগো জবস

এসআই লিখিত পরীক্ষায় ভালো করার উপায়

জাগো নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ১২:৫০ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০২১

দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রথম সারির যোদ্ধা হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ সব সময় নিয়োজিত। আর সাব-ইন্সপেক্টরকে (এসআই) বাংলাদেশ পুলিশের মেরুদণ্ড বলা হয়। এরই মধ্যে ৩৯তম ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই নিরস্ত্র) পদে নিয়োগ পরীক্ষার শারীরিক মাপ, কাগজপত্র যাচাইকরণসহ শারীরিক সক্ষমতা যাচাই সম্পন্ন হয়েছে। শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণরাই কেবল লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন।

আগামী ৮-১০ জানুয়ারি পর্যন্ত এসআই নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিযোগিতাপূর্ণ এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভালো নম্বর পেতে হলে পরিকল্পনামাফিক প্রস্তুতি নিতে হবে। ৩৯তম সাব-ইন্সপেক্টর পদে লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে লিখেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও ৩৮তম ব্যাচের ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর মো. শরীফুল ইসলাম রাহাত। অনুলিখন শাবিপ্রবি প্রতিনিধি মোয়াজ্জেম আফরান

লিখিত পরীক্ষার বিষয়সমূহ: মোট ৫টি বিষয়ে (বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান ও মানসিক দক্ষতা) লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি বিষয়ে ৫০ নম্বর করে মোট ২৫০ নম্বর থাকবে। প্রতিটি বিষয়ে পৃথকভাবে ৫০% নম্বর পেয়ে পাস করতে হবে। লিখিত পরীক্ষায় ভালো করলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর পথ অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। মনে রাখতে হবে, কেউ ৫০% নম্বর পেয়ে পাস করবে আবার কেউ ৭০-৮০% নম্বর পেয়েও পাস করবে। তাই প্রতিযোগিতামূলক এ পরীক্ষায় টিকে থাকতে হলে লিখিত পরীক্ষায় ভালো করার কোনো বিকল্প নেই। লিখিত পরীক্ষার পরবর্তী ধাপ ভাইবা। ভাইবায় বেশিরভাগই গড় নম্বর পেয়ে থাকেন। এজন্য ভাইবায় নম্বরের তেমন একটি ব্যবধান গড়া যায় না। সুতরাং লিখিত পরীক্ষায় ভালো করতে পারলে নিঃসন্দেহে অন্যদের তুলনায় এগিয়ে থাকা সম্ভব হবে। যাক, এবার বিষয়ভিত্তিক কিছু পরামর্শ রইল—

বাংলা: বাংলায় মূলত রচনা, ভাব সম্প্রসারণ, চিঠি বা দরখাস্ত, ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ, বাগধারা, এককথায় প্রকাশ—এসব বিষয়ে প্রশ্ন থাকে। বিগত বছরের প্রশ্নগুলো দেখে একটি ভালো ধারণা নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো সম্পর্কে বিভিন্ন বই থেকে বিস্তারিত পড়তে হবে। এক্ষেত্রে নবম-দশম শ্রেণির বোর্ড বই গুরুত্বপূর্ণ। রচনার ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা, করোনাকাল ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকা, ভিশন-২০৪১, জলবায়ু বিষয়ক সর্বশেষ সম্মেলনের ফলাফল—এসব বিষয়ে ভালো ধারণা রাখতে হবে। পরীক্ষায় সময় যেহেতু স্বল্প সুতরাং অনুবাদ নিয়ে অতিরিক্ত ভয় পাবার কিংবা অনুবাদে বাড়তি সময় নিয়ে উত্তর করার কোনো প্রয়োজন নেই বলে মনে করি। অনুবাদ মোটামুটি সহজই থাকে, যা সবাই কমবেশি উত্তর দিতে পারে। তবে অনুবাদের ক্ষেত্রে শাব্দিক অনুবাদ না করে ভাবানুবাদ করলে ভালো নম্বর পাওয়ার সুযোগ থাকে।

ইংরেজি: ইংরেজিতে যারা দক্ষ; তারা ইংরেজিতে অনায়াসেই ভালো নম্বর তুলতে পারবে। মূলত ইংরেজিতে রচনা, অনুচ্ছেদ, বাংলা থেকে ইংরেজি অনুবাদ, আবেদনপত্র, প্রিপোজিশন, ফ্রেজ অ্যান্ড ইডিয়মস থেকে প্রশ্ন থাকে। প্রথমে বিগত বছরের প্রশ্নগুলো দেখে একটি প্রাথমিক ধারণা নিতে হবে। তারপর এ ধারণা নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করলে প্রশ্নের ধরন সহজেই বুঝতে সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।

রচনার ক্ষেত্রে The impact of ICT in our daily life, Global warming and its migration measures, Consequences of climate change on the future of Bangladesh, Covid-19 and the rule of Bangladesh police, Liberation war and Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman, 50 years of Independence—বিষয়গুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখা প্রয়োজন। আর বাংলা থেকে ইংরেজি অনুবাদের ক্ষেত্রে অনুচ্ছেদকে ছোট ছোট বাক্য আকারে ইংরেজিতে অনুবাদ করে মোটামুটি বুঝিয়ে দিতে পারলেই চলবে। আবেদনপত্র লেখার ক্ষেত্রে যে ছয়টি বিষয় বা নিয়ম রয়েছে; সেগুলো ঠিক রেখে সহজ ভাষায় উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। মনে রাখতে হবে, রচনা কিংবা অনুবাদ লেখার ক্ষেত্রে ব্যাকরণগত ছোট-খাটো ভুল তেমন বিবেচ্য নয়। সুতরাং ব্যাকরণগত ভুল নিয়ে বাড়তি চিন্তা না করাই ভালো।

সাধারণ জ্ঞান: সাধারণ জ্ঞানের নির্দিষ্ট কোনো সিলেবাস নেই। তবে এরই মধ্যে যারা বিসিএস বা অন্যান্য সরকারি চাকরির পরীক্ষার ভালো প্রস্তুতি নিয়েছেন, তাদের সাধারণ জ্ঞানের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ভীতি বা পরিকল্পনার প্রয়োজন নেই বলে মনে করি।

সাধারণ জ্ঞান প্রশ্নে প্রথমে ৫-১০টি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন থাকে, তারপর টীকা থাকার সম্ভাবনা থাকে ৫টি। যেমন- ICDDRB, MDG, CTTC, ব্লু-ইকোনমি, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, বোকো হারাম, কমিউনিটি পুলিশিং, ইন্টারপোল ইত্যাদি। সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন বা টীকা একই ধরনের কেবল প্রশ্ন নম্বর আর টার্মটাই ভিন্ন থাকে। আর বড় প্রশ্নের ক্ষেত্রে সমসাময়িক ঘটনা ও বিষয়গুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে। যেমন- কোভিড-১৯ ও বিশ্ব অর্থনীতি, করোনায় বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকা, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মেগা প্রকল্প, বর্তমান সরকারের অর্জন, জিআই পণ্য, আফগানিস্তান ইস্যু, সর্বশেষ জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলন—এসব বিষয় সম্পর্কে অবশ্যই ভালো ধারণা রাখতে হবে।

গণিত: লিখিত পরীক্ষায় এগিয়ে থাকতে চাইলে গণিতে পূর্ণ নম্বর পাওয়ার বিকল্প নেই। অনেকেই গণিতে পূর্ণ নম্বর পেয়ে থাকেন। বিগত বছরগুলোয় যদিও পাটি গণিত (সুদ-কষা, সরল মুনাফা, লাভ-ক্ষতি, সরল, নৌকার স্রোত, ঐকিক নিয়ম, কাজ-দূরত্ব, সময় ইত্যাদি) থেকেই ৫০ নম্বর থাকতো। কিন্তু এবার বীজ গণিত থেকেও প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা আছে। তাই পাটি গণিতের পাশাপাশি বীজ গণিতে টুকটাক প্রস্তুতি রাখা ভালো।

মানসিক দক্ষতা: লিখিত পরীক্ষার মধ্যে মানসিক দক্ষতা পরীক্ষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মানসিক দক্ষতা পরীক্ষার উত্তরপত্র প্রথমে মূল্যায়ন করা হয়। কেবল মানসিক দক্ষতায় কেউ পাস করলেই তার বাকি ৪টি পরীক্ষার উত্তরপত্র দেখা হয়। সুতরাং ৪টি বিষয়ে যত ভালোই পরীক্ষা হোক না কেন, মানসিক দক্ষতায় অকৃতকার্য হলে এসআই হওয়ার স্বপ্ন এখানেই শেষ! মানসিক দক্ষতা মূলত কমনসেন্সের বিষয়। প্রশ্নপত্র পাওয়ার পর ধীরে সুস্থে পুরো প্রশ্নটি ভালোভাবে পড়ে নিতে হবে এবং উত্তর কী হতে পারে তা জেনে-বুঝে লিখতে হবে।

মানসিক দক্ষতার নির্দিষ্ট কোনো সিলেবাস নেই। তাই এরই মধ্যে যারা বিসিএস বা অন্যান্য সরকারি চাকরির ভালো প্রস্তুতি নিয়েছেন, তাদের জন্য আলাদা করে পরিকল্পনা সাজানোর প্রয়োজন নেই বলে মনে করি। বিগত বছরগুলোয় মানসিক দক্ষতায় যদিও ২৫ নম্বরের প্রশ্ন হতো কিন্তু এ বছর মানসিক দক্ষতার উপর ৫০ নম্বরের প্রশ্ন হবে।

মানসিক দক্ষতার ক্ষেত্রে ভাষাগত যৌক্তিক বিচার, সাদৃশ্য বিচার, অসম্ভাব্যতা, রক্তের সম্পর্ক নির্ণয়, গাণিতিক সমস্যা নির্ণয়, বানান, যান্ত্রিক দক্ষতা, চিত্র বিষয়ক সমস্যা, আয়নায় ঘুড়ির প্রতিচ্ছবি নির্ণয়, দিক নির্ণয় প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে।

এসইউ/জিকেএস

আরও পড়ুন