ফারিয়াস মিররের এগিয়ে চলার গল্প
ফেসবুক বর্তমানে তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য সম্ভাবনাময় প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছে। যা আগামী দিনের অর্থনীতিতে বিশাল ভূমিকা পালন করবে। আর এ ফেসবুকের মাধ্যমে নারীরা নিজস্ব ব্র্যান্ড তৈরি করতে পেরেছেন। ক্রমাগত তারা আত্মনির্ভরশীল হচ্ছেন। তেমনই একজন আত্মনির্ভরশীল নারী হলেন নাসরিন আক্তার ফারিয়া।
ফারিয়া একজন বিউটি অ্যান্ড লাইফস্টাইল ব্লগার, সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার এবং বাংলাদেশের অনলাইন ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির পরিচিত নাম। তিনি ফারিয়াস মিররের প্রতিষ্ঠাতা। যা বাংলাদেশের নারীদের একটি বড় কমিউনিটি তৈরি করেছে। এর ফলোয়ার এখন প্রায় ৯ লাখ।
তিনি মূলত সোশ্যাল মিডিয়ায় স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের অ্যাম্বাসেডর এবং প্রমোটার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। ব্যক্তিজীবনে তিনি দুই মেয়ের মা। সংসারের পাশাপাশি তিনি বহুমুখী সামাজিক কাজেও নিযুক্ত। কেননা ছোটবেলা থেকেই তার ইচ্ছে ছিল সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার।
উচ্চ মাধ্যমিকে পড়া অবস্থায় তিনি প্রথম মেয়েকে গর্ভে ধারণ করেন। তবে তিনি পড়াশোনার ব্যাপারে সব সময় আশাবাদী ছিলেন। তাই তো ছোট্ট কন্যাশিশুকে কোলে নিয়ে সেন্ট্রাল উইমেন কলেজে ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে ভর্তি হন।
এ চ্যালেঞ্জিং সময়কে জয় করতে তার পরিবার সব সময় সমর্থন দিয়েছে। এ যাত্রায় সব সময় পাশে ছিলেন তার স্বামী। পড়াশোনা শেষ করার পর কন্যাশিশুদের কারণে বাইরের কাজে মনোনিবেশ করতে পারতেন না। এ সময় তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় বিউটি অ্যান্ড লাইফস্টাইল গ্রুপগুলোয় খুব সক্রিয় থাকতেন। যেখানে তিনি ব্যক্তিগত চিন্তা-ভাবনা ও দৈনন্দিন কার্যকলাপ শেয়ার করতেন। এভাবে তিনি অফুরন্ত প্রচেষ্টা ও নিষ্ঠার কারণে গ্রুপগুলো থেকে ব্যাপক সাড়া পেতেন।
এক সময় তিনি শুভাকাঙ্ক্ষীদের সাথে যোগাযোগের জন্য একটি গ্রুপ খোলার কথা ভাবেন। তার প্রথম গ্রুপের নাম দেন ‘ডিভাইন ডিভাস’। পেজটিতে তার জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। এ জনপ্রিয়তা তাকে ইনফ্লুয়েন্সার হওয়ার প্রেরণা জাগায়। তখন তিনি আরেকটি পেজ ‘ফারিয়াস মিরর’ খোলেন। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
নিজের প্রচেষ্টায় তিনি এখন ‘মেকআপ ব্লসম বাই ফারিয়া’, ‘ডিভাইন ডিভাস’ এবং ‘ফারিয়াস মিরর’র মতো বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের গর্বিত মালিক। এরপরও ছোটবেলা থেকে মেকআপের প্রতি ঝোঁক ছিল। যে কারণে বিভিন্ন সময়ে কিছু ইন্টারন্যাশনাল মেকআপ কোর্স করেন। এতে তিনি বিউটি ব্লগার হিসেবে বিভিন্ন মেকআপ ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ শুরু করেন। ধীরে ধীরে ফ্যাশন ব্লগার হয়ে বিউটি অ্যান্ড লাইফস্টাইল ব্লগিংয়ের দিকে ক্যরিয়ার এগিয়ে যায়।
এখন তিনি ৭-৮টি ব্র্যান্ডের অ্যাম্বাসেডর হিসেবে কাজ করছেন। বিখ্যাত সব লাইফস্টাইল, পোশাক, ফ্যাশন এবং ডায়মন্ড জুয়েলারি ব্র্যান্ডের জন্য কাজ করেন। গত ২-৩ বছরে তিনি অসংখ্য ব্র্যান্ডের জন্য কাজ করেছেন। যার মধ্যে বিখ্যাত আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডও আছে।
নাসরিন আক্তার ফারিয়া বলেন, ‘এটি সত্যিই স্বর্গীয় অনুভূতি একজন ইনফ্লুয়েন্সারের জন্য। যখন কোনো উদ্যোক্তার পেজকে মানুষের কাছে তুলে ধরি; তখন তাদের ব্যবসায়ীক পরিধি আরও বেড়ে যায়। এতে অতিরিক্ত আয়ের সুযোগ হয়। তাই দেশে অনলাইন বাণিজ্যিক পরিস্থিতি আরও ভালো করার জন্য কাজ করে যেতে চাই।’
এসইউ/এএসএম