১০ লাখ টাকার টি-শার্ট বিক্রি করেন মনোয়ার
আজকাল টি-শার্টের ব্যবসা দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে খুব অল্প পুঁজি দিয়েই শুরু করা যায় বলে অনেক তরুণ এ ব্যবসায় আগ্রহ দেখাচ্ছেন। অনেকে উদ্যোক্তা হয়ে সফলতাও পাচ্ছেন। এমনই এক সফল তরুণ উদ্যোক্তার গল্প বলবো আজ যিনি টি-শার্টের ব্যবসা করে সফল হয়েছেন মাত্র এক বছরে।
পাবনা জেলার রামচন্দ্রপুরের সন্তান মনোয়ার হোসেন। বাবা মো. আনোয়ার হোসেন ব্যবসায়ী, মা মনোয়ারা বেগম গৃহিণী। মনোয়ার পড়ালেখা করছেন পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। টেক্সটাইল বিভাগে সপ্তম সেমিস্টারের ছাত্র। ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান মনোয়ার বাবার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা নিয়ে ৫ জন কারিগরকে সাথে নিয়ে টি-শার্টের কারখানা দেন ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে।
তার উৎপাদিত টি-শার্ট (গেঞ্জি) পাবনার স্থানীয় বাজারে পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করে থাকেন। পরে তিনি অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করার জন্য ই-কমার্স ওয়েবসাইট খোলেন। অনলাইন ও ফেসবুক পেজের মাধ্যমে সারাদেশে টি-শার্টগুলো ছড়িয়ে দেন। অনলাইনেও পাইকারি-খুচরা বিক্রি করে থাকেন। তার ই-কমার্স ওয়েবসাইট টুলপো ডটকম ও ফেসবুক পেজ মনোয়ার হোসেন টি-শার্ট হাউজ।
মনোয়ার হোসেন ব্যবসায় ভিন্নতা আনতে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী কাস্টমাইজ টি-শার্টেরও অর্ডার নেন পেজের মাধ্যমে। এরপর চাহিদা অনুযায়ী ডিজাইন করে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেন। মনোয়ার নিজেই ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী ডিজাইন করে থাকেন। এতে গ্রাফিক্স ডিজাইনের জন্য অতিরিক্ত খরচ হয় না। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই মনোয়ারের ই-কমার্স সাইট আলোচিত হয়।
মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘দিনদিন পোশাক-পরিচ্ছদের পরিবর্তন ঘটেছে। আজকাল ছেলে-মেয়েরা অনেক ধরনের পোশাক পরেন। ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও টি-শার্ট পরেন। যতই দিন যাচ্ছে; ততই টি-শার্টের চাহিদা বাড়ছে। তাই টি-শার্টের কারখানা দেই। টি-শার্টের ব্যবসা স্মার্ট ব্যবসা। কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না। কম পুঁজিতে, কম সময়েই লাভের মুখ দেখা যায়। আমি ২ লাখ টাকা পুঁজি খাটিয়ে মাত্র এক বছরে প্রায় ১০ লাখ টাকার টি-শার্ট বিক্রি করি।’
মনোয়ার হোসেনের বাবা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলে ব্যবসা করার টাকা চাইলে আমি প্রথমে সম্মতি দেইনি। ভেবেছি নষ্ট করে না-কি? এসব নানা রকমের চিন্তা হতো। তবে তার ব্যবসার ধরনের কথা শুনে মনে হলো টাকা দেই। আল্লাহর রহমতে মাত্র এক বছরে সেই টাকা দিয়ে ব্যবসা করে সফল হয়েছে। সে এ পর্যন্ত ১০ লাখ টাকার গেঞ্জি বিক্রি করেছে।’
মনোয়ারের ইচ্ছা তার কারখানার পণ্য একসময় বিদেশেও রফতানি হবে। তিনি মনে করেন, ধৈর্য আর পরিশ্রম করলেই সফল হওয়া যায়। পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের একটা কারখানা দাঁড় করাতে পেরে অনেক খুশি মনোয়ার। তার মাধ্যমে আরও পাঁচ জনের কর্মসংস্থান হওয়ায় মনোয়ার নিজেকে গর্বিত মনে করেন।
তার ইচ্ছা, কারখানা একদিন আরও বড় হবে। অনেক লোকের কর্মসংস্থান হবে। তরুণদের প্রতি মনোয়ারের উপদেশ, দেশের শিক্ষিত তরুণরা যেন পড়াশোনার পাশাপাশি কম পুঁজিতে কিছু একটা করেন। তাহলেই দেশের অর্থনীতির চাকা সচল হবে। বাংলাদেশ অর্থনীতিতে স্বনির্ভর হবে।
লেখক: ফিচার লেখক ও গণমাধ্যমকর্মী।
এসইউ/এমকেএইচ