করোনাকালে আশা জাগায় রেজওয়ানুল হকের উদ্যোগ
ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নিয়ে কাজ করেন সৈয়দ রেজওয়ানুল হক। উদ্যোক্তা জীবনে তিনি সফল সিদ্ধান্ত নেওয়ার সেরা মানসিকতার কারণে। তার প্রতিষ্ঠান টেকনেক্সট লিমিটেড। সম্প্রতি জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন তার উদ্যোগ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বেনজির আবরার—
জাগো নিউজ: প্রথমেই আপনার সম্পর্কে কিছু বলুন—
সৈয়দ রেজওয়ানুল হক: আমি টেকনেক্সট লিমিটেডের কো-ফাউন্ডার এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করছি। পড়াশোনা করেছি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টে।
জাগো নিউজ: আপনাদের উদ্যোগের কথা পাঠকদের জানাতে চাই—
সৈয়দ রেজওয়ানুল হক: কোভিডের পরই আমাদের আইডিয়াটি বেশ সাড়া ফেলে। আমাদের উদ্যোগটি স্মার্ট লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার (এসএলএমএস) নিয়ে কাজ করছে করোনার শুরু থেকে। এটি অনলাইন ক্লাস, কন্টিনিউয়াস অ্যাসেসমেন্ট বা ক্লাস টেস্ট, এমসিকিউ, অ্যাসাইনমেন্ট নেওয়ার অনলাইন সফটওয়্যার সল্যুশন।
এতে শিক্ষার্থীর সাইন আপ এবং লগইন করার সুবিধা আছে। তাদের প্রত্যেকের নিজস্ব ড্যাশবোর্ড আছে, যেখানে তারা আজকের ক্লাস, পরীক্ষা, ক্লাস টেস্ট, অ্যাসাইনমেন্ট দিতে পারে। মূলত ফেসবুক লাইভ ও ইউটিউব ক্লাসের মাধ্যমে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। যা শিক্ষার্থীদের ফেসবুকে ও ইউটিউবে অপ্রয়োজনীয় কনটেন্ট দেখতে বাধ্য করছে এবং তাদের প্রচুর সময় নষ্ট করছে। আমরা ইউটিউব লাইভ এবং রেকর্ডেড ক্লাসের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের ড্যাশবোর্ডে শিডিউল অনুযায়ী দেখাচ্ছি।
প্রতিটি ক্লাসের সাথে ওই বিষয়ে অ্যাসেসমেন্ট দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। যাতে সে অনলাইন ক্লাসটি দেখে এবং এর বিষয়বস্তু নিয়ে সম্যক ধারণা রাখে। তার কন্টিনিউয়াস অ্যাসেসমেন্টের রেজাল্ট গ্রাফে দেখানো হয় পারফর্মেন্স হিসেবে। এতে তিনি নিয়মিত ক্লাসে অংশগ্রহণে উৎসাহী ও মনযোগী হন।
এ ছাড়াও নিয়মিত অনলাইন অ্যাসাইনমেন্টে জমা দেওয়ার সুবিধা আছে। সবার জন্য ভিন্ন ভিন্ন সেটে র্যান্ডমলি প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে এমসিকিউ টাইপের পরীক্ষা নেওয়ার সুবিধা আছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ডায়নামিক ওয়েবসাইট বানানো এবং অনলাইন ভর্তিও স্মার্ট এলএমএস সফটওয়্যার দিয়ে করা যায়।
জাগো নিউজ: সম্প্রতি অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আপনাদের সেবা নিয়ে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে- এ বিষয়ে বলুন—
সৈয়দ রেজওয়ানুল হক: এসএলএমএস অ্যাপ দিয়ে ১০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর ১ হাজারের বেশি অনলাইন ক্লাস, ক্লাস টেস্ট নেওয়া হয়েছে। ২৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের একাদশের বার্ষিক পরীক্ষা, প্রি-টেস্ট, টেস্ট, অনার্স এবং ডিগ্রির ইন-কোর্স পরীক্ষা নিয়েছে।
এরমধ্যে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ, সিলেট সরকারি মহিলা কলেজ, দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজ, সেরাজাবাদ রানা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সিলেট সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ, সিলেট সরকারি কলেজ, নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশসহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ সফটওয়্যার সল্যুশনটি ব্যবহার করছে। তারা দারুণভাবে এগিয়েছে।
জাগো নিউজ: আপনাদের অন্য উদ্যোগ সম্পর্কে জানাতে চাই—
সৈয়দ রেজওয়ানুল হক: আমাদের মূল কোম্পানিতে ২২ জন কর্মী আছেন। আমাদের অ্যালামনাই ম্যানেজমেন্ট ও অনলাইন পেমেন্ট সফটওয়্যার ‘গ্রাজুয়েট নেটওয়ার্ক’ ৪৩টি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন ব্যবহার করছে। এ ছাড়া বাল্ক ই-মেইল পাঠানোর সফটওয়্যার ‘মেইলব্লাস্টার’ নিয়ে কাজ করছি। যা বেসিস, ই-ক্যাবসহ ১২০টি দেশের ১১ হাজারেরও বেশি প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করছে।
জাগো নিউজ: তরুণদের জন্য আপনার পরামর্শ—
সৈয়দ রেজওয়ানুল হক: তরুণদের করোনা পরবর্তী নতুন পৃথিবীর জন্য নিজেকে তৈরি করতে হবে। এ জন্য শেখার কোনো বিকল্প নেই।
জাগো নিউজ: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাগুলো বলুন—
সৈয়দ রেজওয়ানুল হক: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত কলেজগুলোর অধিকাংশ শিক্ষার্থী প্রযুক্তিসেবা তুলনামূলক কম পান। সে ক্ষেত্রে ক্লাউডবেইজ এসএলএমএস সেবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের দূরত্ব কমিয়ে আনবে। আগামীতে প্রযুক্তিবান্ধব শিক্ষা কার্যক্রমে সবার অংশগ্রহণ বাড়াবে। করোনার জন্য বিজয়৫০ কুপন কোডসহ যোগাযোগ করলে ৩০% ছাড় পাওয়া যাবে আমাদের অ্যাপে।
এসইউ/এএসএম