ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাগো জবস

চ্যালেঞ্জ নেওয়াটাই আমার পছন্দ : আরিফ ইফতেখার

প্রকাশিত: ১০:১৪ এএম, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

আরিফ ইফতেখার। ফ্রন্ট ডেস্ক বাংলাদেশের (এফডিবি) প্রধান নির্বাহী। তিনি নিজের চিন্তা-চেতনায় দেশের মানব সম্পদ বিভাগকে আরো আধুনিক করতে প্রতিষ্ঠা করেছেন এফডিবি। এর আগে ১৯ বছর কাজ করেছেন আন্তর্জাতিক বড় বড় ট্যোবাকো প্রতিষ্ঠানে। ২০১২ সালে একটু ভিন্ন চিন্তা মাথায় এলে শুরু করেন চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত ফ্রন্ট ডেস্ক বাংলাদেশ (এফডিবি)।

২০১৪ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় বিশাল স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী নির্বাচন করে এফডিবি পৌঁছে গেছে অন্য এক উচ্চতায়। দেশ-বিদেশে কাজের অভিজ্ঞতা ও বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ট্যালেন্ট সার্চ করতে গিয়ে লব্ধ অভিজ্ঞতা এবং মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার নানা বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। জাগো জবসের পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন গোলাম রাব্বী।

জাগো জবস: চাকরি দেয়ার মতো একটা চ্যালেঞ্জিং বিষয় আপনার মাথায় এলো কেন?
আরিফ ইফতেখার: চ্যালেঞ্জ নেওয়াটাই আমার পছন্দ। আর তাই যখন দেখলাম আমাদের দেশে ভালো মানের ছেলে-মেয়ে থাকার পরও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে তেমন একটা সুযোগ পাচ্ছে না; তাই এই কাজটির মাধ্যমে যোগ্যদের একটু হলেও এগিয়ে নিতে সাহায্য করা আর কি!

এছাড়া আমাদের দেশে বিভিন্ন কারণে সঠিক লোক সঠিক জায়গায় যেতে পারেন না। তাই ঐসব জটিলতা থেকে যোগ্য লোকদের দূরে রাখতে এটা একটা সামাজিক কার্যক্রমও বলতে পারেন।
অন্যদিকে, বড় মানের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযুক্ত থেকে তাদের মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা দেখেছি; তেমনি বাংলাদেশের প্রতিটি দেশীয়-আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে সঠিক লোক কিভাবে নির্বাচন করা যায়, সে ভাবনা থেকেই এফডিবি প্রতিষ্ঠা।

জাগো জবস: আপনার পড়াশোনা ও চাকরির শুরুটা কোথায় এবং কাজের অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাই।
আরিফ ইফতেখার: আমার পড়াশোনাটা বিদেশে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমি বিবিএ শেষ করেছি। আর ইএমবিএ করেছি নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে। বিদেশেই ১৯৯৫ সালে রথম্যান নামে ট্যোবাকো কোম্পানিতে প্রথম কাজ শুরু করি। ১৯৯৭ সালে তারা বাংলাদেশে কাজ শুরু করলে দেশে চলে আসি রথম্যানের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ হিসেবে। ১৯৯৯ সালে রথম্যান ও বিএটি একসাথে ব্যবসা শুরু করলে ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকোতে চলে আসি। এমন করেই ট্যোবাকো লাইনে কেটে গেল দুই দশক।

জাগো জবস: আপনি দেশের বাইরেও কাজ করেছেন; সেখানকার এবং আমাদের দেশের মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার মধ্যে কী পার্থক্য দেখতে পান?
আরিফ ইফতেখার: আমি বিদেশের মধ্যে ৪টি দেশে সরাসরি কাজ করেছি। আর বেড়াতে ও প্রশিক্ষণের কাজে ১৮টি দেশে গিয়েছি। আসলে ওদের ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা অবস্থাতেই জব রিলেটেড কোর্স ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই প্র্যাকটিক্যাল নলেজ অর্জনের সুযোগ পায়। যা আমাদের দেশে নেই। আমাদের দেশে অনার্স বা মাস্টার্স শেষ বর্ষে ইন্টার্নশীপ করানো হয়; তাও খুব বেশি সময় না। যার কারণে আমাদের দেশের মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা আর বাইরের দেশের মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনায় আকাশ-পাতাল পার্থক্য।

জাগো জবস: এইচআর বিভাগ সম্পর্কে আপনার মন্তব্য-
আরিফ ইফতেখার: এইচআর ডিপার্টমেন্টের মূল কাজ শুধু নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত থাকা- এমন চিন্তা থেকে আমাদের সরে আসতে হবে। বিভাগটিকে আরো কর্মীবান্ধব করতে হবে। যেমন- আপনি অনেক লোক নিয়োগ দিলেন কিন্তু দেখা গেলো তারা সঠিকভাবে নিজেদের তুলে ধরতে পারছেন না। সেক্ষেত্রে এসব লোকদের যোগ্যতা অনুযায়ী ব্যবহারের দায়িত্ব কিন্তু এইচআরের।

জাগো জবস: ‘ট্যোবাকো ইন্ডাস্ট্রিতে অভিজ্ঞদের মানব সম্পদ তৈরির মেশিন বলা হয়’- তারই প্রমাণ হিসেবে কি আপনি জব ছেড়ে নিজেই প্রতিষ্ঠান করলেন?
আরিফ ইফতেখার: এরা আসলে একশ’-দেড়শ’ বছরের পুরনো ইন্ডাস্ট্রি। তারা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সম্পদ মনে করেন। কর্মীদের প্রশিক্ষণ ও রিওয়ার্ড দিয়ে সর্বোচ্চ ব্যবহারের চেষ্টা করেন।

জাগো জবস: নিয়োগের এ কাজটি করতে গেলে আউট সোর্সার হিসেবে ঝামেলা ও চ্যালেঞ্জগুলো কী কী?
আরিফ ইফতেখার: আমাদের সময়ে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো- পারফেক্ট প্রোফাইল খুঁজে বের করা। কারণ আমাদের দেশে সংখ্যার দিক থেকে অনেক প্রোফাইল পাওয়া যায়, কিন্তু তাঁদের মধ্য থেকে মানসম্মত কিংবা যোগ্য লোকের প্রোফাইল খুঁজে বের করা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এছাড়াও প্রত্যাশিতদের কাছ থেকে মানসম্মত জীবনবৃত্তান্ত পাওয়া যায় না; কেননা এদের মধ্যে বেশিরভাগই নিজেদের একাডেমিক ও চাকরিগত যোগ্যতা-দক্ষতাসমূহ উপস্থাপন করে না, অথচ এটা খুবই প্রয়োজন।

জাগো জবস: একটা প্রতিষ্ঠানের মানব সম্পদ বিভাগের মূল কাজ আসলে কী?
আরিফ ইফতেখার: শুরুতেই বলে নেই- আমাদের দেশে মানব সম্পদ বিভাগকে শুধু নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, কর্মী বাছাই আর ভাতা নির্ণয়ের কাজে লাগানো হয়। কিন্তু বিষয়টা তা নয়। এইচআর ডিপার্টমেন্টের কাজ হলো ‘লিডার তৈরি করা’।

জাগো জবস: আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে লিডারশীপ উন্নত করে?
আরিফ ইফতেখার: নিয়োগ দেওয়ার পরপরই পারটিক্যুলার ব্যক্তিকে প্রতিষ্ঠানের সম্পদ হিসেবে তৈরি করতে প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য বিষয়ে নজর দেন। নেতৃত্বের জ্ঞান অর্জনে বিভিন্নভাবে কর্মীকে নিয়ে গবেষণা করেন এইচআর কর্মীরা।

জাগো জবস: একজন এইচআর ম্যানেজারকে সফল হতে হলে কেমন গুণাবলী থাকা জরুরি-
আরিফ ইফতেখার: অবশ্যই চ্যালেঞ্জ নেয়ার ক্ষমতা। ক্রিকেটে যেমন বিচারক শক্ত হাতে নতুন ক্রিকেটারকে ম্যাচে পরিচয় করিয়ে দেন; এক্ষেত্রে দেখা যায় খেলোয়াড়টি ভালো করলে ঐ খেলোয়াড়ের নিজস্ব সফলতা; আর ভালো করতে না পারলে ঐ ব্যর্থতা কেবল বিচারকের। এইচআর ম্যানেজারকেও এমন চ্যালেঞ্জ নিতে হয়। বহুজন থেকে একজন নির্বাচন করার সাহস থাকতে হয়। এছাড়া নির্বাচিত সদস্যকে প্রতিষ্ঠানের পরিবেশে বড় করে তোলার দায়িত্ব নেওয়ার মানসিকতাও থাকতে হবে।

জাগো জবস: জাগো জবসের পক্ষ থেকে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আরিফ ইফতেখার: আপনাকে ও জাগো জবসকেও অশেষ ধন্যবাদ।

এসইউ/পিআর