কীভাবে বুঝবেন চাকরিটা হচ্ছে না
চাকরির জন্য সবাইকে ইন্টারভিউ বোর্ডের মুখোমুখি হতে হয়। ইন্টারভিউ যারা নেন, তারা তখন চাকরি নিশ্চিত নাকি অনিশ্চিত তা প্রকাশ করেন না। তবে ইন্টারভিউ ভালো হয়নি- এরকম লক্ষণ কিন্তু দেখা যায়। যার মাধ্যমে বোঝা যায় যে, চাকরিটা হচ্ছে না। সুতরাং জেনে নিন, ইন্টারভিউয়ে যেসব লক্ষণ দেখে বুঝবেন, ইন্টারভিউ ভালো হয়নি, চাকরিটা হচ্ছে না।
১. যে পদের জন্য আপনাকে নেওয়া হবে, তা নিয়ে ইন্টারভিউতে আলোচনা অনিবার্য। সেটা হলে ভালো, নইলে বুঝে নিন এ যাত্রায় আপনি চাকরি পেলেন না।
২. খেয়াল রাখুন কতক্ষণ ধরে ইন্টারভিউ নেওয়া হচ্ছে? সেটা খুব অল্পসময়ের জন্য হলে বুঝে নিতে হবে চাকরিটা হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে আপনাকে নামধাম জিজ্ঞেস করে বিদায় করে দিবে।
৩. ইন্টারভিউয়ারের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ খেয়াল করুন। আপনার উত্তরে কি তিনি মাথা নেড়ে সায় দিচ্ছেন? বা সহমত না হলে আলোচনা করছেন? এগুলো হলে ভালো। নাহলে, তিনি যদি আপনার উত্তরে কোনো প্রতিক্রিয়া না দেন, তাহলে বুঝে নিন আপনার ভাগ্য ভালো নয়।
৪. আপনি কেন প্রতিষ্ঠানটিতে যোগ দিতে চান? ভবিষ্যতে আপনি নিজেকে কোন জায়গায় দেখতে চান? এ ধরনের প্রশ্ন না করলে বুঝবেন ইন্টারভিউ ভালো হচ্ছে না।
৫. ইন্টারভিউ শেষে সাধারণত একটি হাসি বিনিময় হয়। ইন্টারভিউ ভালো হলে সেই হাসি হয় উজ্জ্বল। কিন্তু খারাপ হলে হাসি হয় স্রেফ সৌজন্যতার কিংবা বিদ্রুপের। প্রশ্নকর্তা আপনার কাছে জানতে চাইবে যে, জব বা কোম্পানি সম্পর্কে আপনার আর কিছু জানার আছে কি না?
৬. আপনি যা বলছেন আর আপনার সিভিতে যা লেখা আছে তার মধ্যে যদি অপূর্ণতা থাকে তাহলে বুঝবেন আপনার চাকরি হচ্ছে না।
৭. প্রশ্নকর্তা যদি আপনার মঙ্গল কামনা করে তাহলে বুঝবেন সেটা মোটেও মঙ্গলের নয়। সামান্য কথা বলার পরেই কী আপনাকে বলে দেওয়া হলো, ‘ধন্যবাদ। আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে। আপনার মঙ্গল কামনা করছি।’ ধরে নিন, সেই যোগাযোগ আর হবে না।
৮. আপনি ‘কি জানেন’, ‘কি পারেন’- তা নিয়ে একটি শব্দও খরচ করা হচ্ছে না? এক্ষেত্রে ধরে নিতে হবে প্রশ্নকর্তা মনে করেন না, আপনার পারদর্শিতা নিয়ে তার কিছু জানা প্রয়োজন। হয়তো ইতোমধ্যেই আপনি চরম কিছু ভুল করে বসেছেন।
৯. আপনার প্রতিটি উত্তরেই কি তারা পাল্টা যুক্তি খাড়া করছেন? আপনি কিন্তু তাহলে কঠিন পরীক্ষায়। কেননা আপনাকে এবার যুক্তি দিয়ে যুক্তি খণ্ডাতে হবে।
১০. যা নিয়ে প্রশ্ন করার কথা, তার থেকে অনেক দূরের কিছু নিয়ে প্রশ্ন আসতে শুরু করেছে? এর অর্থ হলো আপনার মধ্যে তেমন কিছু পাননি। স্রেফ একটু সময় নষ্ট করে ছেড়ে দেবেন।
১১. পরপর প্রশ্ন করা হচ্ছে কি না, সেটা একটা বড় ব্যাপার। যদি ঠিকঠাকভাবে আসে, তাহলে ঠিকই আছে। কিন্তু যদি একই প্রশ্ন পেচিয়ে পেচিয়ে আবারো করা হয়, তাহলে কিন্তু গোলমাল বুঝতে হবে। আপনাকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা চলছে। আপনি হয়তো ওভারস্মার্ট হতে গিয়েছিলেন।
১২. আবার প্রশ্ন খুব দেরি করে আসে, তাহলেও বিপদ বুঝতে হবে। আপনার উত্তরে তেমন সারবস্তু নেই বলেই প্রশ্ন করতে দেরি করছেন।
১৩. ইন্টারভিউয়ে আপনাকে আকর্ষণীয় মনে হলে, যারা নিচ্ছেন; তারা চোখে চোখ রেখে কথা বলবেন। আপনার চোখে চোখ রেখে কথা না বললে বুঝতে হবে সমস্যা রয়েছে।
১৪. খেয়াল রাখুন, যিনি ইন্টারভিউ নিচ্ছেন, তার ভাবভঙ্গি কেমন। তিনি যদি পেছনে গা এলিয়ে দেন, আপনার কথা শুনেও না শোনার ভান করেন, তাহলে বুঝে নিন যে আপনার চাকরি হচ্ছে না।
লেখক : সিইও, কর্পোরেট আস্ক এবং ট্রেইনার ও প্রফেশনাল সিভি রাইটার। ইমেইল[email protected]
এসইউ/এবিএস