আমি ভবিষ্যতে চাকরি দেবো : অর্ক চৌধুরী
অমিয় প্রাপন চক্রবর্তী। তবে ডাক নাম ‘অর্ক’ হিসেবেই সবার মাঝে পরিচিত। তরুণদের নিয়েই সবসময় ব্যস্ত তিনি। এ পর্যন্ত ৪টি দেশ ভ্রমণ করেছেন। পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ‘ইয়ুথ আইকন অ্যাওয়ার্ড’, বাংলাদেশি তরুণদের অতি সম্মানের ‘ইয়ং বাংলা’ পুরস্কার। এছাড়াও বাংলাদেশের যুব মন্ত্রণালয় থেকে ‘শ্রেষ্ঠ সংগঠক’র মুকুট জয়ের নায়ক হিসেবে ২০১২, ২০১৩ এবং ২০১৪ সালে পরপর ৩ বার পুরস্কৃত হন।
তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা এবং আন্তর্জাতিক একটি ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানে বেশ সুনামের সাথেই চাকরি করছেন। এর আগে ট্রেইনার হিসেবে যুক্ত ছিলেন গান্ধী আশ্রমে; এরপর কেয়ার বাংলাদেশ, সার্ক ইয়ুথ অ্যাসোসিয়েশন এবং সানফো কোম্পানিতেও চাকরি সূত্রে জড়িত ছিলেন।
জাগো জবসের পক্ষ থেকে তরুণ এ সংগঠকের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন গোলাম রাব্বী।
জাগো জবস : শুরুতেই আপনার পড়াশোনা নিয়ে যদি বলতেন-
অর্ক চৌধুরী : আমি জীবনের প্রথম পাঠ নেই নোয়াখালীতে। এরপর অ্যাকাউন্টিং বিষয়ে অনার্স করি। বাংলা কলেজে মাস্টার্স শেষ করে এমবিএ করি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে।
জাগো জবস : আজকের ব্যাংকিং পেশার সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন করলেন কীভাবে?
অর্ক চৌধুরী : আমার বিষয় ছিলো অ্যাকাউন্টিং। পড়াশোনার সব বিষয়েই ব্যাংকিং ব্যবস্থার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে বলে কাজটি বেশ ইনজয় করছি। কেননা সবসময় আমি তরুণ উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিতাম। আর সেই কাজটিই এখন অফিসিয়াললি করছি বলে বেশ উপভোগ করছি।
জাগো জবস : অন্য কোনো চাকরিতে এর আগে যুক্ত ছিলেন?
অর্ক চৌধুরী : এর আগে আমি গান্ধী আশ্রমে ট্রেইনার হিসেবে চাকরি শুরু করি। এরপর কেয়ার বাংলাদেশ, সার্ক ইয়ুথ অ্যাসোসিয়েশন এবং সানফোতে কিছু সময় চাকরি সূত্রে জড়িত ছিলাম।
জাগো জবস : আপনার অভিজ্ঞতা কতটুকু কাজে লেগেছে বলে মনে করেন?
অর্ক চৌধুরী : আমার মা একজন এনজিও কর্মী। তাই মানুষের কাছে যাওয়ার যে শিক্ষাটা তা আমার মায়ের কাছ থেকেই পাই। বিভিন্ন জায়গায় কাজের অভিজ্ঞতা এখন কাজে লাগছে। তবে বর্তমান চাকরি প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে এসে বিশ্ব অর্থনীতি কীভাবে চলছে সে বিষয়েও ধারণা পাচ্ছি। তা আগামী দিনে নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে এগিয়ে নিতে আরও সহায়তা করবে বলেই আমার বিশ্বাস।
জাগো জবস : কার অনুপ্রেরণায় এমন কাজকে ভালোবেসে ফেললেন?
অর্ক চৌধুরী : আসলে আমি ব্যাংকিং পেশারও বহু আগ থেকে তরুণদের নিয়ে কাজ করা শুরু করি। মা এবং দাদির অনুপ্রেরণায় আমি এই কাজে উৎসাহিত হয়েছি। আমার দাদি যিনি আমার বর্তমান তরুণদের নিয়ে সংগঠন ‘ধ্রুবতারা’ প্রতিষ্ঠা করতে সরাসরি সাপোর্ট করেছিলেন।
জাগো জবস : তরুণদের নিয়ে ভাবনার দীক্ষা কোথায় পেলেন?
অর্ক চৌধুরী : এ বিষয়ে আমার অসংখ্য ট্রেনিং-ওয়ার্কশপে অংশ নেয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। যেমন- খেলাঘর, গান্ধী আশ্রম, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, ইয়ং বাংলাসহ দেশ-বিদেশের অসংখ্য প্রতিষ্ঠানে আমার যুক্ত থাকার সুযোগ হয়েছে।
জাগো জবস : ‘ধ্রুবতারা’ নিয়ে যদি কিছু বলতেন-
অর্ক চৌধুরী : ধ্রুবতারা এরই মধ্যে একযুগ পেরিয়েছে। এটি ইতোমধ্যে দেশের ইয়ুথ পার্লামেন্টের প্রথম সংস্করণ হিসেবে তরুণদের মাঝে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। ধ্রুবতারা মূলত ইয়ুথদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মক্ষেত্র তৈরিতে এবং তরুণ উদ্যোক্তা তৈরিতে কাজ করছে। তবে ২০২৫ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ ইয়ুথ অরগানাইজেশন হিসেবে ধ্রুবতারাকে প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা এরইমধ্যে দেশের ৬৪ জেলার ১১টিতে ধ্রুবতারাকে নানাভাবে যুক্ত করেছে। আশা আছে ২০১৮ সালের মধ্যে ৬৪ জেলায় আমরা সম্পৃক্ত হবো।
জাগো জবস : বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে পজিটিভ এবং নেগেটিভ দিক-
অর্ক চৌধুরী : বাংলাদেশি তরুণরা বর্তমানে বহু ইতিবাচক কাজ করছে। তারা এখন স্বপ্ন দেখে নিজেদের পরিবর্তন করে আরও বড় জায়গায় নিয়ে যেতে। তারা দেশ নিয়ে ভাবে এবং বাংলাদেশকে প্রতিনিয়ত একটি উন্নত অবস্থানে দেখতে চায়। তবে নেগেটিভের মধ্যে মাদক এবং সাইবার ক্রাইম বড় সমস্যা।
জাগো জবস : নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে ভবিষ্যৎ ভাবনা-
অর্ক চৌধুরী : ধ্রুবতারাকেই এখন বেশি সময় দিচ্ছি। আটটি নামে আরও কনসার্ন খুব দ্রুতই চালুর জন্য কাজ করছি। ‘আমি ভবিষ্যতে চাকরি দেবো’- এইভাবে নিজেদের তথা ধ্রুবতারাকে প্রতিষ্ঠায় এখন সামনে এগুচ্ছি।
জাগো জবস : যারা তরুণদের নিয়ে কাজ করতে চান, তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
অর্ক চৌধুরী : প্রথমত নিজকে এবং দেশকে ভালোবাসা। দ্বিতীয়ত হার না মানা। তৃতীয়ত ভালোকাজকে ভালোবাসা। চতুর্থত মিথ্যার কাছে হার না মানা। পঞ্চমত অবশ্যই লেগে থাকা।
জাগো জবস : সফলতা বলতে আপনি কী বোঝেন?
অর্ক চৌধুরী : আমি যা চাই তা অর্জন করার নামই সফলতা। মূলত যেটা হতে চাই বা পেতে চাই, সেটা না পাওয়া পর্যন্ত লেগে থাকাই সফলতা।
জাগো জবস : আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
অর্ক চৌধুরী : আপনাদেরকেও ধন্যবাদ।
এসইউ/এবিএস