জেনে নিন কিছু উদ্ভট চাকরির ইতিহাস : ১ম পর্ব
জীবিকার তাগিদে মানুষকে কত রকমের কাজই না করতে হয়। চাকরির মধ্যেও রয়েছে উঁচু-নিচু ভেদাভেদ। কোনো কোনো চাকরি ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও করে আসছে মানুষ। মানব সভ্যতার ইতিহাসে এমন সব চাকরির কথা উল্লেখ রয়েছে, যা শুনলে আঁৎকে উঠবেন আপনিও। তাহলে আসুন জেনে নেই এমন কিছু উদ্ভট চাকরির ইতিহাস।
অর্নাট্রিসেস
শীল বা নাপিতের পেশা শেষ হয়ে যায়নি এখনো। কিন্তু প্রাচীন রোমের অর্নাট্রিসেসদের কাজ আরো জটিল ছিল। তারা পেঁচানো চুলের ডিজাইন করতেন। এটি সেই সময়কার দারুণ জনপ্রিয় স্টাইল ছিল। তখন অর্নেট বানানোর মাধ্যমে মানুষের মধ্যে স্বর্গীয় ভাব চলে আসতো বলে মনে করা হতো।
রিসারেকশনিস্ট
এরা কবর থেকে মৃতদেহ খুঁড়ে বের করতেন। তারপর এগুলো মেডিকেল কলেজে বিক্রি করে দিতেন। এই বিতর্কিত পেশাটি উঠে আসে ১৯শ’ শতকে। সেই সময় উইলিয়াম বার্কে এবং উইলিয়াম হারে নামের দুই সিরিয়াল কিলারের অপরাধ প্রকাশিত হওয়ার পর রিসারেকশনিস্টের বিষয়টি উঠে আসে। আসলে তারা মানুষ খুন করতেন তাদের দেহ ও হাড় মেডিকেল কলেজে বিক্রি করার জন্য।
হুইপিং বয়
রাজাদের বখে যেতে থাকা শিশু প্রিন্সদের শাসন করতে আনা হতো হুইপিং বয়দের। তারা প্রিন্সকে চাবুকপেটা বা লাঠিপেটা করতেন।
গ্রুম অব দ্য স্টুল
দুর্গন্ধময় পরিবেশে এ কাজ করতে হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে এ পদের নাম ‘গ্রুম অব দ্য কিংস ক্লোজ স্টুল’। এর মাধ্যমে সেই ব্যক্তিকে বোঝানো হয় যিনি রাজাকে মলত্যাগে নিয়ে যেতে সহায়তা করেন। নব্য আধুনিক ইংল্যান্ডে এটি বেশ বড় পদের চাকরি বলে গণ্য হতো। এ পদে চাকরিরতরা রাজার অনেক গোপন তথ্য জানতেন, আদালতে বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগসহ নানা ক্ষমতা ভোগ করতেন।
র্যাট ক্যাচার
কাজটি যেন হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার। তবে এক সময় ইঁদুর ধরার পেশাদার মানুষ পাওয়া যেত। এরা ইঁদুর ধরে তাদের অত্যাচার থেকে রেহাই দিতেন মানুষকে। সেই সঙ্গে রোগ-বালাই ছড়িয়ে পড়ার হাত থেকে বাঁচাতেন। রানী ভিক্টোরিয়ার সময় বিখ্যাত র্যাট ক্যাচার জ্যাক ব্ল্যাককে তো ‘র্যাট-ক্যাচার অ্যান্ড মোল ডেস্ট্রয়ার’ উপাধি দেয়া হয়।
ফুলার
প্রাচীন রোমে ময়লা কাপড় ধৌতকারীদের ‘ফুলার’ বলা হতো। এ পেশা এখনো প্রচলিত রয়েছে। তারা ‘ধোপা’ নামে পরিচিতি। কিন্তু প্রাচীন রোমের ফুলাররা পাবলিক রেস্টরুম থেকে অতি নোংরা কাপড় সংগ্রহ করে পানি ও ক্ষার মিশ্রিত রাসায়নিক পদার্থের মাধ্যমে তা ধুয়ে দিতেন।
কম্পিউটার
যখন ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র বাজারে আসেনি, তখন কোনো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের তিনজন কর্মী নম্বরগুলো হাতে এদিক-ওদিক করতেন। সাধারণ এ কাজে নারীদের নেয়া হতো।
পাউডারমাঙ্কি
সাগরে যখন পাইরেটদের দাপট, তখন একটি জাহাজের কামানে যখন-তখন দ্রুত গোলা-বারুদ ভরার প্রয়োজন হতো। এ কাজে যে মানুষটি নিয়োজিত ছিলেন, তার পদবি পাউডারমাঙ্কি।
লেক্টর
কারখানায় কাজ করাতে একঘেয়েমি আসাটা বিচিত্র কিছু নয়। এই বিরক্তি দূর করতে লেক্টররা শ্রমিকদের মাঝে বসে উচ্চ কণ্ঠে খবর বা সাহিত্য পাঠ করতেন।
চলবে....
এসইউ/এমএস