জেনে নিন উদ্যোক্তা হওয়ার উপায় : শেষ পর্ব
উদ্যোক্তা যে কেউ হতে পারেন। সফল হওয়াটা ভিন্ন ব্যাপার। উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হওয়ার রাস্তা কিন্তু সহজ নয়। তাই উদ্যোগ নেয়ার আগেই যাচাই করে নিতে হয় উদ্যোগের সম্ভাব্যতা। অনেকে না বুঝেই নেমে পড়েন। একটু চোখ-কান খোলা রাখুন। একজন সফল উদ্যোক্তা হতে প্রস্তুতি হিসেবে অনেক কিছুই করণীয় থাকে। তাহলে জেনে নিন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার উপায়। আজ প্রকাশ হচ্ছে শেষ পর্ব-
অলসতা পরিহার
সফল ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তারা কখনও কাজ সম্পূর্ণ করতে অলসতা করেন না। তাদের হাতে যখন কোনো কাজ থাকে, তখন তারা দিন-রাত তাদের সম্পূর্ণ শ্রম এবং মেধা দিয়ে কাজটি পরিপূর্ণ করে থাকেন। কাজের ক্ষেত্রে তাদের কাছে অন্য সবকিছু গুরুত্বহীন মনে হয়। এ পরিশ্রম এবং অধ্যবসায় তাদের ব্যর্থদের থেকে আলাদা করে থাকে।
কখনোই ‘না’ বলা যাবে না
সফল উদ্যোক্তারা জানেন যে তাদের পক্ষে কী করা সম্ভব এবং কী করা সম্ভব নয়। তাই অন্যরা যখন কাজের ভয়ে না বলেন বা পারবেন না বলে কাজ পাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেন সফল ব্যক্তিরা তাদের সবকিছু বিবেচনা করেই সুযোগকে হ্যাঁ বলেন। এর ফলে ক্লায়েন্টদের কাছে অন্য সবার থেকে সফল ব্যবসায়ী হয়ে ওঠেন আলাদা। অনেক সময় ক্লায়েন্টরা অন্য কাউকে না খুঁজে সরাসরি সফল ব্যবসায়ীদের আর কাজ করার এবং আরও আয় করার সুযোগ দিয়ে থাকেন।
রাগ ও ভীতি দূর করা
সফল উদ্যোক্তারা বিশ্বাস করেন রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। আর যদি ভয়কে জয় করা না যায় তাহলে সুযোগ হাতছাড়া হয়। সফল মানুষ সেই ভয় বা রাগকে কাবু করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, যা অন্যরা পারেন না। যদি কখনও পরিবেশ আপনার প্রতিকূলে চলে যায় তাহলে রাগ বা ভয়ের কাছে মাথা নত না করে আপনার মেধা ও চিন্তাশক্তি দিয়ে পরিবেশকে নিজের মতো করতে শিখুন। তাহলেই আপনি যেতে পারবেন আপনার চূড়ান্ত সফলতার আরও অনেক কাছাকাছি।
কৌশলী হওয়া
সফল মানুষ অতিরিক্ত ভাব নিয়ে চলেন না। সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে তারা কৌশল অবলম্বন করেন। কেননা এতে করে তারা সঠিক সুযোগ হাতছাড়া করে ফেলতে পারেন। তারা নতুন কারও সঙ্গে দেখা হলে হাসিমুখে অভিবাদন জানান এবং প্রশংসা করেন।
স্বপ্ন দেখা
সফলতার প্রধান সূত্র হচ্ছে আপনাকে স্বপ্ন দেখতে হবে এবং সেই স্বপ্নকে সত্যি করতে কাজ করে যেতে হবে। কিন্তু তাই বলে স্বপ্ন দেখে সফলতার কথা ভেবে কাজ বন্ধ করে দিলে চলবে না। যদি আপনার মনে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন থাকে তাহলে বসে না থেকে কাজে লেগে পড়ুন।
বিজয়ী মনোভাব
এখন সর্বক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা। ব্যবসা ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা থাকবেই। একজন সফল উদ্যোক্তার প্রতিযোগিতায় বিজয়ী মনোভাব থাকতে হবে। সফল উদ্যোক্তা সব সময় ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতায় বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারেন। বিশ্বের সফল ক্রীড়াবিদের মতো উদ্যোক্তাদের সেরা হতে হলে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়ার সময় তাদের প্রতিযোগীদের অতিক্রম করার উপায় বের করতে হয়।
অল্পতে সন্তুষ্টি
সফল ব্যক্তিরা মোটামুটি কাজে বা গা ঢাকা কাজে সন্তুষ্ট হন না। যারা মোটামুটি কাজ করে দ্রুত আয় করার চেষ্টা করেন তাদেরও তারা পছন্দ করেন না। স্টিভ জবস যখন এপেল’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন তখন অধিকাংশই তাকে মনেপ্রাণে ঘৃণা করতেন। কেননা স্টিভ জবস কখনই মোটামুটি কাজ করা পছন্দ করতেন না এবং এ ধরনের কাজ যারা করেন তাদের পছন্দ করতেন না।
বুদ্ধিমত্তা
এর মানে এই নয়, আপনাকে একজন স্কলার হতে হবে। এন্টারপ্রেনিয়ারদের বুদ্ধিমত্তা একটু ভিন্ন ধরনের। এক্ষেত্রে আপনি যে উদ্যোগ নিয়েছেন সে ব্যাপারে আপনার থাকতে হবে পুরোপুরি স্বচ্ছ ধারণা। আর এ ধারণা রাখতে হবে ব্যবসা শুরুর আগেই। কমনসেন্সের সঙ্গে আস্তে আস্তে শুরু হওয়া আপনার অভিজ্ঞতাই আপনাকে করে তুলবে সিদ্ধান্ত নেয়ার ব্যাপারে বুদ্ধিমান।
মূলধন
সর্বোপরি উদ্যোগের শুরুতেই নিশ্চিত করতে হবে প্রয়োজনীয় মূলধন। বিশেষ করে প্রথম বছরের সব খরচ এবং বিনিয়োগের পুরো টাকাই থাকা চাই আপনার হাতে। পরের বছরগুলোর জন্য হয়তো তারল্য নির্ধারণ করে আপনি ব্যবসার আয় থেকেই সব খরচ নির্বাহ করতে পারবেন। এছাড়া বাংলাদেশের অনেক সরকারি, বেসরকারি ব্যাংক, এনজিও তৈরি আছে আপনাকে সাহায্যের জন্য। এর মধ্যে অনেক বছর ধরে এসএমই বা ক্ষুদ্র ঋণের মাধমে শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য কিছু বেসরকারি ব্যাংক বিভিন্ন রকম সাহায্য করে আসছে।
এসইউ/পিআর