আপনার প্রতিযোগী আপনি নিজেই : সিলভিয়া লেনি
পুরো নাম সিলভিয়া পারভিন লেনি। তবে তিনি বেশি পরিচিত সিলভিয়া লেনি নামেই। সদা হাস্যোজ্জ্বল ও সাদামনের সহজ-সরল এ মানুষটি নিজের জাত চেনান সংবাদ উপস্থাপক হিসেবে। উপস্থাপনায় যাত্রাটা শুরু একুশে টেলিভিশনে সংবাদ পাঠের মধ্য দিয়ে। সংবাদ উপস্থাপনায় যুক্ত ছিলেন সংবাদভিত্তিক জনপ্রিয় টেলিভিশন একাত্তর টিভিতেও। তবে বর্তমানে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছেন মিডিয়ার আরকেটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ এফএম রেডিও ‘রেডিও ঢোল’র ডিরেক্টর হিসেবে।
এর বাইরেও তিনি একজন রাজনীতি সচেতন এবং দেশপ্রেমিক মানুষ। এত ব্যস্ততার মাঝেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরীব মানুষের সেবায় প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করছেন লাভলী ফাউন্ডেশন। যুক্ত আছেন সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) নামক প্রতিষ্ঠানে।
নিজের প্রতিষ্ঠান নিয়ে ভাবনা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং ক্যারিয়ারের নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয় সিলভিয়া লেনির সঙ্গে। কথা বলেছেন গোলাম রাব্বী।
জাগো জবস : শুরুতেই আপনার পড়াশোনার বিষয়ে জানতে চাই-
সিলভিয়া পারভিন লেনি : আমি নিজ জেলা নাটোরেই মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও সম্মান সম্পন্ন করেছি। এরপর যখন ঢাকায় আসি তখন এমবিএ করি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে। এছাড়া লন্ডন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটিতেও পড়াশোনা করছি।
জাগো জবস : রেডিওর সঙ্গে কখন থেকে কীভাবে পথচলা শুরু?
সিলভিয়া পারভিন লেনি : এরআগে আমি ৭১ টিভিতে সংবাদ পড়তাম। তারপর হঠাৎ করেই রেডিও ঢোল ৯৪.০০ এফএমে কাজ করার অফারটা এলো। টিভিতে তো শুধু নিউজ পড়ে চলে আসতাম। এখানে আরো বড় একটা প্লাটফর্ম পেলাম নিজেকে প্রমাণের। তাই এখানে জয়েন করলাম। দেশসেরা একটি টিম বানানোর চেষ্টা করি। আর সত্যিই আমাদের অফিসের সবাই খুবই কো-অপারেটিভ এবং মেধাবী। তাই এখন তো এটা আমার পরিবারের মতো।
জাগো জবস : দেশের বিশাল তরুণ সমাজের জন্য আপনারা কী করছেন?
সিলভিয়া পারভিন লেনি : আমরা সবসময় তরুণদের প্রমোট করি। যেমন অনেক তরুণ আছেন যারা খুব ভালো রক গান করেন; কিন্তু তাদের সম্পর্কে কেউ জানেও না, ভাবেও না। আমরা কিন্তু তাদের উৎসাহ দিতে স্পেশ্যাল প্রোগ্রাম তৈরি করছি। নারী উদ্যোক্তাদের নিয়েও কাজ করছি। মোটকথা, আমরা নতুন জেনারেশন নিয়ে কাজ করি।
জাগো জবস : নিয়োগের সময় প্রার্থীদের মধ্যে কী দেখেন?
সিলভিয়া পারভিন লেনি : আমরা শুরুতেই দেখি সে মন-মানসিকতায় কতটা তরুণ, পজেটিভ এবং কতটা ভিন্ন ও নতুন-নতুন আইডিয়া জেনারেট করতে পারে।
জাগো জবস : তরুণদের মধ্যে ইতিবাচক এবং নেতিবাচক কী দেখতে পান?
সিলভিয়া পারভিন লেনি : এখনকার তরুণ প্রজন্ম উদ্যমী এবং অনেকেই অল্প বয়সেই নিজে কিছু করার চেষ্টা করছে। কেবল দেশ নয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আমাদের তরুণরা সুনাম কুঁড়াচ্ছে। আবার এখনো কিছু তরুণ বেশ আবেগপ্রবণ। তারা কিছু না করেই বড় হতে চায়।
জাগো জবস : ক্যারিয়ারে সফল হতে উদ্বুদ্ধ করতে কী বলবেন?
সিলভিয়া পারভিন লেনি : সফলতা পেতে মনের জোর বাড়াতে হবে। প্রতিবন্ধকতা, বাধা-বিপত্তি থাকবে; তবে সেগুলোকে পাত্তা দেয়া যাবে না। মনে রাখতে হবে, আপনার প্রতিযোগী আপনি নিজেই।
জাগো জবস : আপনার ভবিষ্যৎ ভাবনা নিয়ে যদি একটু বলতেন-
সিলভিয়া পারভিন লেনি : প্রথমত যতদিন বাঁচি কাজের মধ্যে থাকতে চাই। সবসময় হাসি-আনন্দ আর ইতিবাচকতায় থাকতে চাই। আর মিডিয়ায় নিজের উপস্থিতি রাখতে চাই। নিজের মেধা-বুদ্ধি আর পরিশ্রম দিয়ে ভালো কিছু প্রোগ্রাম নিয়ে কাজ করতে চাই।
জাগো জবস : আপনার হাতে গড়া ‘লাভলী ফাউন্ডেশন’ সম্পর্কে কিছু বলুন-
সিলভিয়া পারভিন লেনি : এটা একটা এনজিও। তবে তথাকথিত এনজিওগুলোর মতো কারো কাছ থেকে সহযোগিতা নিলাম আর কয়েকটা ছবি তুলে প্রজেক্টের পর প্রজেক্ট বানালাম- আমরা মোটেও এমন নই। আমরা এখানে নিজেদের অর্থই নিজেরা বঞ্চিত মানুষের কল্যাণে কাজে লাগাই।
জাগো জবস : এই এনজিওর কাজগুলো কেমন?
সিলভিয়া পারভিন লেনি : প্রথমত, আমরা অন্য কারো থেকে বিশেষ করে আন্তর্জাতিক এবং দেশীয় কোনো সরকারি-বেসরকারি সাহায্য নিয়ে কাজ করি না। দ্বিতীয়ত, আমরা কেবল ঢাকা বা শহরের আশপাশ কেন্দ্রিক কাজ করি না। আমি আমার নিজ এলাকা নাটোরের গরীব এবং সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য কিছু করতে চাই। এমনকি আমার এখন পর্যন্ত ইচ্ছে আছে আমি লাভলী ফাউন্ডেশনকে কেবল নাটোরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখবো।
জাগো জবস : সফলতা বলতে আপনি বোঝেন?
সিলভিয়া পারভিন লেনি : আপনি যে কাজটা করছেন, তা করে কতটুকু স্যাটিসফাই হতে পারছেন, বা পারলেন- আমি মনে করি সেটাই একজনের সফলতা।
এসইউ/এমএস