ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাগো জবস

গ্রাহকের আস্থা অর্জনে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করতে হবে: তাজদীন

খালিদ সাইফুল্লাহ্ | প্রকাশিত: ০৪:৪৬ পিএম, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

দেশের মার্কেটিং পেশাজীবীদের মধ্যে জনপ্রিয় একজন তাজদীন হাসান। দেশীয় ও মাল্টি ন্যাশনাল বেশ কিছু কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে মার্কেটিং বিভাগের প্রধান হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে দেশের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান দারাজ বাংলাদেশের চিফ মার্কেটিং অফিসার হিসেবে কর্মরত। জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে জানিয়েছেন ই-কমার্স সেক্টরের অভিজ্ঞতার গল্প। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন খালিদ সাইফুল্লাহ্—

জাগো নিউজ: ই-কমার্সে কাজ করতে আগ্রহী হলেন কেন?
তাজদীন হাসান: বাংলাদেশে ই-কমার্স খাত এখনো শুরুর পর্যায়ে। এ জন্যই এ খাতের দ্রুত প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। নতুন এ খাত নিয়ে প্রচুর কাজ ও নিরীক্ষা করার সুযোগ আছে। বিশ্বজুড়ে ই-কমার্স খাত বিস্তৃতিশীল। আধুনিক সময়ে সব ব্যবসার সঙ্গেই ই-কমার্সের সম্পৃক্ততা আছে। তাই ব্যবসার গতি-প্রকৃতি বোঝার জন্য ই-কমার্স খাত নিয়ে জানাশোনা থাকা জরুরি।

ই-কমার্স খাত সম্পর্কে বুঝতে পারলে বিশ্বব্যাপী ব্যবসা সম্পর্কে ধারণা তৈরি হবে। কেউ যদি ব্যবসা কোন দিকে যাচ্ছে, ক্রেতারা কেমন পণ্য বা সেবা চাইছেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছে ক্রেতাদের চাহিদা কী—এগুলো বুঝতে চান; তাহলে তাকে ই-কমার্স খাত সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। ভোক্তারা এখন কোন ট্রেন্ডের দিকে ঝুঁকছেন, কীভাবে ট্রেন্ডগুলো পরিবর্তিত হচ্ছে—এসব বোঝার জন্য ই-কমার্স খাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্যই আমি ই-কমার্স সেক্টরে কাজ করতে আগ্রহী হয়েছি।

জাগো নিউজ: পেশা হিসেবে ই-কমার্স সেক্টর কতটা চ্যালেঞ্জিং?
তাজদীন হাসান: পেশা হিসেবে ই-কমার্স খাতে চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি। এ খাতে ক্রেতাদের আগ্রহ প্রথাগত ব্যবসার চেয়ে কিছুটা আলাদা। উদ্ভাবনের সঙ্গে সঙ্গে এ খাতে প্রতিনিয়ত নানা পরিবর্তন ঘটছে। আবার ট্রেন্ডের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ক্রেতাদের চাহিদারও পরিবর্তন ঘটছে। ই-কমার্স খাত আরও এক কারণে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং, তা হলো—এখানে সপ্তাহের ৭ দিনই ২৪ ঘণ্টা সেবা চালু রাখতে হয়। ফলে যে কোনো সময়ে হওয়া কেনা-বেচা, অভিযোগ-অনুযোগের সঙ্গে আপনাকে মানিয়ে নিতে হবে।

ই-কমার্স খাতের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জটি হচ্ছে ক্রেতাদের আস্থা ধরে রাখা। ক্রেতাদের আস্থা ই-কমার্স ব্যবসার জন্য সবচেয়ে বড় সম্পদ। এর সঙ্গে আছে ৬৪ জেলায় কার্যকরভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং যথাসময়ে ক্রেতাদের কাছে পণ্য পৌঁছানো। এত বিশাল নেটওয়ার্কে সঠিক সময়ে ক্রেতাদের কাছে পণ্য বা সেবা পৌঁছে দেওয়া এ খাতের অন্যতম চ্যালেঞ্জ।

জাগো নিউজ: ই-কমার্সের মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে পণ্য বা প্রতিষ্ঠানের প্রতি ক্রেতাদের আকৃষ্ট করাতে কোন বিষয়গুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ?
তাজদীন হাসান: প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতার সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনা এ খাতে ক্রেতাদের আস্থা অর্জনের প্রধান উপায়। এ ব্যাপারে কোনরকম ছাড় দেওয়া চলবে না। পাশাপাশি পণ্যের মান, দাম ও সেবা নিয়ে ক্রেতাদের কাছে সঠিক তথ্য দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। ই-কমার্সে পণ্যের মার্কেটিং বা ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের সময় তথ্যগুলো সঠিক ও আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে হবে।

জাগো নিউজ: ই-কমার্স পেশাজীবী হিসেবে এ সেক্টর নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?
তাজদীন হাসান: বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ই-কমার্স ব্যবসা বড় হচ্ছে। দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে শুরু করেছে এ খাত। ই-ক্যাবের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে ই-কমার্স খাত বাংলাদেশে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। ২০২৩ সালে এ ব্যবসা বেড়ে ৩০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছবে। বাংলাদেশের মোট ব্যবসার মাত্র ২ শতাংশ এটি। কিন্তু এশিয়ার অন্যান্য দেশে এটি আরও বেশি। ইন্দোনেশিয়ার মোট ব্যবসার প্রায় ২০ শতাংশ ই-কমার্স খাতের হিস্যা, এমনকি আমাদের পাশের দেশ ভারতেও এটি ৬ শতাংশ। আমাদের দেশে ই-কমার্স খাতের ব্যবসা দ্রুতগতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছে, নতুন নতুন সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। তরুণরা বাংলাদেশের জনসংখ্যার সবচেয়ে বড় অংশ। তারা ইতোমধ্যে তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম ডিজিটাল মাধ্যমে সম্পন্ন করতে শুরু করেছে, যা ই-কমার্সের প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

জাগো নিউজ: নতুন ই-কমার্স পেশাজীবীদের প্রতি আপনার পরামর্শ কী?
তাজদীন হাসান: যেসব তরুণ ই-কমার্স খাতে কাজ করছেন বা ভবিষ্যতে করতে চাচ্ছেন, তাদের জন্য আমার পরামর্শ হচ্ছে—অবশ্যই ব্যবসার খুঁটিনাটি তথ্য নিয়ে সম্যক ধারণা রাখতে হবে। ব্যবসার গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণ করতে হলে তাদের ডেটা-ড্রিভেন সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতা অর্জন করতে হবে। পাশাপাশি ই-কমার্স খাতের নিত্যনতুন আঙ্গিক নিয়ে ক্রেতাদের ধারণা দিতে হবে। প্রতিনিয়ত ই-কমার্সের বাজার পরিবর্তিত হচ্ছে, ডিজিটাল সেবার পরিধি বাড়ছে, প্রযুক্তি উন্নত হচ্ছে। এসব বিষয়ের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে হবে। এ ছাড়াও সেবার মান, হালের ট্রেন্ড এবং কনজিউমার বিহেভিয়ার—এসব দিকে সব সময় খেয়াল রাখতে হবে। তাহলে পেশাগতভাবে ই-কমার্স খাতে ভালো করা যাবে বলে আমার বিশ্বাস।

এসইউ/এএসএম

আরও পড়ুন