বাধা-বিপত্তি জয় করে সফল উদ্যোক্তা সেলিম
‘আমি একদিনও বেকার থাকবো না’-এমন আত্মবিশ্বাস নিয়েই কথা বলছিলেন সফল উদ্যোক্তা মো. সেলিম শেখ। বহুজাতিক একটি প্রতিষ্ঠানে ১০ বছর চাকরির পর করে যাচ্ছেন একের পর এক ব্যবসাসফল সব প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি জাগো নিউজকে বলেছেন উদ্যোক্তা জীবনের সফলতার গল্প।
মুন্সিগঞ্জের মধ্যবিত্ত পরিবার থেকেই নানা বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে এতটা পথ এসেছেন তিনি। পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশনি করে ছোটবেলা থেকেই নিজের খরচ নিজে চালিয়েছেন। ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা এবং আইইউবিএটি থেকে বিএসসি শেষ করে নিটল মটরসে যোগদান করেন সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। তিনি অসাধারণ ইচ্ছাশক্তি, আত্মবিশ্বাস আর পরিশ্রমের জন্যই হয়তো সবার মন জয় করে নিয়েছেন।
চাকরি করতে গিয়ে নিজেকে পরাধীন মনে করা সেলিম শেখ একসময় নিজে কিছু করার আকাঙ্ক্ষা থেকেই ব্যবসা শুরু করেন। প্রচুর কাজপাগল আর পরিশ্রমী হিসেবে খুব সহজেই এগিয়ে যেতে থাকেন। শুরুর দিকে কর্পোরেট গিফট আইটেমস দিয়ে শুরু করলেও ২০১৭ সালে অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগানোর চিন্তা করেন। ২০১৮ সালের শুরুর দিকে প্রতিষ্ঠা করেন মার্কেটপ্লেস প্রতিষ্ঠান ‘নূরতাজ’। এ ছাড়া বাটার দুটি শোরুম পরিচলনা করছেন। নিজ উদ্যোগে গড়েছেন সুপারশপও। বর্তমানে তার অধীনে হাজারেরও বেশি মানুষ কাজ করেন।
মো. সেলিম শেখ অনলাইনের মধ্যদিয়ে মানুষের জীবনকে আরও সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ করার চেষ্টা করেছেন সব সময়। তিনি মনে করেন, ই-কমার্স মানে শুধুই কম দামে পণ্য দেওয়া নয়, ই-কমার্স লক্ষ্য মানুষের সময় বাঁচানো, মানুষের জীবন সহজতর করে তোলা এবং একই ছাতার নিচে দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় সব পণ্য সহজে পাওয়া। নূরতাজে বর্তমানে দৈনন্দিন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য থেকে ফ্যাশন সামগ্রী, ইলেক্ট্রনিক্স থেকে শুরু করে সবকিছুই আছে।
অনলাইন প্ল্যাটফর্মের পাশাপাশি গ্রাহকসেবা বাড়ানোর জন্য এবং আস্থা অর্জনে নূরতাজের নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জে আউটলেট আছে। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জে নূরতাজের নিজস্ব ডেলিভারি সুবিধা আছে। পাশাপাশি ৩ জেলার বাইরেও বাংলাদেশজুড়ে থাকছে ডেলিভারি সুবিধা। বাংলাদেশে সর্বপ্রথম জেলাভিত্তিক ই-কমার্স ‘নূরতাজ’ শুরু করে। নূরতাজ এক্সপ্রেস নামে আছে ডেলিভারি সার্ভিস।
নিজের মালিকানাধীন মোহাম্মাদ গার্মেন্টস অ্যান্ড লাইফস্টাইল নামে আছে নিজস্ব পোশাক ম্যানুফ্যাকচারিং প্রতিষ্ঠান। তার প্রতিষ্ঠান থেকে প্রমোশনাল, কর্পোরেট গিফট, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইউনিফর্ম, অফিস সাপ্লাই এবং স্টেশনারি পণ্য সরবরাহে আছে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা। সুনামের সাথে কাজ করে আসছেন দেশের নামিদামি গ্রুপ অব কোম্পানি এবং দেশি-বিদেশি সংস্থার সাথে।
তরুণদের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘যে কোনো ব্যবসায়ে অনেক দূর চিন্তা করে লক্ষ্য নির্ধারণ জরুরি। তরুণদের অবশ্যই লেগে থাকতে হবে, ধৈর্য রাখতে হবে কাজের প্রতি। আর সবচেয়ে বড় হচ্ছে, কমিটমেন্ট ঠিক রাখতে হবে-এর কোনো বিকল্প নেই।’ তরুণদের উদ্যোক্তা পেশায় আসতে উৎসাহিত করতে সরকারের আরও মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
৫ বছর পর ই-কমার্স ব্র্যান্ড ‘নূরতাজ’র সারাদেশে আউটলেট থাকবে-এ স্বপ্ন দেখেন সেলিম। পাশাপাশি বাংলাদেশের সেরা ই-কমার্সের একটি হবে ‘নূরতাজ’। সেই লক্ষ্য পূরণে চেষ্টা করে যাচ্ছেন এ সফল উদ্যোক্তা।
এসইউ/জেআইএম