ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাগো জবস

ইয়োগাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চান বৃতি

জাগো নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৮:৫০ এএম, ২৮ মার্চ ২০২২

বৃতি দেব ইয়োগা ট্রেইনার। তার বাবা বিমান কুমার দেব, মা মিতা দেব। বৃতির জন্ম নাটোরে। তিনি ব্রাক ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেন। এরপর ভারতে ইয়োগা টিচার্স ট্রেনিং কোর্স শেষ করে দেশে ফেরেন। বর্তমানে ইয়োগাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে কাজ করে যাচ্ছেন।

সম্প্রতি ইয়োগা নিয়ে তার স্বপ্ন ও সম্ভাবনার বিষয়ে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাংবাদিক জাহিদ হাসান—

জাগো নিউজ: ছোটবেলা কেমন কেটেছে? পাশাপাশি বেড়ে ওঠার গল্প শুনতে চাই—
বৃতি দেব: আমার ছোটবেলা কেটেছে নাটোরে, গাছপালা আর ইতিহাসের হাতছানিতে ভরা ছোট্ট একটি শহরে। আমার পরিবারে মা, বাবা, আমি আর ছোট ভাই। এসএসসি শেষ করেছি নাটোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি শেষ করেছি নবাব সিরাজউদ্দৌলা সরকারি কলেজ নাটোর থেকে। পড়াশোনার পাশাপাশি চার বছর বয়স থেকে শিখেছি গান আর ছবি আঁকা।

জাগো নিউজ: পড়াশোনায় কোনো প্রতিবন্ধকতা ছিল?
বৃতি দেব: পড়াশোনায় কোনো প্রতিবন্ধকতা আমার কখনোই ছিল না। আমার মা-বাবা ছোটবেলা থেকেই আমাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দিয়ে এসেছেন। মেয়েদের বেশি পড়াশোনার দরকার নেই—এমন সংস্কৃতি আমার পরিবারে ছিল না কখনো।

ইয়োগাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চান বৃতি

জাগো নিউজ: ইয়োগা নিয়ে পড়ার স্বপ্ন তৈরি হলো কখন থেকে?
বৃতি দেব: ইয়োগা নিয়ে পড়ার স্বপ্ন তৈরি হয় ভারতীয় কয়েকজন ইয়োগা গুরু দেখে। তাদের লেখা কিছু বই পড়ে, তখন যদিও বিষয়টির গভীরতা বুঝতে পারিনি। তাদের তারুণ্য ধরে রাখার কৌশলই প্রথমদিকে আমাকে ইয়োগার ব্যাপারে উৎসাহিত করেছিল।

ইয়োগাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চান বৃতি

জাগো নিউজ: ইয়োগা বিষয়ে কেন এবং কোথায় পড়েছেন?
বৃতি দেব: ইয়োগার ব্যাপ্তি যখন বুঝতে শুরু করি; তখন শুধু দূর থেকে বই পড়ে এটা নিয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞান লাভ সম্ভব নয়। এর মধ্যেই ভারত সরকারের একটি স্কলারশিপের জন্য আবেদন করে পেয়ে যাই। যা ছিল ইয়োগা টিচার্স ট্রেনিং কোর্স। এসভিএএসএ ইয়োগা ইউনিভার্সিটি বেঙ্গালুর থেকে সার্টিফায়েড ইয়োগা ইনস্ট্রাক্টর হয়ে দেশে ফিরি ২০১৯ সালে।

ইয়োগাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চান বৃতি

জাগো নিউজ: মানুষের সুস্থতার জন্য ইয়োগা কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
বৃতি দেব: ইয়োগা একটি জীবনদর্শন, আত্মানুশাসন, জীবনপদ্ধতি, ওজন কমানো, শক্তিশালী নমনীয় শরীর, উজ্জ্বল ত্বক, শান্ত মন, ভালো স্বাস্থ্য ইত্যাদি। যা কিছু আমরা পেতে চাই সব কিছুর চাবি আছে যোগাসনে। এতে অনেক রকম শারীরিক সমস্যা, যথা- উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, করোনারি আর্টারি ব্লকের ইত্যাদি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। যা এখন বৈজ্ঞানিকভাবে বিভিন্ন গবেষণার দ্বারা প্রমাণিত। ইয়োগা শুধু বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতিই নয় বরং ইয়োগার প্রয়োগ ব্যাধিকে নির্মূল করে। ইয়োগা আমাদের ভেতর থেকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ করে তোলার উপায়।

জাগো নিউজ: ইয়োগা ট্রেইনার হিসেবে নতুন যারা আসছেন; তাদের জন্য কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা দরকার?
বৃতি দেব: আমাদের দেশে ইয়োগা ট্রেইনিংয়ের এখনো তেমন প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। তবে যারা ভারত থেকে ইয়োগা ট্রেইনিং করে আসছেন, তাদের অনেক কাজের সুযোগ তৈরি হচ্ছে আমাদের দেশে। যদিও স্থায়ী কোনো প্লাটফর্ম নেই। সে জন্য এ পেশায় আসতে হলে যথেষ্ট উৎসাহ এবং ধৈর্য নিয়ে ভালোবেসে আসতে হবে।

ইয়োগাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চান বৃতি

জাগো নিউজ: ইয়োগা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে কেমন প্রতিবন্ধকতা আসছে?
বৃতি দেব: ইয়োগা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে অনেক প্রতিবন্ধকতা অনুভব করি। কারণ আমাদের দেশের মানুষের ভেতর ইয়োগা নিয়ে যে সচেতনতা তৈরি হওয়ার দরকার, সেটি এখনো হয়নি। মানুষ এখনো এটাকে পরিপূর্ণ পেশা মনে করতে পারে না এবং বোঝেও না।

জাগো নিউজ: যে কোনো ক্ষেত্রে নারীর অবস্থান, কর্মস্থলের পরিবেশ, নিরাপত্তা নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?
বৃতি দেব: আমাদের দেশে নারীর ক্ষমতায়ন অনেক জায়গায় হলেও সমতায়নের এখনো অনেক অভাব। অনেক উচ্চ পর্যায়ে নারীরা আছেন কিন্তু সেটাও তাদের মানসিক সমতায়ন সেভাবে দিতে পারছে না। কর্মস্থলের যৌন হয়রানি এখনো এ দেশে নারীদের জন্য অনেকটা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা অনেক ক্ষেত্রেই।

ইয়োগাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চান বৃতি

জাগো নিউজ: ইয়োগা নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
বৃতি দেব: ইয়োগা নিয়ে আসলে আমাদের দেশে কাজ করার অনেক কিছু আছে। দেশের মানুষকে ইয়োগা সম্পর্কে জানানো, তরুণদের ইয়োগায় উৎসাহিত করা, যাতে তারা একটি সুস্থ জীবন উপভোগ করতে পারেন। আর যারা ইয়োগা করে শারীরিক, মানসিক শান্তি খুঁজছেন; তাদের জীবনকে সহজ করে দেওয়া এবং সেইসাথে আরও পড়াশোনা করতে চাই ইয়োগা নিয়ে।

জাগো নিউজ: দেশ নিয়ে কোন স্বপ্নটা দেখেন, কোন বিষয়টি পাল্টে দিতে খুব ইচ্ছে হয়?
বৃতি দেব: দেশ নিয়ে যে স্বপ্ন সবচেয়ে বেশি দেখি; সেটা হলো একটি মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ তরুণ সমাজ। যারা স্বাধীনতার আদর্শ-উদ্দেশ্য জাগ্রত রাখবে সব সময়। কোন বিষয়টি পাল্টে দিতে চাই, জানতে চাইলে বলবো নারীকে বস্তু ভেবে চলার প্রতি এ সমাজের যে মানসিকতা; এটা পাল্টে দিতে খুব ইচ্ছা করে।

এসইউ/জেআইএম

আরও পড়ুন