মেকআপে সফল উদ্যোক্তা সেলিনা মনির
আজ আমরা এমন একজন নারী উদ্যোক্তার সম্পর্কে জানবো, যিনি বাংলাদেশি নারী হিসেবে মেকআপ ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে নিজের অবস্থান করে নিয়েছেন। দীর্ঘ ১০ বছরের অভিজ্ঞতায় দেশ-বিদেশের অসংখ্য মানুষের কাছেই বেশ জনপ্রিয়। তার নাম সেলিনা মনির।
মেকআপ আর্টিস্ট সেলিনা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। তিনি ফার্মাসিতে ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বিউটি ইন্ডাস্ট্রির প্রতি অধীর আগ্রহ, রূপসজ্জা ও চুল সম্পর্কে তার বিদ্যমান জ্ঞান থেকেই পথচলা শুরু। তিনি চুল ও রূপসজ্জার ওপর ৩টি ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি একই সঙ্গে বাংলাদেশ ও লন্ডনে কাজ করছেন।
সেলিনা মনির সব সময় এমন একজন মানুষ হতে চেয়েছেন, যে অন্য নারীর সুন্দর অনুভব করতে এবং সুন্দর করে নিজেকে উপস্থাপন করতে সাহায্য করতে পারেন। তিনি নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতে, নতুন কিছু শিখতে পছন্দ করেন। সেলিনা মনিরের ক্যারিয়ারের অনেক অর্জনের মধ্যে একটি বড় অর্জন হচ্ছে বলিউড অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্দেজের সঙ্গে কাজ করা।
সেলিনা মনির তরুণ প্রজন্মের নারীদের জন্য ভিডিও টিউটোরিয়াল দিয়ে থাকেন। অনেক ভিডিও টিউটোরিয়াল রয়েছে, যাতে যে কেউ মেকআপের বেসিক ধারণা নিতে পারেন।
এছাড়াও সে অনেক ওয়ার্কশপ করে থাকেন। বাংলাদেশের মেকআপ প্রেমীরা যাতে খুব সহজে মেকআপ শিখতে পারেন এবং নিজে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন। সেলিনা মনির অনেক মেকআপ আর্টিস্ট তৈরি করেছেন এবং করে যাচ্ছেন।
যারা হেয়ার ও মেকআপ সম্পর্কে শিখতে চান, সেলিনা তাদের জন্য কোর্সের ব্যবস্থা রেখেছেন। কোর্সগুলো ৫ দিন ও ৩ দিনের কর্মশালা হিসেবে সাজানো। প্রথম তিনদিন মেকআপ টেকনিক, চতুর্থ দিন হেয়ার এবং শেষদিন শিক্ষার্থীরা প্রফেশনাল ফটোশুটের মেকআপ অ্যান্ড হেয়ারে অংশগ্রহণ করেন।
তিনি তার ওয়ার্কশপে মেকআপের পাশাপাশি কীভাবে তারা মেধা কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে ব্যবসা করতে পারবেন, এ সম্পর্কেও ধারণা দিয়ে থাকেন। ওয়ার্কশপের স্পন্সর হিসেবে থাকে নামিদামি ব্র্যান্ড। তার মধ্যে অন্যতম রিবানা, আনজারা, উজমাহসহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠান। রিবানা ও সেলিনা মনির একসঙ্গে অনেকদিন কাজ করছেন। রিবানা বাংলাদেশের একটি ব্র্যান্ড, যা অর্গানিক বিউটি প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করে।
তিনি বাংলাদেশে প্রথম ফ্রিল্যান্সিং মেকআপের ব্যাপারটি তুলে ধরেছেন। আন্তর্জাতিক মেকআপ শিল্পী সেলিনা মনিরের কাছে হাতেখড়ি নিয়ে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন অসংখ্য নারী। সারাদেশে তার অনেক অসংখ্য অনুসারী রয়েছে। তাই আগামীতে চট্টগ্রামের পাশাপাশি বরিশালেও তিনি ক্লাস পরিচালনা করবেন।
সেলিনা মনির লন্ডন থেকেও অনলাইনের মাধ্যমে মেকআপ ওয়ার্কশপ পরিচালনা করেন। তিনি একজন মানুষকে স্বনির্ভর হতে সাহায্য করেন। তার কাছ থেকে হাতেখড়ি নিয়ে ৩শ’র বেশি নারী পার্লার শুরু করেছেন। ৫শ’র বেশি নারী নিজের পরিচয় তৈরি করেছেন। তারা এখন কাজ করছেন বিভিন্ন জায়গায়।
সেলিনা মনির মেকআপ ইন্ডাস্ট্রিকে এমন একটি পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান, যেখানে বাবা-মাই বলবেন, আমার মেয়েকেও একজন মেকআপ আর্টিস্ট বানাতে চাই। মেকআপ প্রফেশনকে সেলিনা মনির এমন একটি ট্রেন্ড বানাতে চান, যেখানে পুরোনো বিউটি পার্লারের কনসেপ্টকে এক করে নতুন ধরনের মেকআপ ওয়ার্ল্ডে রূপান্তর করবেন।
এসইউ/এমএস