মহাকাশচারী হতে কাজ করছেন জোনাক
ছোটবেলায় চাঁদকে কাছ থেকে দেখার আগ্রহ থেকেই মনের কোণে জমতে থাকে মহাকাশচারী হওয়ার স্বপ্ন। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ের ছেলে শাহ জালাল জোনাক। বর্তমানে কাজ করছেন মহাকাশচারী হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে। সম্প্রতি জাগো নিউজের সঙ্গে গল্পে মেতেছিলেন জোনাক। বিস্তারিত জানাচ্ছেন মমিনুল হক রাকিব—
শাহ জালাল জোনাকের জন্ম ও বেড়ে ওঠা পঞ্চগড় জেলার তেতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর গ্রামে। গ্রামে প্রকৃতির মাঝে বড় হয়েছেন তিনি। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সেখানেই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। তারপর রাজধানীর রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। বর্তমানে রাশিয়ার বাউমান মস্কো স্টেট টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে ‘রকেট কমপ্লেক্স অ্যান্ড স্পেস সায়েন্স’ বিষয়ে পড়াশোনা করছেন।
ছোটবেলা থেকেই মূলত জোনাকের মহাকাশের প্রতি ঝোঁক সৃষ্টি হয়। সময়ের সাথে সাথে সেই আগ্রহ বাড়ে। মহাকাশচারী হওয়ার স্বপ্ন তাকে ঘিরে ফেলে। নিজের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে পাড়ি জমান রাশিয়ায়। রাশিয়া যাওয়ার পর থেকেই পুরোদমে নিজেকে প্রস্তুত করার কাজ শুরু করেন। নিজের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
মহাকাশের কোন বিষয়টি তাকে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করে? জানতে চাইলে জোনাক বলেন, ‘আলাদা করে একটি বিষয়ের কথা বলা খুব মুশকিল। তবে যদি একটিই বলতে হয়, সে ক্ষেত্রে আমি চাঁদের কথা বলব। ছোটবেলা থেকে চাঁদ আমাকে খুব ভাবিয়েছে। আয় আয় চাঁদ মামা কিংবা চাঁদের বুড়ির গল্প থেকে শুরু করে রাতের আকাশে চাঁদের দিকে অবাক হয়ে কত যে তাকিয়ে থেকেছি, তার শেষ নেই! এখনো আমার চাঁদের মাটি ছুঁয়ে দেখার খুব শখ!’
মহাকাশচারীরা পৃথিবীর সবচেয়ে স্মার্ট মানুষ। কারণ মহাকাশ খুব জটিল জায়গা। অনুমান করে সব কিছু করা যায় না। তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এ সিদ্ধান্তের জন্য কারও উপর নির্ভর করলেও চলে না। এত সময় হাতে পাওয়া যায় না। ছোট্ট একটি সিদ্ধান্ত মহাকাশচারীদের জীবন বাঁচিয়ে দিতে পারে কিংবা কেড়ে নিতে পারে।
এ ব্যাপারে জোনাক বলেন, ‘খুব বিচক্ষণ, স্মার্ট মানুষকেই মহাকাশচারী হিসেবে সিলেক্ট করা হয়। এমন মানুষকে সিলেক্ট করা হয়, যারা যে কোনো পরিস্থিতিতে যে কোনো কিছু করতে পারে। তাই মহাকাশচারী হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করার পথটাও বেশ কঠিন। আমি যেহেতু রকেট সায়েন্স নিয়ে পড়ছি, তাই একাডেমিকভাবেই রকেট নিয়ে, স্পেস নিয়ে আমার ভালো একটা ধারণা তৈরি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া আমি নিজে থেকেই ফ্লাইট ট্রেনিং করেছি। বেসিক ইমারজেন্সি মেডিক্যাল ম্যানেজমেন্টের ওপর কোর্স করেছি। আত্মরক্ষার জন্য গান শুটিং শিখেছি। সামনের দিকে আমার স্কাই ডাইভিং এবং স্কুবা ডাইভিংয়ের লাইসেন্স নেওয়ার পরিকল্পনা আছে। এভাবেই প্রতিটি দেশের অ্যাস্পিরিং অ্যাস্ট্রোনাটরা নিজেদের একজন ভালো, যোগ্য মহাকাশচারী প্রার্থী হিসেবে গড়ে তোলে।’
মহাকাশচারী হওয়ার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন শাহ জালাল জোনাক। পাশাপাশি জনহিতকর কাজে নিজেকে সব সময় যুক্ত রাখার চেষ্টা করেন। ভবিষ্যতে নিজের কাজের মাধ্যমেই মানুষের মাঝে হাজার বছর বেঁচে থাকতে চান জোনাক।
এসইউ/জেআইএম