শত প্রতিকূলতা জয় করে সফল শারমিন
উদ্যোক্তা শব্দটির মাঝে এমন এক সাহস খুঁজে পাওয়া যায়, যা দিয়ে একটি দেশের অর্থনীতির চিত্রকে বদলে দেওয়া যায়। আর পথের সব কাঁটা উপড়ে ফেলে মানুষ এবং সমাজের উন্নতির জন্য উদ্যোক্তারাই এগিয়ে আসেন। তেমনই একজন উদ্যোক্তা হলেন শারমিন সুলতানা।
ইংরেজি বিষয়ে স্নাতকোত্তর পাসের পর প্রবেশ করেন চাকরি জীবনে। কিন্তু শেকলে বাঁধা চাকরি শারমিন সুলতানার মনকে বিষাদগ্রস্ত করে ফেলে। তাই চাকরি জীবন থেকে বের হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে যেন একটি পরিচয় গড়ে তুলতে পারেন; সেই লক্ষ্যেই নিজের ডিজাইন করা পোশাক নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন।
এভাবেই তার হাত ধরে গড়ে ওঠে আজকের আলভিনা। যদিও সেই যাত্রায় তাকে অতিক্রম করতে হয় নানা বাধা-প্রতিকূলতা। তারপরও দুই সন্তানের মা শারমিন আজ হয়ে উঠেছেন একজন সফল নারী উদ্যোক্তা।
নারীদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে ‘আলভিনা’ নামের প্রতিষ্ঠানটির পথ চলা শুরু হয় ২০১১ সালে। প্রতিষ্ঠাতা শারমিন সুলতানার একক প্রচেষ্টায় গত ১০ বছরে উন্নতমানের পণ্যসেবা দিয়ে আসছে প্রতিষ্ঠানটি।
দেশীয় সংস্কৃতির ধারা বজায় রেখে দেশীয় পোশাক ও গহনা তৈরি করার পাশাপাশি বিদেশ থেকে নারীদের প্রয়োজনীয় প্রসাধনী, স্কিন কেয়ার, হেয়ার কেয়ার, জুয়েলারি, ব্যাগ, ঘড়িসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যসেবা দিয়ে থাকে আলভিনা।
প্রথমে অফলাইনে কার্যক্রম শুরু করলেও যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অনলাইনেও সমানভাবে সেবা দিয়ে আসছে। ঢাকা শহরের চাকরিজীবীদের সুবিধার্থে এবং বেশি সংখ্যক ক্রেতাকে সুষ্ঠুভাবে সার্ভিস দিতে ২০১৫ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি অনলাইন কার্যক্রম শুরু করে।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় অনলাইন কার্যক্রমকেই তারা বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন। তবে কেউ সরাসরি পণ্য কিনতে চাইলে চলে যেতে হবে তাদের মোহাম্মদপুর মোহাম্মদিয়া হাউজিং সোসাইটি আউটলেটে। পাশাপাশি অধিকাংশ পেমেন্ট পদ্ধতিতে পেমেন্ট করে তাদের কাছ থেকে পণ্য কেনা যাবে।
আলভিনার মালিক শারমিন সুলতানা বলেন, ‘গ্রাহককে সর্বোচ্চ সেবা দিতে কোয়ালিটিতে কোনো কম্প্রোমাইজ করি না। একই সঙ্গে গ্রাহকের পছন্দ-অপছন্দের ওপর ভিত্তি করে প্রাইজ ও কোয়ালিটি মেইন্টেইন করি। আমরা কখনো কোয়ান্টিটি দ্বারা প্রলোভিত হই না।’
সারাদেশের মানুষ আলভিনাকে এক নামে চিনবেন, এ স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে শারমিন সুলতানা কাজ করে যাচ্ছেন। সেই লক্ষ্যেই দেশজুড়ে এর কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটি এর লক্ষ্যে সব সময় অবিচল ছিল।
এরই মধ্যে তাদের কাজ বেশ সাড়া পেয়েছে। তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজটি আড়াই লাখেরও বেশি মানুষ লাইক করেছে। ক্রমেই এ সংখ্যা বেড়ে চলেছে। শারমিনের দেখা এ স্বপ্ন আর সাফল্যগাথা একদিন বাংলাদেশের হাজারো তরুণ উদ্যোক্তার অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠবে।
এসইউ/এমএস