সময়কে কাজে লাগাতে এড়িয়ে চলুন ১১ ভুল
কাজ করছেন পুরোপুরিই। অথচ ফলাফল শূন্য। তা কি মেনে নেওয়া যায়? একদম নয়। হয়তো অনেকেই এমন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। কিন্তু কেন? জোর দিয়ে বলা যায়, এটি সময় ব্যবস্থাপনার ভুল। এখন থেকে এড়িয়ে চলুন সময় ব্যবস্থাপনার ১১টি ভুল। তবেই না সাফল্য আসবে।
অজুহাত দেখাবেন না: ‘এই তো কয় মিনিট, করে দিচ্ছি’ বা ‘হাতে সময় নেই’- এ ধরনের অজুহাত দেখাবেন না। ইচ্ছা করলেই সময়কে ২৪ ঘণ্টার বেশি বাড়াতে পারবেন না। এ সময়ের মধ্যেই নির্ধারিত কাজটি করতে হবে। সুতরাং অজুহাতের আশ্রয় না নিয়ে বরং সঠিক সময় ব্যবস্থাপনায় নজর দিন, কাজের যত্ন নিন। সাফল্যের মূল চাবিকাঠি এখানেই লুকানো আছে।
পরিকল্পিতভাবে দিন শুরু করুন: সর্বোচ্চ দক্ষতা অনুযায়ী কাজের ফলাফল পেতে অবশ্যই পরিকল্পিতভাবে দিন শুরু করতে হবে। দিনের শুরুতেই সারাদিনের কাজ সাজিয়ে নিন। বেশি গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সবার আগে সেরে ফেলার খসড়া তৈরি করুন। সকালের পরিকল্পিত কাজগুলো সারাদিন আপনাকে ফুরফুরে মেজাজে রাখবে।
গুরুত্বপূর্ণ কাজ আগে করুন: সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি কাজের গুরুত্ব বোঝা। বেশিরভাগ উদ্যোক্তা জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ কাজের পার্থক্য বোঝেন না। এক্ষেত্রে সব কাজ চার ভাগে বিভক্ত করে নিন। দিনের শুরুতে সিদ্ধান্ত নিন কোন কাজগুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সময় বিভাজনে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো আগে করুন। প্রয়োজনীয় কাজের সময় অপ্রয়োজনীয় কাজগুলো এড়িয়ে চলুন। পরবর্তীতে সে কাজগুলো করার সময় নির্ধারণ করুন। যে কাজগুলো জরুরি কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ নয়, সেগুলো অধীনস্থ কাউকে বুঝিয়ে দিন। যে কাজগুলো জরুরি অথবা গুরুত্বপূর্ণ নয়, সেগুলো এড়িয়ে যান কিংবা পরবর্তীতে করার জন্য তালিকা করে রাখুন।
প্রতিনিধিকে গুরুত্ব দিন: আপনি যে কাজে দক্ষ; সে কাজগুলোয় বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। অন্য কাজ সামলাতে প্রতিনিধি নিয়োগ করতে পারেন। যেমন- আপনার দৈনিক কর্মসূচি, ই-মেইল, সামাজিক অ্যাকাউন্ট, ব্লগ কিংবা ব্যবসায়িক সফরে ব্যক্তিগত সহকারী নিয়োগ দিতে পারেন। এতে ব্যস্ততার মাঝেও একটু অবসর আপনাকে উদ্যমী করে তুলবে।
ভোরে ঘুম থেকে উঠুন: প্রতিটি সকাল সময় ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে সারাদিনের কাজের ছক এঁকে নিন। সেই সাথে সকালে শরীরচর্চা সারাদিন আপনাকে ফুরফুরে রাখবে।
অসমাপ্ত কাজের পরিকল্পনা: যে কাজগুলো বিভিন্ন কারণে শেষ করতে পারেননি; সেগুলোর একটি তালিকা করুন। জরুরি কাজগুলোর পাশাপাশি অসমাপ্ত কাজগুলো করে ফেলুন। অসমাপ্ত কাজগুলো করার জন্য আলাদা একটি সময় নির্বাচন করুন।
হতাশ হবেন না: কাজ এবং লক্ষ্য থেকে একমাত্র হতাশাই আপনাকে বিচ্ছিন্ন করতে পারে। তাই এরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন যেন হতে না হয়, সেজন্য কাজগুলো নিখুঁতভাবে করতে হবে।
নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করুন: কাজ নির্দিষ্ট সময়ের ভেতরে শেষ করতে পারা সাফল্যের সিঁড়িতে কয়েক ধাপ এগিয়ে দেয়। তবে কোন কাজে কত সময় লাগবে, সেটা নির্ধারণ করা মাঝে মাঝে বেশ কঠিন। স্বাভাবিকভাবে কোন কাজে ধারণাকৃত সময় থেকে বাস্তবিক সময় বেশি লাগে। সে ক্ষেত্রে পরবর্তী এক সপ্তাহের কাজকে ছকে বেঁধে করা ভালো। কাজটি নোটবুক কিংবা টাইম ট্রাকিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে করতে পারেন।
কর্মক্ষেত্র পরিষ্কার রাখুন: পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ সৃষ্টিশীল কাজের সহায়ক। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অবশ্যই ভালো কিছু আশা করা যায় না। সুতরাং কাজের পরিবেশ ও মানসিক প্রশান্তির জন্য কর্মক্ষেত্র পরিষ্কার রাখুন।
বিরতিহীন কাজ করবেন না: নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করার জন্য হয়তো টানা কাজ করতে হচ্ছে। কিংবা রাতে টানা কাজ করে প্রশান্তি পাচ্ছেন। টানা কাজ করেও প্রাণশক্তি অটুট। ক্লান্তি-অবসাদ কিছুই ছুঁতে পারছে না। তবুও একটানা কাজের মাঝে একটু বিরতি নিন।
সংক্ষিপ্ত করবেন না: নিজের মতো সময় ব্যবস্থাপনাকে কোনভাবে রূপান্তর করবেন না। অথবা অন্য কোন উদ্যোক্তার সফলতা দেখে তার সময় ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করবেন না। কেননা তার সময় ব্যবস্থাপনা আপনার জন্য যথেষ্ট না-ও হতে পারে।
এসইউ/এএ/জেআইএম